--- বিজ্ঞাপন ---

দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতী সেতু উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

0

আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পরই মানুষের জীবনে উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছে দিতে পেরেছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশবাসীর প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাই যে, তারা আমাদের উপর বিশ্বাস রেখেছেন, আস্থা রেখেছেন এবং আমাদেরকে ভোট দিয়েছেন, সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন।’

শনিবার প্রধানমন্ত্রী জাতীয় অর্থনীতির লাইফলাইনখ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দ্বিতীয় মেঘনা ও মেঘনা-গোমতী সেতু ও জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়কে আরও কয়েকটি অবকাঠামোর উদ্বোধনকালে একথা বলেন।

গণভবনে থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রকল্পগুলো উদ্বোধন করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ অবকাঠামো বাংলাদেশের অর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি আঞ্চলিক যোগাযোগের ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখবে।’

জাতীয় অর্থনীতির লাইফলাইনখ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দ্বিতীয় মেঘনা ও মেঘনা-গোমতী সেতু খুলে দেয়ায় এই সড়কে ভোগান্তি অনেকটাই কমে আসবে। জাইকার সহযোগিতায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তদের অধীনে বাস্তবায়ন হওয়া ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে শীতলক্ষ্যা সেতু (দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু), দ্বিতীয় মেঘনা ও দ্বিতীয় গোমতী সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৮ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপানের জাইকা ৬ হাজার ৪২৯ কোটি টাকা সহায়তা দিয়েছে।

৯৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের চার লেইনবিশিষ্ট দ্বিতীয় মেঘনা সেতুতে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। আর ১০১০ মিটার দৈর্ঘ্যের চার লেইনবিশিষ্ট দ্বিতীয় মেঘনা-গোমতী সেতুতে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা। জাপানের জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি ওবায়েশি করপোরেশন, সিমিজু করপোরেশন, জেএফএই করপোরেশন ও আইএইচআই ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিস্টেমস কোম্পানি লিমিটেড এই সেতুর ঠিকাদারি কাজে ছিল।

দ্বিতীয় মেঘনা ও দ্বিতীয় গোমতী সেতুর পাশাপাশি জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়কে কোনাবাড়ি ও চন্দ্রা ফাইওভার, কালিয়াকৈর, দেওহাটা, মির্জাপুর ও ঘারিন্দা আন্ডারপাস এবং কড্ডা-১ সেতু ও বাইমাইল সেতুরও উদ্বোধন হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে সেতুগুলো আজকে উদ্বোধন, আমরা মনে করি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অত্যন্ত উপযোগী। পাশাপাশি আমাদের অঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রটা আমরা তৈরি করেছি। সেখানেও একটা বিরাট অবদান রাখবে।’
‘কারণ বর্তমান বিশ্বটা একটা গ্লোবাল ভিলেজ। সকলের সাথে মিলেই চলতে হবে আর্থ-সামাজিক উন্নতি করতে হলে। সেই ক্ষেত্রে আমরা মনে করি, এই কাজগুলো শুধু আমাদের জন্য না, আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্যও একটা বিরাট অবদান থাকবে।’

জাপান সরকারসহ অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী যারা অবকাঠামো উন্নয়নে সহযোগিতা করেছেন, অনুষ্ঠানে তাদেরকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অবস্থান আজকে বিশ্বে এমন একটা জায়গায় আছে যে, আমরা সকল দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে যার কাছ থেকে উন্নয়নের সহযোগিতা পাচ্ছি, আমরা সেটা গ্রহণ করে দেশের মানুষের কাজে লাগাতে সক্ষম হচ্ছি। আমাদের এই কাজ অব্যাহত থাকবে।’

সরকারের আসার পর থেকেই জাতির পিতার আদর্শ মাথায় নিয়ে কাজ করে য্ওায়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যার ফলে আজকে দেশের মানুষ সুফল পাচ্ছে। সবসময় একটা লক্ষ্য থাকে। আমাদের কাজের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষের জীবন-মান উন্নত করা, দারিদ্রের হাত থেকে মানুষকে মুক্ত করা, আর্থ-সামাজিক উন্নতি ও অর্থনৈতিকভাবে মানুষকে স্বাবলম্বী করা।’

তার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় দেশের বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সড়ক, নৌ, রেল ও বিমান সবদিক থেকেই যেন মানুষের যোগাযোগ সহজ হয়ে যায় সেই করে যাচ্ছি।’

মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বাস র‌্যাপিড ট্রানজিটসহ নির্মাণাধীন বিভিন্ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি গাড়ির চালককে ট্রাফিক আইন মানা এবং পথচারীদেরও নিয়ম মেনে চলার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী জানান, মহাসড়গুলোতে চালকদের জন্য বিশ্রামাগার করে দেওয়া হচ্ছে এবং উপজেলা পর্যন্ত চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব নজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোয়াসু ইজুমি প্রমূখ।

মুন্সীগঞ্জ, কুমিল্লা, গাজীপুর প্রান্ত থেকে গণভবনের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় মানুষ। পরে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পঞ্চগড়-ঢাকা-পঞ্চগড় রুটে নতুন আন্তঃনগর ট্রেন ‘পঞ্চগড় এক্সপ্রেস’ উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.