##শামসুল আলম, রাশিয়া থেকে…….
আজকে ভীষণ ঠান্ডা ছিলো সারাদিন। যদিও আকাশ পরিস্কার ছিলো, রোদের তাপও যথেষ্ট ছিলো, তবুও সেন্টপিটার্সবার্গের কল্পিনো শহরের তাপমাত্রা ছিলো শূন্যেরও বেশ নিচে। মোবাইলের আপডেটে তা -৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড দেখাচ্ছিলো। চারিদিক ছিলো বরফে আচ্ছাদিত।
আমার বাসার পাশেই একটি এভাঞ্জেলিক্যাল ক্রিস্টিয়ানদের ধর্মীয় উপস্যানালয় রয়েছে। ইউরোপে শনি ও রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকে। তাই, আমারও আজকে কোন কাজ ছিল না। কল্পিনো শহর ঘুরতে গিয়ে প্রথমেই গিয়েছিলাম চার্চটিতে। এক বৃদ্ধা অভ্যর্থনা জানালেন, কিন্ত তিনি ইংরেজি পারেন না। তিনি আমাকে ২য় তলায় নিয়ে গেলেন। সেখানে ধর্মীয় কোন প্রার্থনা চলছিলো। কিছুক্ষণ পর একজন কালো পোশাক পড়া এক ভদ্রমহিলা আসলেন। তার নাম অগা। তিনি ইংরেজি ভাষার শিক্ষক। আজ সাপ্তাহিক ছুটিতে চার্চে এসেছেন-উনার কাজ পিয়ানো বাজানো। আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি শোনে তিনি বললেন, ভেতরে প্রার্থনা শেষে একটি ব্রেক আছে। যদি কিছু মনে না করেন, আপনি সবার উদ্দেশ্যে আপনার দেশ সম্পর্কে কিছু কথা বলতে পারেন।
প্রায় ২০-২৫ জনের মধ্যে সম্ভবত উনিই ইংরেজি পারেন। আমি সামনে থেকে শুভেচ্ছা বিনিময় করলাম। উৎসুক সবাইকে অগা রাশিয়ান ভাষায় তা বলে দিলেন। দু’একজন প্রশ্ন করলেন, বাংলাদেশে ক্রিশ্চিয়ানদের উপর সরকারের কোন চাপ আছে কি না। আমি বললাম, আমাদের দেশে একাধিক ধর্মের লোক শান্তিতে বসবাস করছি। সরকার থেকে তাদের উপর কোন ধরনের চাপ নেই। আমার চাকরিজীবনে একাধিক ক্রিশ্চিয়ান সহকর্মী পেয়েছি। এতে উপস্থিত সবাই বেশ খুশি হলেন। বললাম আপনাদের দেশটা গোছানো, আমাদের দেশের প্রকৃতিও বেশ সুন্দর। কক্সবাজার, সুন্দরবনের কথাও এক ফাকে বলে দিয়ে তাদেরকে বাংলাদেশ ঘুরে যাওয়ার জন্য নিমন্ত্রণও করলাম। তারপর মিজ. অগা আমাকে একটি বই উপহার দিলেন নাম NEW TESTAMENT যা রাশিয়ান ও ইংরেজি ভাষায় লেখা।
কয়েকজন মধ্যবয়সী লোক ও ছোট বাচ্চা এসে আমার সাথে ছবিও তোললেন। আমার ফোনেও একটা তোলে নিলাম। একটা বিষয় খেয়াল করলাম, বয়স্করা ইংরেজী না পারলেও রাশিয়ান বাচ্চা ছেলেমেয়েরা ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরেজী বলতে পারে। রাশিয়ানরা বোধহয় তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে ইংরেজী শিক্ষায় দীক্ষা দিচ্ছেন। চার্চের মানুষগুলোর অভ্যর্থনায় মুগ্ধ হলাম। অধিবর্ষের ২৯ ফেব্রুয়ারী দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে।