--- বিজ্ঞাপন ---

রমজানের পর ফিলিস্তিন-ইসরায়েল শান্তিচুক্তি

0

নিউজ ডেস্ক: চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল ইস্যুতে সমঝোতা প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত শান্তি চুক্তিকে আগামী রমজানের পর ঘোষণা করা হবে। এমনটাই জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা ও হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার। তিনি বলেন, ‘এই চুক্তিটিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইতোমধ্যে শতবর্ষী কিংবা শতাব্দীর সেরা সমঝোতা চুক্তি বলে অভিহিত করেছেন।’
রোববার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘দ্য পলিটিকো’র প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, বেশ কিছুদিন আগে দেশটির জনপ্রিয় দৈনিক ‘নিউ ইয়র্ক টাইমসে’র সঙ্গে প্রধান মার্কিন কর্মকর্তাদের একজন একটি আলোচনা করেছিলেন। মূলত সেখানেই প্রথম এই চুক্তির প্রস্তুতি সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়।
এবারের এই শান্তি চুক্তিতে দুদেশের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক শিরোনামে প্রধান দুটি অংশ রয়েছে। এতে রাজনৈতিক অংশ হিসেবে জেরুজালেম এবং উদ্বাস্তুদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো উল্লেখ আছে। আর অর্থনৈতিক বিভাগে ফিলিস্তিনি আর্থিক উন্নয়নের বিষয়টিকে বর্ণনা করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার বলেন, ‘আমরা গত বছরের শেষের দিকে এই চুক্তি ঘোষণার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ছিলাম। তবে ইসরায়েলের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে তা এতদিন সম্ভব হয়নি। যদিও বর্তমানে আমরা সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত। আশা করছি আগামী রমজানের পর তা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করতে পারবো।’
এদিকে গত বছরের ২ অক্টোবর তুরস্কের সউদী কনস্যুলেটে ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যার তদন্ত ও বিচার কাজ শুরু হয়। যদিও পরবর্তীতে বিশ্বব্যাপী আলোচিত এই হত্যার বিষয়ে স্বচ্ছতার জন্য সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে বেশ কয়েকবার পরামর্শ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই জামাতা।
পরবর্তীতে গত কয়েক মাস আগে ইসরায়েলের স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল যে, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল মধ্যকার সংঘাত নিরসনে এই দেশ দুটির মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় নতুন একটি ফর্মুলা পেশ করতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর তখনো এই ফর্মুলাকে শতাব্দীর সেরা সমঝোতা চুক্তি বলে দাবি করা হয়েছিল। তখন হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কোনো যুদ্ধ চান না। তিনি এখনও ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি সমঝোতা দেখতে চান। কেননা যুক্তরাষ্ট্র সব সময় এই দেশ দুটির মধ্যে বসবাসরত লোকজনের মুখে হাসি দেখতে চায়। যে কারণে ইসরায়েলের আসন্ন নির্বাচনের পরপরই মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার এই পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করতে পারেন। আর তা খুব শিগগিরি জনসম্মুখে আনা হবে।
যদিও হোয়াইট হাউসের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ফিলিস্তিনি স্বশাসন কর্তৃপক্ষ (পিএ) জানিয়েছিল, ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েল মধ্যকার সংকট নিরসনের জন্য মার্কিন ট্রাম্প প্রশাসন যে প্রস্তাব দিতে চাচ্ছে; তা কখনোই বাস্তবায়িত হবে না। কেননা তা সম্পূর্ণ অ-বাস্তবিক এবং ইসরায়েলের লাভের কথা বিবেচনা করে তৈরি করা হয়েছে। পিএ’র মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনেহ এর আগে বলেছিলেন, ‘১৯৬৭ সালের আগের সীমানা ভিত্তিতে চুক্তিটি করতে হবে। কেননা তা না হলে পূর্ব জেরুজালেম বা আল কুদসকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠনের প্রক্রিয়া পুরোপুরি খর্ব হবে। আর যদিও সামান্যতম-ভাবেও তা না হয় তাহলে নিশ্চিতভাবে পদক্ষেপ সম্পূর্ণ ব্যর্থ হবে।’ পিএ’র এ মুখপাত্র আরও বলেছিলেন, ‘শতাব্দীর সেরা চুক্তির বিষয়ে বর্তমানে যেসব তথ্য এবং গুজব প্রকাশ পেয়েছে। একইসঙ্গে এর প্রতি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পক্ষগুলোর সমর্থন আদায়ের জন্য যে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে তা কখনোই সফল হবে না।’
যদিও ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে পবিত্র নগরী বায়তুল মুকাদ্দাস শহরকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মূলত এর পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষের সম্পর্ক ব্যাপকভাবে অবনতির দিকে যায়। যে কারণে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ঘোষণা করেছিলেন যে, ‘আমরা আর কখনোই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে মানব না। কারণ তারা শুধু ইসরায়েলের লাভের কথা বিবেচনা করেই সকল সিদ্ধান্ত নেয়। আমাদের কথা একটুও ভাবার মতো সময় এখন আর তাদের হাতে নেই। তাই আমাদের সকল সিদ্ধান্ত আমরা নিজেরাই নিব।’

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.