--- বিজ্ঞাপন ---

কে এই আসল ০০৭ জেমস বন্ড?

0

কাজী আবুল মনসুর##

মেয়েরা পাগল হয়ে যায়। তা সে যে বয়সেরই হোক না কেন। ১৬ থেকে ৪৬ বছরের যে কোন তরুনীই ০০৭ জেমস বন্ড খ্যাত সীন কনোরী বলতে পাগল। কি শয়নে কি স্বপ্নে কি জাগরনে। সিনেমার পর্দায় ধাবমান গাড়ীর সিটে, রেস্তোরায় বা প্লেনের সীটে সিন কনোরীকে পেলেই হলো। যৌবন বা যৌবনবতী যে কোন তরুনীই বাহ্য জ্ঞান হারিয়ে ফেলতো। বোবা বনে যেতো। কথা বের হতো না মূখে। এমন কি আকর্ষন ছিল সীন কনোরীর চেহারায়?

সারা বিশ্বে এখনও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে জেমস বন্ড চরিত্রটি। একাধিক অভিনেতা অভিনয় করলেও জেমস বন্ড এর প্রয়োজন এখনও ফুরিয়ে আসেনি। আন্তর্জাতিক সিনেমা মন্ডলে জেমস বন্ড এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। আর সীন কনোরী হচ্ছে জেমস বন্ড। সাড়া জাগানো ০০৭ জেমস বন্ড ছবির নায়ক। জেমস বন্ড চরিত্র নিয়ে বিশ্বের সিনেমা জগতে গবেষনাও কম হয়নি। এখনও হচ্ছে। বন্ড সিরিজের শেষ ছবির নাম ‘স্পেক্টার’।

ড্যানিয়েল ক্রেগ নায়ক হিসেবে অভিনয় করেছিলেন। রূপালী পর্দা মাতাতে আবারও আসছে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় সেই বন্ড সিরিজের পরবর্তী ছবির নাম ‘বন্ড ২৫’। এবারও বন্ডের ভূমিকায় দেখা যাবে ড্যানিয়েল ক্রেগকেই। ‘দ্য নেম ইজ বন্ড’ জেমস বন্ড।’ রমণী-মোহন ব্রিটিশ সিক্রেট এজেন্ট জেমস বন্ডকে পর্দায় দেখবেদর্শক।  ২০১৯ সালের ২৫ অক্টোবর ব্রিটেনে ‍মুক্তি পাবার কথা রয়েছে ‘Bond 25’। এরপর পুরো আমেরিকা জুড়ে মুক্তি পাবে ৮ নভেম্বর। আপাতত সেই অপেক্ষায় রয়েছে বন্ড ভক্তরা।

যে কথা বলছিলাম। সিন কনোরী আসলে কে ছিল। সারা বিশ্বের রাফ এন্ড টাফ্র নায়করা তাকে অনুসরন করেন। এ পর্যন্ত জেমস বন্ড হিসেবে যারাই রূপালী পর্দায় এসেছেন তারা সবাই চেষ্টা করেছেন সিন কনোরী হতে। ০০৭ জেমস বন্ড ছবির নায় সিন কনোরী ছিলেন জাতিতে আইরিস। তার জাতীয়তা নিয়ে বেশ কিছু মতবিরোধ আছে। এ নিয়ে কম জল ঘোলা হয় নি। শেষপর্যন্ত সংবাদ মাধ্যমে সিন কনোরী নিজেই তার অবস্তান পরিস্কার করেছিলেন। এগুলো এখন ইতিহাস। পিতা-মাতার দিক দিয়ে কনোরী আইরিন। তবে তার জম্ম হয়েছিল স্কটল্যান্ডে। সীন কনোরী বেশ রসিক ছিলেন। তার এ চরিত্রও অনেকে ফলো করতেন। জেমস বন্ডের ছবি মানেই মদ আর নারী। বিখ্যাত হার্পার পত্রিকায় একবার তার সাক্ষাতকার ছাপিয়েছিল। সে কনোরী বলেছিলেন, তিনি ড্রিন্ক করতেন না! এক সাংবাদিক একবার তাকে প্রশ্ন করেছিলেন,‘কনোরী তুমি নাকি ড্রিন্ক করোনা’? কনোরী দরাজ হাসি হেসে বললেন, ‘ইন্টারভিউতে অনেক মিথ্যা কথা বরতে হয়। বোঝই তো মানুষ একটা ইমেজ চায়। ইন্টারভিউতে নানা বাজে কথা বলে ঐ রকম ইমেজ বজায় রাখতে হয়। নইলে হলিউডের সব নামিদামী তারকারা যদি তাদের ব্যক্তিগত জীবনের কেলেংকারীর কথা প্রকাশ করে প্রকাশ্যে প্রচার করতো তাহলে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি লাটে উঠতো।’

