ইসরাইলের কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম কিনবে আমেরিকা। এজন্য দু পক্ষের মধ্যে একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়েছে। ইসরাইলের ইতিহাসে এই প্রথম আমেরিকার কাছে কোনো সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করছে তেল আবিব।
মার্কিন সামরিক বিষয়ক ম্যাগাজিন ‘ডিফেন্স নিউজ’ মঙ্গলবার এ খবর দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলের সঙ্গে আমেরিকার প্রতিরক্ষা বিভাগ চুক্তিটি চূড়ান্ত করেছে। এ চুক্তির আওতায় আমেরিকা ইসরাইলের কাছ থেকে আয়রন ডোমের দুটি ব্যাটারি কিনবে যাতে মার্কিন ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব হয়।
ডিফেন্স নিউজ জানিয়েছে, কয়েক সপ্তাহ আগে আমিরকা ও ইসরাইলের মধ্যে চুক্তি হয়েছে; এখন আয়রন ডোম আমেরিকায় নেয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। সামরিক বাহিনী এ বিষয়ে দিন তারিখ চূড়ান্ত করবে। ম্যাগাজিনটি আরো বলেছে, স্বল্প সময়ের জন্য আমেরিকা আয়রন ডোম নেবে তবে বাস্তবে এর কার্যক্ষমতা ভালো হলে তা মার্কিন বাহিনীতে স্থায়ী হতে পারে।
চলতি বছরের প্রথম দিকে আয়রন ডোম নিয়ে চুক্তির কথা জানিয়েছিল ইসরাইল। সে সময় সম্ভাব্য চুক্তিকে ‘ঐতিহাসিক’ উল্লেখ করে ইসরাইলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একে বিরাট অর্জন হিসেবে তুলে ধরেছিলেন।
আয়রন ডোম মূলত ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের ছোট ছোট রকেট ঠেকানোর জন্য তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সে কাজে ব্যর্থ হয়েছে আয়রন ডোম।
আমেরকিার কাছ থেকে এফ-১৬ কিনছে তাইওয়ান
চীনের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের মধ্যে তাইওয়ানের কাছে ৬৬টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। এর ফলে মহাপ্রাচীরের দেশটির সঙ্গে আমেরিকার সংঘাত নতুন মাত্রা পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে আজ (২১ আগস্ট) বলা হয়, প্রায় ৮০০ কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র তাইওয়ানের কাছে বিক্রির জন্যে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এর মধ্যে থাকছে ৬৬টি নতুন এফ-১৬ যুদ্ধবিমান।
গতকাল স্টেট ডিপার্টমেন্ট এই ঘোষণা দিয়েছে বলে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়, বাণিজ্য, হংকংয়ে চীনের হস্তক্ষেপসহ নানা বিষয়ে ওয়াশিংটন এবং বেইজিংয়ের মধ্যে চলমান মতবিরোধ যখন তুঙ্গে তখনই ট্রাম্প প্রশাসন তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিলো। এর ফলে চীন ও আমেরিকার মধ্যে দ্বন্দ্ব আরো বাড়বে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রথমে মার্কিন সরকারের ঘনিষ্ঠজনরা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন যে তাইওয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির চুক্তিটি অনানুষ্ঠানিক থাকবে। অনেকে আবার এমনটিও বলেছিলেন যে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে যুক্তরাষ্ট্র হয়তো সেই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। কিন্তু, সেসব ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো অস্ত্র বিক্রির চুক্তিটি আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন দেওয়ার ফলে।
তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রির সংবাদ শোনা মাত্রই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন। গত ১৬ আগস্ট চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিং বলেন, তাইওয়ানের ওপর চীনের সার্বভৌমত্ব ও অন্যান্য বিষয় উপেক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অস্ত্র তথা এফ-১৬ যুদ্ধবিমান বিক্রির বিরোধিতা করে চীন আশা প্রকাশ করে যে যুক্তরাষ্ট্র সেই চুক্তি বাতিল করে দিবে। আর তা না হলে যুক্তরাষ্ট্রকেই এর “সব দায়ভার নিতে হবে” বলেও হুমকি দেওয়া হয় চীনের পক্ষ থেকে। (ডেইলি স্টার ও বিদেশী গণমাধ্যম অবলম্বনে)