--- বিজ্ঞাপন ---

ঈদের আগের রাতেও সেই গরু ‘বিজয়’ বিক্রী হয়নি , বহদ্দারহাট ইলিয়াছ ব্রাদার্স মাঠ পশু বিক্রীর উপযোগি না করায় ইজারাদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ

0

মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম  (১২ আগস্ট, ২০১৯ ইং) :  আজ পবিত্র ঈদুল আযহা মুসলমানদের কোরবাণির ঈদ। শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রামের সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত বহদ্দার এক কিলোমিটার ইলিয়াছ ব্রাদার্স মাঠের পশুর বাজারের সর্বোচ্চ ২৫ লক্ষ টাকা দাম চাওয়া গরু ‘বিজয়’ বিক্রী হয়নি। গতকাল রোববার রাত ১-০০টা পর্যন্ত অপেক্ষার পর ‘বিজয়’ গরুটির মালিক বললেন ‘ এ বছর আর ‘বিজয়’  বিক্রী হলনা, ক্রেতা পাওয়া যায়নি।’ শুধু ‘বিজয়’ নয় বহদ্দারহাট এক কিলোমিটারের নুর নগর হাউজিং সোসাইটির ইলিয়াছ ব্রাদার্স মাঠের ইজারাদার বর্ষাকাল জেনেও মাঠে পর্যাপ্ত সংস্কার না করায় গোটা পশুর বাজার এলাকা কাদায় একাকার হয়ে যায়। ফলে ইচ্ছা থাকা সত্বেও কোন ভাল ক্রেতা কাদায় পানিতে একাকার ঐ ইলিয়াছ ব্রাদার্স মাঠে প্রবেশ করেননি। অভিযোগ রয়েছে বার বার একই ব্যক্তি সিটি কর্পোরেশন থেকে  ইজারা পাওয়ায় মাঠ থেকে বৃষ্টির পানি সরে যাওয়ার নালা সংস্কারসহ  উন্নয়নমূলক কাজের দিকে তেমন নজর দেয়নি এমন অভিযোগ করেছেন বাজারে আগত পশু বিক্রেতারা। ইজারাদারের লোকজন অতিরিক্ত হাসিল আদায়ে বেশী তৎপর থাকায় দূর দূরান্ত জেলা সমূহ থেকে আগত পশু বিক্রেতারা হয়রাণির শিকার হয়েছেন অনেকে। কাদায় একাকার বাজারের হাল দেখে বহু ক্রেতা বাজারের প্রবেশ মুখে এসে পুনরায় ফিরে গিয়ে নিকটবর্তী বিবিরহাট ও সাগরিকা বাজারে গিয়ে পশু ক্রয় করেছেন।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান গরুর বাজার বিবির হাট, নুর নগর হাউজিং সোসাইটি ইলিয়াছ ব্রাদার্স মাঠ রোববার রাত পর্যন্ত সরেজমিন ঘুরে এদৃশ্য দেখা গেছে।

বহদ্দারহাট এক কিলোমিটার ইলিয়াছ ব্রাাদার্স মাঠে ঘুরে দেখা গেল , গত রোববার থেকে আনা চট্টগ্রামের বাজারের সর্বোচ্চ ২৫ লক্ষ টাকা মূল্যের ‘বিজয় নামের ফিজিয়ান জাতের গরুটি  অবিক্রিত থেকে গেছে । এ পর্যন্ত ১৪ লক্ষ টাকা দাম উঠেছে  বাংলাদেশের সংবাদকে  রোববার রাতে বললেন   ‘বিজয়’ গরুটির মালিক মো: আজিজ। বললেন ‘ আগামীতে আর তিনি এ বাজারে আর গরু আনবেন না সাগরিকায় চট্টগ্রামের সর্ববৃহৎ বাজারেই যাবেন।’  আক্ষেপ করে তিনি বললেন,  ‘গত তিন বছরে একেবারে ছোট বাচ্চা থেকে ‘বিজয়কে বড় করেছি, নিজের জায়গা না থাকায় পাঁচ হাজার টাকা ভাড়ায় গরুটির পেছনে প্রচুর ব্যয় করেছি সে অনুপাতে উপযুক্ত দাম ও  ক্রেতা  পাইনি এখানে।’  আগামী বছরের অপেক্ষায় থাকবেন জানান তিনি। চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজীদ এলাকার কুঞ্জছায়া আবাসিক  থেকে আনা গরুটির নাম দেয়া হয়েছে ‘বিজয়’ ওজন লেখা রয়েছে ১১৫০ কেজি। এর অপর মালিক তানিয়া আক্তার মিম।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ইজারাপ্রাপ্ত এই কোরবানির হাটে  দেশের বিভিন্ন স্থানের খামার থেকে গরু ছাগল এসেছে। প্রধানত: দেশের উত্তরাঞ্চল কুষ্টিয়া, পাবনা, নাটোর, রাজশাহী, নওগাঁ, ফরিদপুর, রংপুর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, ঈশ্বরদির খামারসমূহ থেকে  উল্লেখযোগ্য হারে গরু ছাগল এসেছে। চট্টগ্রামের বাঁশখালী, আনোয়ারা, কক্্রবাজার, বোয়ালখালী, সাতকানিয়া, চরতি, চকরিয়া প্রভৃতি স্থান থেকেও প্রচুর পশু চট্টগ্রামের পশুর হাটে এসেছে। কিন্তু বেশীর ভাগ বিক্রেতা মাথায় হাত দিয়ে অবিক্রিত গরু ছাগল সরিয়ে অন্যত্র বাজারে বিক্রী করেছেন।

বহদ্দারহাট ইলিয়াছ ব্রাদার্সের  মাঠে  ‘আমার বাজার’ নামের এক বেপারী ছাগল এনেছেন ৭০টি। মালিক আলহাজ্ব মো: শেয়ার আলী বাংলাদেশের সংবাদকে অভিযোগে বললেন, ‘ বড় আশা নিয়ে ছাগলগুলো এনেছিলাম। গত তিনদিনের বৃষ্টির পানিতে ছাগলগুলো দাঁড়াতে পারছিলনা। পানি সরানোর জন্য তাৎক্ষনিক নালা কেটে দেয়ার জন্য ইজারাদারের লোকজনের নিকট বললেও তারা কর্ণপাত করেনি। তাই বাধ্য হয়ে বেশীর ভাগ ছাগল পটিয়ার মইজ্জার টেক পাঠিয়ে দিয়েছি। আগামীতে আর ইলিয়াছ ব্রাদার্সের মাঠে আসবনা।’

সিটি কর্পোরেশন থেকে ইজারা নিয়ে ঘন ঘন বৃষ্টিতে বাজারের জমে থাকা পানি এবং কাদাযুক্ত মাঠ সংস্কার কেন করা হয়নি এ বিষয়ে জানতে চাইলে বহদ্দারহাট ইলিয়াছ ব্রাদার্স মাঠের ইজারাদার সাইফুল আলমের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বাজারের হাসিল আদায়ে ব্যস্ত থাকার অজুহাত দেখিয়ে ইজারাদারের লোকজন অভিযোগগুলি এড়িয়ে যান।

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.