 

প্রথম দিককার ছবির প্রশ্নে কনোরী বলেন, প্রথম দিককার ছবি মানে ব্যর্থতার ছবি। তখন কেই বা  আমাকে চেনে । কেউ আমাকে পাত্তা দেয় না। মনে আছে আমার প্রথম ছবি ‘অ্যানেদার টাইম অ্যানেদার প্লেইস’ লালা চারনারের বিপরীতে। একই সাখে ওয়াল্ট ডিজনীর একটা ছবিতে কাজ করছিলাম। ঐ ছবির নাম ছিল ‘দ্যা টাইটেল পিউপল’। মজার কথা কি জানেন , আমার দৈহিক ওজন ছিল বেশ কম। শরীরটা ছিল হাল্কা। চোয়ালের হাড়গুলো বের করা। আলফ্রেড হিচকক আমার চোয়ালের হাড় দেখে বলল, ক্যামেরায় এটা বিশ্রী আসবে। তুমি লম্বা আর মোটা জুলফি রাখো হে।’ আমি কৃত্রিম জুলফি রাখলাম। তা যা দেখাচ্ছিল আমার চেহারাখানা।’

০০৭ সিরিজের  ছবি ছাড়া অন্য কোন ছবিতে ভিন্ন কান চরিত্রে অভিনয় করা পছন্দ করো তুমি? এ প্রশ্নে বন্ড বলেন, সিউর। বলল সীন কনোরী। এই জেমস বন্ডের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছি আমি। সারা জীবন সিক্রেট এজেন্ট হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত হতে চাইনা আমি। তাছাড়া ঝামেলাও আছে। গোল্ডকিফার ছবিতে মারপিটের দৃশ্যে দারুন মার খেতে হয়েছে আমাকে। ফ্রম লাভ উইথ রাশিয়া ছবিতেও মার খেতে হয়েছে। এত মারামারি আর ভালো লাগেনা। তাই হিচককের ডাকে সাড়া দিলাম। গ্রহণযোগ্যতাও পেয়েছি। কিন্ত একটা জিনিষ উপলদ্ধি করলাম, দর্শকরা আমাকে সিক্রেট এজেন্ট হিসেবেই দেখতে চায়।

তুমি কি স্বাধীনচেতা? এ প্রশ্নে কনোরী বলেন, ১৯৫৮ সালে আমি যখন হলিউডে আসি তখন এখানকার কলাকুশলীরা আমাকে একটি টিভি সিরিজে অভিনয় করতে বলেন। কিন্ত আমি রাজী হয়নি। আমার মনে হয়েছিল আমার আরও অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। আমি লন্ডনে ফিরে যাই। সেখানে দুটো নাটক আর দুটো টিভি সিরিজ করি। বছরে মাত্র একটি ছবি করি। এগুলো উদ্দেশ্য ছিল দক্ষতা অর্জন করা। কারন পূর্ণ দক্ষতা থাকলে তখন আমি যে কোন চরিত্রে াভিনয় করতে পারবো।

জেমস বন্ড সিরিজ কনোরীকে কি দিয়েছে? এ প্রশ্নে কনোরী বেশ নাড়াচাড়া দিয়ে বলেন, বলল কি দিয়েছে? আগে আমার একটি একটা স্কুটার ছিল। যা দিয়ে পই পই করে ঘুরে বেড়াতাম। এখন স্কুটারের পরিবর্তে গাড়ী হয়েছে। আর আগে আমার কোন অর্থ ছিল না। সে জন্য বিশেষ গার্ল ফ্রেন্ড ছিল না। এখন আমার প্রচুর মেয়ে বন্ধু। আমি ওদের জ্বালা সইতে পারি না। মেয়েদের থেকে আমি পালাতে চাই।’

কিংবদন্তী এ অভিনেতা ১৯৩০ সালে জম্মগ্রহন করেন। ৮৯ বছর বয়সে তিনি অনেক জেমস বন্ড দেখেছেন। তবে তার মতোন কেউ সৃষ্টি হবে কিনা এ নিয়ে নির্মাতাদের মধ্যেও সংশয় রয়েছে।###(বিদেশী পত্রিকা অবলম্বনে)

 

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.