--- বিজ্ঞাপন ---

ব্রেকিং নিউজ : ভারতীয় সেনা প্রধানের হুমকির পর গোলায় ২ পাকিস্তানি সৈন্য নিহত: পাকিস্তানের কড়া প্রতিবাদ

0

মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম: ভারত-পাকিস্তান কাশ্মীরকে নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হচ্ছে। সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, ভারতের সেনাবাহিনীর প্রবল গোলাবর্ষনে কাশ্মীরের হাজি পীর সেক্টরে ২ পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে। পাকিস্তানী সেনাবাহিনীও সীমান্তে অবস্থান সুদৃঢ় করছে বলে সামরিক সূত্রে জানা গেছে। ১৪ সেপ্টেম্বর শনিবার হাজী পীর সেক্টরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাবিলদার নাসির হোসেন মারা গেছে বলে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আন্ত:গণসংযোগ দপ্তর আইএসপিআর এক বিবৃতির উদ্ধৃতি দিয়ে পাকিস্তানের ইংরজী দৈনিক  দি ডন অনলাইন সংস্করণে  শনিবার এ সংবাদ দেয়। গত বৃহস্পতিবার আরেক সেনা সদস্য সিপাহী গোলাম রসূল মারা যায় বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করে। এদিকে পাকিস্তান সৈন্য নিহতের ঘটনায় ভারতকে সীমান্তে সংযম প্রদর্শনের জন্য দুদেশের মধ্যেকার চুক্তি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।

সংঘর্ষে পাকিস্তানের ২ সৈন্য নিহতের খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে ভারতের দি হিন্দুস্থান টাইমস পত্রিকা ১৪ সেপ্টেম্বর অনলাইন সংস্করণে সেদেশের সেনা সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, নিহতদের মৃতদেহগুলি সরিয়ে নিতে  সাদা পতাকা দেখালে ভারতীয় বাহিনী সেগুলি পাকিস্তানীদের সরাতে  সম্মতি দেয়। এদিকে পাকিস্তানের দি ডন পত্রিকা ১৪ সেপ্টেম্বর  অনলাইনে ভারতীয় গোলায় কাশ্মীরের বালাকোট নামক স্থানে আরও একজন বেসামরিক মহিলার মৃত্যুর খবর দিয়েছে।

এঘটনায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে সেদেশে ভারতের দূতাবাসের চার্জ দ্য এ্যাফেয়ার্স গৌরব আহুলুওয়ালিয়াকে ডেকে এনে প্রতিবাদ লিপি হস্তান্তর করেছে বলে ডনের সংবাদ জানিয়েছে ।  এর আগে জেনারেল বিপিন রাওয়াত সংকেত পাওয়া মাত্রই পাকিস্তানের  আজাদ কাশ্মীরের অংশে সেনাবহর নিয়ে ঢুকে পড়বেন। পাকিস্তানকে লক্ষ্য করে কড়া হুমকি দেন তিনি। তিনি আরও বলেন ,পাকিস্তানের কাশ্মীরের লাইন অব কন্ট্রোল অতিক্রম করে ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের হাতে থাকা গোটা কাশ্মীর দখল করতে প্রস্তুত। শুধু সিগন্যালের অপেক্ষায় রয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।

সংকেত পাওয়া মাত্রই পাকিস্তানে ঢুকে পড়বে ভারতীয় সেনাবহর।বর্ডার  পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে থাকা আজাদ কাশ্মীর দখলের জন্য সেদেশের সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত  হয়ে আছে।সরকারের তরফ থেকে নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ভারতের ইকনমিক টাইমস পত্রিকায় ১৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সেনা প্রধান কর্তৃক পাকিস্তানের কাশ্মীর অংশে অভিযানের সকল প্রস্ততি সম্পন্ন করার সংবাদটি  পরিবেশন করে।

ইতিপূর্বে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে থাকা কাশ্মীরে অভিযান চালানোর দিল্লীর অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। তবে জেনারেল রাওয়াত বলেছেন সকল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন কেন্দ্রীয় সরকার সেনাবাহিনী সেই নির্দেশনা অনুযায়ী অগ্রসর হবে। এর আগে গতমাসে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং বলেছিলেন, ভারতের কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর সরকারের পদক্ষেপ হচ্ছে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীর দখল করে নেয়া। এবং সেটিকে ভারতের অংশের কাশ্মীরের সাথে অঙ্গীভূত করা। মন্ত্রী ভারতীয় সংসদে এব্যাপারে নিরংকুশ আইন পাস করা আছে। সম্প্রতি কাশ্মীরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কর্তৃক কাশ্মীরে কার্ফু জারিসহ ব্যাপক ধরপাকড়ের পরপরই প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং-ও অনুৃরুপ বক্তব্য দেন।

