--- বিজ্ঞাপন ---

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

0

নিউজ ডেস্ক: ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অনন্য এক দিন ১৭ এপ্রিল। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এদিন মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা গ্রামের আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে।

পরে এ বৈদ্যনাথতলাকেই মুজিবনগর হিসেবে নামকরণ করা হয়। মুজিবনগর সরকারের সফল নেতৃত্বে নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়।

ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর বর্বরোচিত হামলা চালানোর পর একই বছরের ১০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্ররূপে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করা হয়।

ঘোষণাপত্রে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন করা হয়। সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি ও সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপরাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয় ঘোষণাপত্রে।

এছাড়া তাজউদ্দীন আহমদ অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী, খন্দকার মোশতাক আহমেদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ মনসুর আলী অর্থমন্ত্রী এবং এএইচএম কামরুজ্জামান স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনর্বাসনমন্ত্রী নিযুক্ত হন।

জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী অস্থায়ী সরকারের মুক্তিবাহিনীর প্রধান কমান্ডার এবং মেজর জেনারেল আবদুর রব চিফ অব স্টাফ নিযুক্ত হন। মুজিবনগর সরকারের শপথের এদিন ১২ জন আনসার সদস্য বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন।

১০ এপ্রিল সরকার গঠনের পর ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ দেশবাসীর উদ্দেশে বেতারে ভাষণ দেন, যা আকাশবাণী থেকে একাধিকবার প্রচারিত হয়। এ ভাষণের মধ্য দিয়েই দেশ-বিদেশের মানুষ জানতে পারে- বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম পরিচালনার লক্ষ্যে একটি আইনানুগ সরকার গঠিত হয়েছে।

আর ১৭ এপ্রিল সকালে মুজিবনগরে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পরদিন দেশ-বিদেশের পত্রপত্রিকা এবং সংবাদমাধ্যমে শপথ গ্রহণের সংবাদ বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হয়।

ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সকাল ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় এবং দেশের সব জেলা কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সাড়ে ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে রক্ষিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ।

সকাল ১০টায় জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সোয়া ১০টায় গার্ড অব অনার, সাড়ে ১০টায় মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরের শেখ হাসিনা মঞ্চে মুজিবনগর দিবসের জনসভা।

এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উদযাপন কমিটি ২০১৯-এর আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু। আলোচনা সভায় বক্তব্য দেবেন সরকারের মন্ত্রী, জাতীয় সংসদ সদস্য, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতারা।

আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এক বিবৃতিতে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ঘোষিত কর্মসূচি যথাযথ মর্যাদায় পালনের জন্য সংগঠনের সব স্তরের নেতাকর্মী এবং সহযোগী সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। দলটির দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এদিকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বুধবার সকাল ৯টায় মুজিবনগরের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রে মন্ত্রী এবং বিশিষ্ট ব্যক্তি ও রাজনৈতিক নেতাদের পুষ্পস্তবক অর্পণের পর বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিজিবি, পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি, স্কাউটস এবং স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা গার্ড অব অনার প্রদান ও কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করবেন।

এরপরই আনসার ও ভিডিপি অধিদফতর গীতিনাট্য ‘বদলে যাও, বদলে দাও’ উপস্থাপন করবে। বিকাল ৫টায় মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রের মাঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা শহর, মেহেরপুর জেলা শহর ও মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনা, প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলো জাতীয় পতাকা ও অন্যান্য পতাকা এবং আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.