চট্টগ্রাম, (০৮.১০.২০১৯ ইং): বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারের দাবিতে নগরীর বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ নগরীর ষোলশহর এলাকায় বিক্ষোভে অংশ নেয়। তাছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী খালেদ সাইফুল্লাহ প্ল্যাকার্ড লিখে একাই আন্দোলনে নেমেছেন।
শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় ষোলশহর রেল স্টেশনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানারে করা মানববন্ধনে নগরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধনে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, আবরার হত্যার বিচার না দেখে ছাত্র সমাজ ঘরে ফিরবে না। আবরারের খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। অবিলম্বে দায়িত্ব অবহেলার কারণে বুয়েটের প্রভাস্ট ও ভিসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চবি শিক্ষার্থী আমির হোসেন জুয়েল, নিজাম উদ্দিন, জাহেদুল ইসলাম, রাইসুল ইসলাম, নাছির উদ্দিন, কামরুল হাসান, ইমতিয়াজ ইমতু, রিয়াজউদ্দিন, কামরুন নাহার, লুবনা নূর প্রমুখ শিক্ষার্থী ।
এদিকে আবরার হত্যাকান্ডের ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী খালেদ সাইফুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্ত্বরে অবস্থান নিয়ে ভিন্নধর্মী প্রতিবাদ জানান তিনি। প্ল্যাকার্ডগুলোর শ্লোগান লেখা রয়েছে, ‘আমি কোনো দল করি না’, ‘আমি রাষ্ট্রদ্রোহি নই’, ‘যে কোনো বিষয়ে আসুন, বসুন, কথা বলুন, কিন্তু রাগারাগি মারামারি বন্ধ করুন’, ‘আমার ভাই আবরার হত্যার বিচার চাই’, ‘আমাকে মারলে বাংলাদেশই মরবে’, ‘ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করুন’।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূজার ছুটিতে গোটা ক্যাম্পাসে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা খুবই কম। অথচ কাউকে পরোয়া না করে বিবেকের তাড়নায় একাই বুয়েট শিক্ষার্থী ফাহাদ হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থী খালেদ সাইফুল্লাহ। এসময় তিনি নিজ হাতে লিখা বেশ কিছু স্লোগানের প্ল্যাকার্ডও নিয়ে হাজির হন।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থী খালেদ সাইফুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় শুধুমাত্র মতপ্রকাশের কারণে একজন ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হবে, এটা মেনে নেয়া যায় না। ভিন্ন মতাদর্শ থাকবে। ভিন্নমত যদি রাষ্ট্রবিরোধী হয় তাহলে প্রশাসনকে জানাতে পারে। আঘাত করার অধিকার তো নেই কারো। কোনো শিক্ষার্থী যদিও ভুল করে তার বিচার করার দায়িত্ব প্রশাসনের। তারই হলের বড় ভাই হলেই আপনি তাকে পিটিয়ে হত্যা করতে পারেন না।
তিনি আরো বলেন,আমার মনে হলো, এমন হত্যার প্রতিবাদ জানাতে হবে। এখন থেকে যদি প্রতিবাদ না জানাই তাহলে, সামনের সময়গুলোতে আমাকেও হয়ত আবরার ফাহাদের মতো খুন হতে হবে। তাই কেউ আসুক বা না আসুক একাই প্রতিবাদে নেমে পড়েছি। কিন্তু প্রশাসন থেকে অনুমতি না নেয়ায় প্রক্টর আমাকে উঠে যেতে বলেছেন।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর রেজাউল করিম সাংবাদিকদের বলেন, একজন শিক্ষার্থী আবরার হত্যার বিচার চেয়ে একাই আন্দোলন করছিল। আমরা তাকে গিয়ে বোঝাই- ওই ঘটনার সাথে জড়িতদের পুলিশ আটক করেছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সে চলে গেছে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো কর্মসূচী পালন করতে হলে প্রশাসনের অনুমতি নিতে হয় ওই শিক্ষার্থী তা করেননি।
## শহীদ, ০৮.১০.২০১৯ ইং।