সামরিক সূত্রগুলো  বলছে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীরের ৭৪০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে যাকে লাইন অব কন্ট্রোল বলা হয়ে থাকে। সীমান্তে কার কত সৈন্য রয়েছে গোপণীয় বিধায় একেবারে সঠিক হিসাব পাওয়া যায়না। তবে নিরপেক্ষ সূত্রগুলো বলছে, ভারতের কাশ্মীর অংশে সীমান্তে  দেশটি ৮টি ব্রিগেড মিলিয়ে প্রায় ৩৫ থেকে ৪৬ হাজার সৈন্য রয়েছে। আর কাশ্মীরে কার্ফু তদারকিসহ সেখানে মোতায়েন আছে কারও মতে সব মিলিয়ে ৬ থেকে ৭ লক্ষ সৈন্য। ভারতীয় পত্রিকার মতে, এসংখ্যা ২ লক্ষ ১০ হাজার। তবে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট এর থিংক ট্যাংক ১৩ সেপ্টেম্বর এক হিসাব দেখিয়ে বলেছে,  কাশ্মীরের জনগণকে দমাতে সেখানে ৪৬ হাজার সেনা মোতায়েন আছে। তারা কার্ফু দিয়ে হাজার হাজার মানুষের উপর নিপীড়ন চালাচ্ছে। গত ৩০ বছরে সেখানে ৭০ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে বলে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের থিংক ট্যাংক জানায়।

 

বিভিন্ন সামরিক সূত্র বলছে, পাকিস্তানের কাশ্মীর সীমান্ত বরাবর ভারতের সর্বাধুনিক রাশিয়া থেকে কেনা টি-৯০ ট্যাংক, টি-৭২  এবং নিজ দেশে তৈরী স্বল্পসংখ্যক ‘অর্জুন’  ট্যাংক মোতায়েন করা হয়েছে। ভারতের সেনা প্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত ঘন ঘন সীমান্তে সেনা চৌকিসমূহ পরিদর্শন অব্যাহত রেখেছেন নিয়মিত।  লন্ডনের গার্ডিয়ান পত্রিকার  মতে,  ভারতের সৈন্য সংখ্যা প্রায় ১২ লক্ষ । পাকিস্তানের সৈন্য সংখ্যা হচ্ছে ৬ লক্ষ ২০ হাজার।

 

ট্যাংক রেজিমেন্ট রয়েছে ভারতের ৬৭ টি , পাকিস্তানের ৫১টি । ভারতের ট্যাংকের সংখ্যা – ৪,৪২৬টি । পাকিস্তানের নিজ দেশে তৈরী ‘আল খালিদ’  ট্যাংক সহ বহরে রয়েছে ইউক্রেন থেকে ক্রয়কৃত টি-৮০ ইউডি, টি-৮৫,‘আল- জারার’ সহ- ২,৯২৪টি ট্যাংক। ভারতের ইকনমিক টাইমস পত্রিকা সেদেশের সামরিক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলছে, পাকিস্তানের ট্যাংক বহরের ৭০ ভাগ ট্যাংক এখন রাতের বেলায় যুদ্ধপযোগী করা হয়েছে যা ভারতের জন্য চিন্তার কারণ।

পরমাণু বোমায়ও পাকিস্তান এগিয়ে। ফ্রান্সের সংবাদ সংস্থা এএফপির মতে, পাকিস্তানের হাতে ১৫০টি পরমাণু ওয়ারহেড রয়েছে। অপরদিকে ভারতের আছে ১৪০টি। পাকিস্তানের নিজ দেশে তৈরী জেএফ-১৭ থান্ডার জঙ্গী বিমান রয়েছে ১০৬টি, মার্কিন এফ-১৬ জঙ্গী বিমান ৭৬ টিসহ -৫০১টি। অপরদিকে ভারতের জঙ্গী বিমানের মধ্যে, রুশ নির্মিত এসইউ-৩০, বৃটিশ জাগুয়ার ,মিগ-২১ সহ -৮১৪টি।

## শহীদ, ১৪,০৯,২০১৯ ইং।

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.