--- বিজ্ঞাপন ---

ঢাকা যেন টাইম বোমায় পরিণত না হয়: র‌্যাব ডিজি

0

নিউজ ডেস্ক: পুরান ঢাকার কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘টাস্কফোর্সের অভিযানের পর পুরান ঢাকার কেমিক্যাল রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় নিয়ে রাখছেন ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে আমার কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। অভিযানের ভয়ে কেউ নিজ বাসায়, আবার কেউ আত্মীয়ের বাসায় কেমিক্যাল রাখছেন। আগে পুরান ঢাকা ছিল টাইম বোমা। এখন সারা ঢাকা যেন টাইম বোমায় পরিণত না হয় এ বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।’

পুরান ঢাকার বকশীবাজারে কারা কনভেনশন হলে মতবিনিময় সভায় শনিবার বেনজীর আহমেদ এ কথা বলেন। পুরান ঢাকার আবাসিক এলাকা থেকে কেমিক্যাল, প্লাস্টিক ও অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ দাহ্য পদার্থের কারখানা ও গোডাউন অপসারণের লক্ষ্যে এই সভার আয়োজন করে র‌্যাব-১০। এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি কাইয়ুমুজ্জামান খান সভায় সভাপতিত্ব করেন। র‌্যাবের ডিজি বলেন, চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডের পর সরকারের নির্দেশে সব কেমিক্যাল গোডাউন অপসারণ করে অন্যত্র নেয়া হচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের বলব, কেমিক্যাল সরিয়ে আপনারা সতর্কভাবে রাখবেন। পুরান ঢাকার মানুষ এতদিন টাইম বোমার ওপরে বসবাস করেছেন। চুড়িহাট্টার ঘটনায় যারা মারা গেছেন তারাও টাইম বোমার পাশে বসবাস করতেন। আমরা তৃতীয় আর একটি ঘটনা চাই না। আমরা আর একটি মানুষের মৃত্যুও চাই না।

বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আপনারা (ব্যবসায়ীরা) টাকা দিয়ে পণ্য কিনে আনেন। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবকিছু লিখিত দিতে হবে। উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদ, কোম্পানির নাম- সবকিছুই থাকতে হবে। টাকা দিয়ে কেন মেয়াদোত্তীর্ণ জিনিস কিনবেন? মেয়াদোত্তীর্ণ কেমিক্যাল রাখলে সেটা মেনে নেয়া হবে না।’ তিনি বলেন, ‘গোডাউন অপসারণ করার জন্য দেড়শ’ কোটি টাকার প্রকল্পের কথা বলা হচ্ছে। তা সম্পন্ন করতে লাগবে দুই বছর। আমাদের হাতে এত সময় নেই। আমরা চাই দুই মাসের মধ্যে এর সমাধান হোক। এজন্য ব্যবসায়ীদের প্রথাগত চিন্তার বাইরে গিয়ে কাজ করতে হবে। এজন্য সাহস থাকতে হবে।’

ডিজি বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা বলছেন, অভিযান বন্ধ করতে। আমরা কী দেশ থেকে আইন বন্ধ করে দেব। মানুষ হত্যা হবে আর আমরা আসামিকে গ্রেফতার করব না? অভিযান চলবে, তবে কোনো ব্যবসায়ী যেন হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়টি আমরা দেখব। অন্যায়ভাবে কারও কোনো ক্ষতি না হয় সেটি নিশ্চিত করেই অভিযান চলবে।’

কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের ইকোনমিক জোন করার তাগিদ দিয়ে বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘দেশে একাধিক ইকোনমিক জোন গড়ে উঠেছে। অনেক ব্যবসায়ী নিজ উদ্যোগে তা গড়ে তুলেছেন। এমন ইকোনমিক জোন গড়তে আপনারাও পারেন।’

তিনি বলেন, ‘নদী শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে আমরা আফসোস করছি। কিন্তু এটাও তো ঠিক যে, নদী শুকিয়ে যাওয়ায় জমি পাচ্ছি। সেটার বন্দোবস্ত করেন। ম্যাচ ফ্যাক্টরির জমি ভাড়া নেন। একশ’-দেড়শ’ একর নেন। ব্যবসায়ীদের বিপাকে ফেলানো আমাদের কাজ নয়। তাদের ব্যবসার জন্য নিরাপদ জোন করা সম্ভব। পুরান ঢাকা ছাড়তেই হবে।’

সভায় গোডাউন সরাতে সময় চান ব্যবসায়ীরা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ব্যবসায়ী ঐক্যপরিষদের সভাপতি আবদুস সালাম বলেন, আমরা সরকারকে ট্যাক্স দিয়ে ব্যবসা করি। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আমরা উপার্জন করি। পুরান ঢাকার কোনো কেমিক্যালের গোডাউনে অতিদাহ্য ৩৫টি কেমিক্যাল নেই। কিন্তু টাস্কফোর্সের অভিযানের কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এ কারণে টাস্কফোর্সের অভিযান বন্ধ করতে হবে।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.