--- বিজ্ঞাপন ---

পৃথক দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নে বিএনপি

0

নিউজ ডেস্ক: জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে স্বতন্ত্র জোট হিসেবে রেখেই আগামী দিনগুলোতে পৃথক দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে বিএনপি। কর্মসূচি পালনের ক্ষেত্রে বিএনপি ঐক্যফ্রন্টের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে, দলের অভ্যন্তরে এমন সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এখন থেকে নিয়মিত দলের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকও হবে। যেখানে নতুন নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী এক নেতা আলাপকালে বলেছেন, বিএনপি ঐক্যফ্রন্টের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে, এমন আলোচনা অস্বীকার করা যাচ্ছে না। তবে ঐক্যফ্রন্টের নেয়া কর্মসূচি পালন করার পাশাপাশি আগামী দিনে বিএনপি নিজস্ব কর্মসূচিও বাস্তবায়ন করবে।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে থাকার পরিপ্রেক্ষিতে গণফোরাম সভাপতি ড. কামালের নেতৃত্বে জোটবদ্ধ হয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয় বিএনপি। ওই নির্বাচনে অভাবিত ফলাফলের পর ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ‘কৌশল’ নিয়ে বিএনপির অভ্যন্তরে সমালোচনা রয়েছে। নির্বাচনের তিন-চার দিন আগেও মাঠের পরিস্থিতি ভয়ানকভাবে একতরফা ও বিপজ্জনক হওয়া সত্ত্বেও তখন কোনো ধরনের পদক্ষেপ না নেয়ার বিষয়টিতে অনেকেই একমত হতে পারেননি।

গত বুধবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে আবারো আলোচনা করেছেন নেতারা। এক নেতা বলেছেন, আমরা ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্বে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিলাম। কিন্তু ফলাফল কী হলো। আমরা বেগম জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের অংশ হিসেবে ওই নির্বাচনে গিয়েছিলাম।

কিন্তু নির্বাচনের পর তার মুক্তির দাবিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে এখনো কোনো কর্মসূচি আসেনি কেন। বিএনপিও রাজপথের কোনো কর্মসূচি দেয়নি। ফ্রন্ট যে কর্মসূচি ঘোষণা করে জোটের প্রধান ও বড় শরিক হয়েও তাদের নির্দেশ মতো কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। এ অবস্থায় তাদের ওপর আমাদের নির্ভরতা কমাতে হবে।

একাধিক নেতা বলেন, আমাদের নেত্রীর মুক্তির জন্য আমাদেরই কর্মসূচি নির্ধারণ করতে হবে। স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়মিত বিরতিতে বৈঠকে বসতে হবে। সেখান থেকে কর্মসূচি নিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে ঐক্যফ্রন্ট। নির্বাচন পরবর্তী রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণসহ কিছু কারণে জোটের মূল দল বিএনপির সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের খানিকটা ভাটার টান দেখা যাচ্ছে। ঐক্যফ্রন্টের এক নেতা বলেছেন, কৌশলগত কারণে মূলত নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল। ওই সময় দলগুলোর মধ্যে আদর্শিক মতবিরোধ থাকলেও নির্বাচন সামনে রেখে সেগুলো আড়াল করা হয়েছিল। নির্বাচনে ভরাডুবি এসব মতপার্থক্যকে সামনে এনেছে। তবে কোনোটিই প্রকট নয়।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব:) মাহবুবুর রহমান বলেছেন, দলের চেয়ারপারসনের মুক্তিকে প্রাধান্য দিয়ে আমরা কর্মসূচি নিচ্ছি। এ জন্য নিয়মিত বৈঠক করব, এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোট থাকবে। বিএনপি নিজেদের মতো করে কর্মসূচি নির্ধারণ ও পালন করবে।

জানা গেছে, আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস ঘিরে কিছু কর্মসূচি নেবে ঐক্যফ্রন্ট। ব্যাপক শোডাউনেরও প্রস্তুতি নেয়া হতে পারে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য শিগগিরই ফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক হবে। ওই বৈঠকে সার্বিক বিষয়ে আলোচনা হবে। এ ছাড়া আগামী এপ্রিল মাসে ঢাকাসহ দেশের সব বিভাগীয় জেলা শহর ও উপজেলাতে গণশুনানি বা মতবিনিময় সভার আয়োজন করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন এসব আয়োজনে।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.