--- বিজ্ঞাপন ---

জাতিসংঘে ইমরান খান ভারতের সাথে পরমানু যুদ্ধেরই ইঙ্গিত দিলেন

0

জাতিসংঘের দিকে বলটি ঠেলে দিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, ‘আমি কোন হুমকি দিচ্ছি না, কিন্ত আন্তর্জাতিক গোষ্ঠিকে ভাবতে হবে তারা কি ভারতীয় বাজারকে তোষণ করবে নাকি নির্যাতিত মানুষের ন্যায় বিচারের জন্য লড়বে। তা না হলে ভালো মনে আপনারা করতে পারেন, সাথে সাথে খারাপের জন্যও তৈরি থাকুন’।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বক্তব্য বিশ্ব জুড়ে আলোচিত হচ্ছে। নাখোশ হয়েছে ভারত। ভারত মনে করছে, তার এ বক্তব্য পরমানু যুদ্ধের হুমকি। জাতিসংঘের বক্তৃতায় অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় ইমরান খান আক্রমন করে বসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। তিনি বলেন, মোদী সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আরএসএসএর সদস্য। মোদী গুজরাট দাঙ্গায় জড়িত উল্লেখ করে ইমরান বলেন, তার সংগঠন আরএসএস ভারত থেকে মুসলমানদের মুছে ফেলার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। জাতি শোধনের নামে মুসলিমদের ভারত থেকে মুছে ফেলার চক্রান্ত চলছে। ইমরান বলেন, গুগল খুললেই দেখতে পাবেন আরএসএসএর প্রতিষ্ঠাতা গোলাওয়াকর ও সাভারকরের কার্যকলাপ। তাদের ঘৃনার মতবাদই গান্ধীকে হত্যা করে। আর এ আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে মোদী ২০০২ সালে গুজরাটে মুসলিমদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা বাধাঁয়। ইমারন হিটলারের উদাহরণ টেনে বলেন, হিটলারের ব্রাউনসার্ট’ বাহিনী দ্বারা প্রভাবিত  আরএসএস। আরএসএস ক্যাম্পে জঙ্গি তৈরি হয়। আর এ জঙ্গিরা ২০০ মানুষকে কেটে ফেলেছিলেন। দেড়লাখ মুসলিম গৃহহিন হয়েছিল। এগুলো কংগ্রেসের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরও কথা বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ইমরান আরও বলেছেন, আমি যেহেতু ক্রিকেটার তাই ভারতে  আমার অনেক বন্ধু। পাকিস্তানের ক্ষমতা গ্রহণ করে প্রথমেই মোদীর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। চেষ্টা করেছিলাম পুরানো ঠেলাঠেলি ভুলে সামনে এগোতে। কিন্ত  ‘উগ্র জাতীয়তাবাদী’ শাসক দল বলে পরিচিত মোদীর সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে বৈঠকে বসতে রাজি হয়নি। বিগত পুলওয়ামার বিস্ফোরণের পর পরই তারা পাকিস্তানের দিকে আঙুল ওঠায়। তাঁরা প্রমাণ চেয়েছিলেন কাজটি পাকিস্তান করেছে।  এমনকি যুদ্ধবিমানও পাঠিয়েছে। বালাকোট অভিযান নিয়েও তারা মিথ্যাচার করেছে। অথচ ভারতের হামলায় ‘দশটা গাছ ছাড়া কিছুরই ক্ষতি হয়নি । ভারতের এক পাইলট ধরা পড়ার পর আমরা তার নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছিরাম। আমরা তাঁকে  সম্মানের সাথে মুক্তি দিয়েছি। অথচ এটাকে শান্তি প্রক্রিয়া মনে না করে  ১৫০ জন জঙ্গি মারা গিয়েছে বলে ভোটে মিথ্যা প্রচার চালায় মোদী।ইমরানের বক্তব্য শুধু ভারত কেন্দ্রিক ছিল না,  তিনি কাশ্মীর, রোহিঙ্গা, ফিলিস্তিন সহ নানান ইস্যুতে কথা বলেছেন।  ইসলামফোবিয়া বিষয় উল্লেখ করে  তিনি বলেন, ৯ /১১-এর পরে বিশ্বে ইসলামফোবিয়া ভয়ংকরভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে বিভিন্ন দেশে মুসলিম মহিলাদের হিজাব পরার ওপরও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।   ইসলামকে সন্ত্রাসবাদের সাথে জুড়ে দেয়ার বিসয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন এটা কিছু পশ্চিমা দেশের কাজ।

তিনি বলেন, মৌলবাদী ইসলাম, সন্ত্রাসবাদী ইসলাম বলে কোন কিছু নেই। ইসলাম ধর্ম হলো সেটাই, যা আমাদেরকে মহানবী হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিখিয়েছেন। পশ্চিমা বিশ্বের অনেকে ইচ্ছাকৃতভাবে মুসলমানদের কষ্ট দেয়ার জন্য বিদ্বেষমূলক কথা-বার্তা বলে থাকে উল্লেখ করে ইমরান বলেন, মুসলমানরা তাদের নবী হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কতটা ভালবাসে তা তাদের বুঝতে হবে। ইসলাম ধর্ম শান্তির ধর্ম। কোন ধর্মীই সন্ত্রাসবাদের শিক্ষা দেয়না। আফসোসের বিষয় হচ্ছে, পশ্চিমা নেতারা ইসলামের সাথে সন্ত্রাসবাদকে জুড়ে দেন। মুসলিম দেশগুলির রাষ্ট্র প্রধানরা এই ইস্যুটিতে মনোযোগ দেননি বলে তিনি মন্তব্য করেন। যখন ইসলামের অবমাননার বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ জানাই, তখন আমাদের মৌলবাদী বলা হয়।  ইসলামই প্রথম গোলামদের ন্যায্য অধিকার দিয়েছে এবং সংখ্যালঘুদের সমান অধিকার দিয়েছে। পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, আত্মঘাতী হামলাকে ইসলামের সাথে জুড়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে ৯ /১১-এর আগে যতগুলো আত্মঘাতী হামলা হয়েছে তাঁর বেশীরভাগই করেছে তামিল হিন্দুরা। তখন কিন্তু হিন্দু ধর্মকে কেউ সন্ত্রাসবাদের সাথে যুক্ত করেনি।

ইমরান খানের নির্ধারিত সময় ছিল ১৫ মিনিট। কিন্ত বক্তৃতা করেছেন ৩০ মিনিটেরও বেশি। ভারতীয় কোন সাংবাদিকের সাথে ইমরান কথা না বলে ঘৃনা ভরে উল্লেখ করেন, কাশ্মিরের খুনিদের সাথে বসে আমি কোন কথা বলবো না। তিনি সর্বশেষ বলেন, যুদ্ধ যদি শুরু হয়ে যায়, তাহলে যা কিছু হতে পারে। যখন দুটি পরমানু শক্তিধর রাস্ট্র সামনা সামনি যুদ্ধের জন্য দাড়িয়ে যায় তার ফল সীমান্তেই আটকে থাকবে না। এবার জাতিসংঘ কি চাইছে তারাই বলুক। (সূত্রঃআনন্দবাজার, জং, ইনসাফ)

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.