--- বিজ্ঞাপন ---

ভারত ও পাকিস্তান কাশ্মীর যুদ্ধে আটক সামরিক সাজ-সরঞ্জাম প্রদর্শন করেছে

0

মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, (০৮.০৯.২০১৯ ইং): দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরমাণু শক্তিধর দেশ ভারত ও পাকিস্তান। কাশ্মীরের বিরোধপূর্ণ অঞ্চলকে ঘিরে দুদেশের উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। সীমান্তে ছোটখাটো গোলাগুলির ঘটনা লেগেই আছে। বড় ধরনের সংঘর্ষও লেগে যাওয়ার আশংকা আগের চাইতে অনেক অনেক বেশী। গত ৬ সেপ্টেম্বর পাকিস্তান দিনটিকে সেনা দিবস হিসেবে উদযাপন করেছে। ১৯৬৫ সালের এদিন ভারতের সাথে যুদ্ধে জড়িয়েছিল দেশটি। অতীতের দু দুটি যুদ্ধে একে অপরের আটক করা ট্যাংক, সামরিক যান ইত্যাদি প্রদর্শন করে সেনাদের মনোবল ও জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। প্রতি বছর  ৬ সেপ্টেম্বর ইসলামাবাদ অতীত যুদ্ধের বিভিন্ন সেক্টরে ভারতের বিরুদ্ধে জয়ের প্রতীক হিসেবে বিভিন্ন সাজসরঞ্জাম প্রদর্শন করে থাকে ।

 

তবে  এবার দেশটি ভারতীয় অংশের কাশ্মীরে দিল্লীর বিশেষ মর্যাদা বাতিল এবং সেখানকার জনসাধারণের বিরুদ্ধে কার্ফু, নিপীড়নের প্রতিবাদে তাদের সাথে একাত্নতা জানিয়ে দিবসটি পালন করেছে। দুদেশের মধ্যে প্রতিদিনই পাল্টাপাল্টি কোন না কোন বিষয় নিয়ে উত্তেজনা লেগেই আছে। গত ৫ সেপ্টেম্বর কাশ্মীরের উপর থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপ করে বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পর থেকেই এখন মূহু মূহু উত্তেজনা । মূলত: পাকিস্তান এনিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বিষয়টি উত্থাপন করে। এরও আগে ২৭ ফেব্রুয়ারী দুদেশ একে অপরের সীমান্তে বিমান হামলা চালায়। এতে ভারতের ১টি জঙ্গী বিমান খোয়া যায় পাইলট বন্দী হয়। পরে পাকিস্তান তাকে মুক্তিও দেয়।  এর পর থেকে দুদেশ প্রতিদিনই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রয়েছে একে অপরের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় হুমকী দিয়ে চলেছে।

দুদেশের ঘটনাবলীর উপর নজর রাখছে এমন ঘনিষ্ঠ মহল মনে করছে  আসন্ন ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের আগে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছুবে। কারও কারও মতে, বিষয়টিকে আন্তর্জাতিকীকরণের জন্য পাকিস্তান সর্বেতোভাবে তৎপরতা চালাচ্ছে।

আজ ৮ সেপ্টেম্বর ভারতের এনডিটিভি অনলাইন সংস্করণে ১৯৭১ সালের যুদ্ধে ভারতের হাতে আটক পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি মার্কিন নির্মিত উইলী সামরিক জীপ এর ছবি প্রকাশ করেছে। এটির নাম দিয়েছে ভারতীয় সেনারা ‘জারপাল কুইন’। ৭১ সালে পাকিস্তানের সাকারগড় সীমান্তের জারপাল এলাকা থেকে এটি আটক করা হয়েছিল বলেই এটাকে ‘জারপালের রাণী’ আখ্যা দেয়া হয়েছে।

কাশ্মীরে লেহ- থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৩য় গ্রেনাডিয়ার রেজিমেন্ট ক্যাম্প এ জীপটি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের বিজয়ের প্রতীক হিসেবে এটিকে সাজিয়ে রাখা হয়েছে গত ৪৮ বছর ধরে। জীপটির গায়ে পাকিস্তানি  উর্দু লেখা এখনও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে । এটিকে ভারত জয়ের প্রতীক হিসেবে দেখছে। পাকিস্তানের পরাজয় হয়েছে এমনটি দাবী করে

 

ভারতীয়  কর্ণেল অবসরপ্রাপ্ত জে এস ধীলনের উদ্ধৃতি দিয়ে এনডিটিভি অনলাইন  জানিয়েছে, ঐ সামরিক জীপটি আটকের পর পুরস্কার হিসেবে ভারতের সামরিক খেতাব পরম বীর চক্র উপাধি পান এই গ্রেনাডিয়ার রেজিমেন্টের তৎকালীন কর্ণেল  হোসিয়ার সিং এবং সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট অরুণ ক্ষেত্রপাল। কর্ণেল অবসরপ্রাপ্ত ধীলন জানান, জীপটি ৫০ বছর পার করলেও এখনও এটি টিপটপ কন্ডিশনে চলছে। ভিআইপি অতিথিরা এখানে এলে জীপটি তাদের দেখানো হয়।

 

এবং এটি যুদ্ধে জয়ের পুরস্কার বা ওয়ার ট্রফি হিসেবে  জীপটিকে ভিআইপি গার্ড অব অনারের কাজেও ব্যবহার করা হয়। ওয়ার ট্রফি হিসেবে জীপটি এই রেজিমেন্ট যখন যেখানে বদলী হয়েছে গোটা ভারতবর্ষে এটি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়ের প্রতীক হিসেবে সাথে নিয়ে গেছে। এনডিটিভ বলছে, গ্রানাডিয়ার রেজিমেন্ট-এর এই  যুদ্ধে আটক ঐতিহাসিক পাকিস্তানি জীপটি ‘লেহ’  আর্মি ক্যাম্পে জম্মু ও কাশ্মীর সীমান্তের অসংখ্য সংঘর্ষের সাক্ষী হয়ে আছে এখন।

অপরদিকে পাকিস্তানের সেনা দিবসে সে দেশের আর্মি মিউজিয়ামে যুদ্ধে আটককৃত ভারতের মেজর জেনারেল নিরঞ্জন প্রসাদের জীপটিও প্রদর্শন করা হয়েছে। এতে লেখা রয়েছে , ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে ভারতের ১৫ তম ইনফ্রেন্টি ডিভিশনের জিওসি’র জীপটি আটক করেছিল পাকিস্তানের ১৮ তম বেলুচ রেজিমেন্ট ’৬৫ সনের ৮ সেপ্টেম্বর তারিখে। পাকিস্তান এই আটককে সেদেশের জন্য বীরত্বের ও সম্মানের মনে করে। যুদ্ধে আটককৃত সামরিক যানবাহন বিভিন্ন দিবসে প্রদর্শন করে দেশ দুটি সৈন্যদের মনোবল বৃদ্ধি করছে এবং জনগণকে উৎসাহ যোগাচ্ছে ।

## শহীদ, ০৮.০৯.২০১৯ ইং

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.