-- বিজ্ঞাপন ---

সিরিয়ায় তুরস্কের হামলার নেপথ্য…

0

সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আসন্ন তুরস্কের সামরিক অভিযানকে সামনে রেখে সৈন্য প্রত্যাহার শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে শিগগিরই তুরস্ক সামরিক অভিযান চালাবে। কুর্দি অধ্যুষিত অঞ্চলটিতে তুরস্কের এ অভিযানে সমর্থন না দিলেও অংশগ্রহণ কিংবা হস্তক্ষেপ করা হবে না বলেও আশ্বস্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

এ দিকে তুরস্কের অভিযানের বিষয়ে কুর্দি যোদ্ধারা বলছে যে, এ ধরনের পদক্ষেপ ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড লেভান্তের (আইএসআইএল বা আইএসআইএস) বিরুদ্ধে পাওয়া বিজয়ের ফলকে নস্যাৎ করে দেবে। হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি স্টিফেন গ্রিশাম এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, কুর্দি অধ্যুষিত অঞ্চলটিতে আঙ্কারার এ অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দেবে না, এমনকি অংশগ্রহণ কিংবা হস্তক্ষেপও করা হবে না।

এসডিএফ বলেছে, তুরস্কের বিমান হামলা ও গোলাগুলিতে ৯ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। তুর্কি সীমান্তবর্তী শহরগুলোতে মর্টার ও রকেট হামলার আগুনে ৯ মাস বয়সী শিশুসহ ৬ জন নিহত হয়েছে বলে কুর্দি নেতৃত্বাধীন বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, কুর্দি ওয়াইপিজি মিলিশিয়ার নেতৃত্বে সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সের (এসডিএফ) ওপর হামলা চালানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে ফোনালাপের পর মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার করেন।

ট্রাম্প বৃহস্পতিবার একটি টুইট বার্তায় বলেন, ‘আমাদের হাতে তিনটি বিকল্প আছে—হাজার হাজার সৈন্য পাঠিয়ে সামরিকভাবে জিতে যাওয়া, তুরস্ককে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দেওয়া ও নিষেধাজ্ঞার কঠোর আঘাত হানা, অথবা তুরস্ক ও কুর্দিদের মধ্যে একটি চুক্তির মধ্যস্থতা করা।’

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকেরা তুরস্কের ব্যাপারে ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আশা করছি, আমরা মধ্যস্থতা করতে পারব।’

বিস্তারিত বিবরণ না দিয়ে ট্রাম্প বলেন, তুরস্কের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ খুব কঠোর কিছু অর্থনৈতিক অবরোধের কথা ভাবছে।

২০১৪ সাল থেকে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে যুদ্ধে মার্কিন সেনাবাহিনীর মূল সহযোগী ছিল এসডিএফ। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ব্রিফিংয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রবীণ কর্মকর্তা বলেন, হাজার হাজার আইএস যোদ্ধা এবং তাদের আত্মীয়স্বজন কুর্দি নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে কারাগার এবং শিবিরে দিন কাটাচ্ছে। এসডিএফ বাহিনী এখনো এসব কারাগারের নিয়ন্ত্রণে আছে।

যুক্তরাষ্ট্র আইএস বন্দীদের দায়িত্ব নেওয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি পেয়েছে। তবে এখনো এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা।

মার্কিন আইন প্রণেতা এবং গণমাধ্যম জানিয়েছে, ট্রাম্প এরদোয়ানকে তুরস্কের সামরিক বাহিনীকে উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় প্রবেশের সবুজ সংকেত দিলেও কর্মকর্তারা তার বিরোধিতা করেছেন। ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তাদের খুব স্পষ্টভাবে লাল বাতি দেখিয়েছি। এই নেতিবাচক সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমিও জড়িত ছিলাম। আমি জানি, রোববার প্রেসিডেন্ট এ কাজ করেছেন।’

আন্তর্জাতিক উদ্ধার কমিটি বলেছে, অভিযান শুরুর পর থেকে সিরিয়ার ৬৪ হাজার মানুষ পালিয়ে গেছে। সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর রাস আল-আইন এবং দরবাশিয়া শহরগুলো নির্জন হয়ে পড়েছে।

অবজারভেটরি জানিয়েছে, তুরস্কের সেনাবাহিনী রাস আল-আইনের নিকটবর্তী দুটি এবং তেল আবিয়াদ শহরের নিকটবর্তী পাঁচটি গ্রাম দখল করেছে। অন্যদিকে সিরিয়ার বিদ্রোহী বাহিনীর মুখপাত্র বলেছেন, যোদ্ধারা আশপাশের গ্রাম দখলের পরে শহরও ঘিরে ফেলেছে।

তুরস্কের একজন জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, সশস্ত্র বাহিনী অস্ত্র ও গোলাবারুদের ডিপো, টানেল ও সামরিক ঘাঁটিতে বন্দুক এবং স্নাইপার নিয়ে হামলা চালায়।

রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয়ই একই সুরে মার্কিন সেনা ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহামও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রকে ‘লজ্জাকরভাবে’ ত্যাগ করেছে। সূত্র প্র.আ

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.