--- বিজ্ঞাপন ---

রাজকুমারী হায়ার শেষ পরিনতি কি?

0

প্রিসেন্স হায়া। দুবাই এর শাসক ও প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রশীদ আল মাখতুমের ৬ নাম্বার স্ত্রী। পালিয়ে চলে গেছেন লন্ডন। জর্ডানের রাজা আবদুল্লাহর ছোট বোন হায়া। একবারে যদি তাঁকে দুবাইতে ফেরত পাঠানো হয় তাহলে হয়তো তার জীবনের ইতি ঘটবে৷ ৪৫ বছর বয়সী হায়া পড়াশুনা করেছেন অক্সফোর্ডে। ২০০০ সালে সিডনী অলিম্পিকে জর্ডানকে প্রতিনিধিত্ব করেন। শৈশব থেকে প্রীন্সেস হায়া ছিলেন খেলাধুলার প্রতি অনুরাগী। স্বাধীনচেতা হায়া ২০০৪ সালে বিয়ে করেন দুবাই এর শাসককে। “নিজের জীবনে খেলাধুলার শক্তি অনুভব করার পর তিনি অন্যদের, বিশেষ করে অল্পবয়সী মেয়েদের একই অভিজ্ঞতা দেয়ার জন্য অবিরাম কাজ কওে যেতেন।” হায়া আন্তর্জাতিক অশ্বারোহণ ফেডারেশনের প্রাক্তন সভাপতি এবং আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির সদস্য ছিলেন। তার ওয়েবসাইটে তিনি  উল্লেখ করেন “খেলাধুলা জীবনকে উন্নত করে, নারীর ক্ষমতায়ন, জনগণ ও জাতির মধ্যে বিভিন্ন বাধা ভেঙ্গে ফেলার অনুপ্রেরণা জোগায়” । তিন বছর আগে এমিরেটস উম্মানের সাথে একটি সাক্ষাত্কারে, রাজকুমারী হায়া বলেছেন যে তিনি “সাংবাদিক হতে চান”।”সংবাদপত্র ও পত্রিকা সম্পর্কে তার বিশেষ আগ্রহ রয়েছে। রাজকুমারী হায়ার সাথে তার স্বামী শেখ মোহাম্মদওে বনিবনা হচ্ছিল না অনেকদিন ধরে। তাই হায়া তালাক নিয়েছেন। গ্রহণ করেছেন তালাকের প্রাপ্য ৩১ মিলিয়ন পাউন্ড। যা তিনি তার বাকী জীবনের জন্য খরচ করবেন। হায়া বলেছেন, জার্মান সরকার তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেবে। তার সন্তানরাও এখানে থাকতে পারবে। কিন্ত সমস্যা হয়েছে অন্যজায়গায়। রাজকুমারী হায়ার দেশত্যাগ মেনে নিতে পারছে না দুবাই শাসক। তাকে যে কোন মূল্য ফেরানোর জন্য শাসক এখক চর্তুদিকে জাল ফেলেছে।

রাজকুমারী হায়ার এ বিদ্রোহের মূলে আসলে কি রয়েছে তা অনেকটা রহস্যের অন্তরালে। হায়া দুবাই শাসকের অন্দরমহলের অনেক কিছু জানেন। যাতে দুবাই শাসকের পরিবারের জন্য মান-সম্মান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। তাহলে কি হায়া রোষানলের শিকার হতে যাচ্ছেন। ভারতীয় গণমাধ্যমের এক সাংবাদিকের রির্পোট থেকে জানা যায়, এক আরব রাজকন্যার উদ্দাম জীবনের ফল কী হতে পারে ? হয় মৃত্যু না হয় বাকি জীবন সূর্যালোক থেকে বঞ্চিত হয়ে হারেমের গভীরতম কোণে কাটিয়ে দেওয়া৷ আর যদি সেটা না হয়, তাহলে তিনিই খুলতে চলেছেন বহু কোটি সম্পত্তির মালিক দুবাইয়ের শেখ পরিবারের ব্যাভিচার ও বিকৃত যৌনাচারের কাহিনি৷

এসবের পিছনে রয়েছেন পলাতক দুবাই কুলবধূর এক অদৃশ্য বন্ধুর অবস্থান ও তীব্র আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক টানাপোড়েন৷ তেল সমৃদ্ধ আরব দেশগুলির সঙ্গে বিভিন্ন দেশের সুসম্পর্কের উপর নির্ভর রাজকুমারী হায়ার পরবর্তী জীবন উপন্যাস৷উপন্যাস বা আরব্য রজনীর অধ্যায় যাই বলা যায় সেটাই গ্রহণীয়৷ বিয়ের আগে প্রবল উদ্দাম জীবন৷ মুসলিম শাসনের বেড়া ভেঙে অতি উচ্চবিত্ত পরিবারের কন্যা হওয়ার সুবাদে অতুল্য ঐশ্বর্যের অধিকারিনী৷ জর্ডনের রাজকুমারী হায়ার শক্ত হাতে তীরের মতো ছুটত ছিপ নৌকা৷ রোয়িং করতে পারদর্শী-বিভিন্ন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন৷ এমনকি জর্ডনের অলিম্পিক কমিটিতে ছড়িও ঘুরিয়েছেন৷ সবই ছিল বাপের বাড়ির সুবাদে পাওয়া ক্ষমতা৷ বিয়ের পর সব বদলে গিয়েছিল৷ কারণ তিনি তখন দুবাইয়ের শাসকের একাধিক স্ত্রীর মধ্যে সবথেকে ছোট ৷সেই দুরন্ত হায়া এখন পলাতক৷ সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে জার্মানি হয়ে ব্রিটেন৷ জানা যাচ্ছে, প্রাণের ভয়ে আত্মগোপনেই রয়েছেন এই আরব ললনা৷ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট, পারিবারিক অশান্তির জেরে পলাতক হায়া এখন লন্ডনের কেনসিংটন প্যালেস গার্ডেনের একটি বাড়িতে লুকিয়ে। সেই বাড়ির মূল্য প্রায় ১০ কোটি ৭০ লক্ষ ডলার। এখান থেকেই বিবাহ বিচ্ছেদ মামলা লড়ার জন্য আইনি পরামর্শ নিচ্ছেন তিনি৷ কড়া নিরাপত্তায় সেই বাড়ি ঘেরা৷

বিবিসি জানাচ্ছে, দুবাইয়ের শেখের বয়স ৬৯ বছর৷ আর তাঁর স্ত্রী হায়ার বয়স ৪৫ বছর৷ ২০০৪ সালে দুজনের বিয়ে হয়েছিল৷ হায়া ছিলেন ষষ্ঠ স্ত্রী৷ আমিরশাহির সংবাদপত্র খালেজ টাইমস জানাচ্ছে, হায়ার আগের পাঁচ পক্ষের সবমিলে মোট ২৩ জন সন্তান রয়েছে৷ যে রূপের ঝলকে বহু কোটিপতির হৃদয় তছনছ হয়েছে তারাই এখন সব কিছু মুছে ফেলতে মরিয়া৷ তার জন্য পলাতক হায়া-কে ফেরত পেতে হবে৷ আর আন্তর্জাতিক আইনের ফাঁক ফোঁকর ঘেঁটে দুবাইয়ের শেখ কুলবধূ চাইছেন ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়৷ পালিয়ে যাওয়া ছোটি বেগমকে ফেরত আনতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন দুবাইয়ের শাসক শেখ মহম্মদ আল মাখতুম৷

হায়া জানেন, তাঁকে নিয়েই আন্তর্জাতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে৷ একবারে যদি তাঁকে দুবাইতে ফেরত পাঠানো হয়েছে তাহলেই জীবনের ইতি৷ আরব দুনিয়ার শেখ পরিবারের অন্দরমহলে কী কী ঘটে তা তাঁর থেকে ভালো খুব কম জনেই জানেন৷ প্রভূত ঐশ্বর্যের অধিকারী শেখ স্বামীদের বিকৃত যৌনাচারের খেলা নিয়ে বিশ্ব জুড়ে বহু মিথ ও ঘটনা ছড়িয়ে৷ তারই শিকার দুবাইয়ের কুলবধূ প্রিন্সেস হায়া বিনতে আল হুসেইন৷

কূটনৈতিক মহলের ধারণা, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সঙ্গে ব্রিটেনের সম্পর্ক খুবই ভালো৷ এখন আবুধাবির তরফে যদি লন্ডনের কাছে দুবাই শাসকের স্ত্রী হায়াকে ফেরত চাওয়া হয় তাহলেই বিপদ বাড়বে আরব সুন্দরীর৷ ঝামেলা ঘাড় থেকে নামতে হায়াকে ফেরত পাঠাতে পারে ব্রিটিশ সরকার৷

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.