--- বিজ্ঞাপন ---

ভারতের নৌ শক্তি ঠেকাতে পাকিস্তান ১০টি যুদ্ধজাহাজ ৮ টি সাবমেরিন সংগ্রহ জোরদার করেছে

0

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:  ভারত সমুদ্র পথে পাকিস্তানে হামলা চালাবে মর্মে সেদেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এর হুমকির পর পাকিস্তান নড়েচড়ে উঠেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাকিস্তান ১০ টি নতুন যুদ্ধজাহাজ ও ৮টি সাবমেরিন নির্মাণ কাজে গতি সঞ্চার করেছে। এসকল জাহাজ ও সাবমেরিনে লেটেস্ট জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র থাকবে যা ভারতের বিমানবাহী জাহাজের জন্য মাথা ব্যথার কারণ বলে সামরিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। পাকিস্তানের ইংরেজী দৈনিক ‘এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’ পত্রিকাসহ বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় তুরস্কের সাথে ‘মিলজেম’ ( মিলি জেমি তুরস্কের জাতীয় ফ্রিগেট প্রোগ্রাম) ‘আডা’ শ্রেণীর ফ্রিগেট এর প্রথমটির কাজে হাত দিয়েছে । গত  ৩০ সেপ্টেম্বর এখবর প্রকাশিত হয়। পাকিস্তানের সাথে সম্পাদিত চুক্তির মধ্যে ফ্রিগেটগুলির মূল্য গোপণ রাখা হয়েছে। জানা গেছে, আনুমানিক প্রতিটি ৩০ কোটি ডলার মূল্যে আরও অন্যান্য সাপোর্ট সিস্টেমসহ প্রায় ১০০ কোটি ডলারের এই চুক্তি। তুরস্কের যুদ্ধজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান চুক্তি মোতাবেক ৪টি র ২টি তুরস্কের ইস্তাম্বুল শিপইয়ার্ডে এবং বাকী ২টি পাকিস্তানের করাচী শিপইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়াকর্স-এ টি-ও-টি টেকনোলজি ট্রান্সফার ভিত্তিতে নির্মিত হবে।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার জাতিসংঘে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পরমাণু যুদ্ধের হুমকির জবাবে পরদিন শনিবার ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং পাকিস্তানকে ভবিষ্যতে নৌ পথে আরও জোরালো ভাবে হামলার কড়া জবাব দেন। তিনি ২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে মোম্বাইতে ভারতের নৌ বাহিনীর নতুন ফ্রান্সের প্রযুক্তিতে তৈরী স্করপেন শ্রেণীর আধুনিক প্রযুক্তির সাবমেরিন ‘খান্দেরী’ উদ্বোধনকালে এ হুমকি দিয়ে বলেন, ’৭১ সালের যুদ্ধে ভারতীয় নৌ বাহিনী পাকিস্তানের নৌ পথ অবরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছিল। বর্তমানে নৌ বাহিনী অতীতের চাইতে বহুগুণ শক্তির অধিকারী। পাকিস্তানে আগামী হামলা হবে নৌ পথেই প্রচন্ড শক্তি নিয়ে। এবং তিনি বলেন, যা হবে দেশটির জন্য ভয়াবহ।

সামরিক সূত্রে জানা গেছে, এই মিলজেম ‘আডা’ শ্রেণীর ফ্রিগেট-এ ভিএলএস (ভার্টিক্যাল লান্চ সিস্টেম) ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা সমৃদ্ধ। মূলত: আডা শ্রেণীর ফ্রিগেটের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি স্টিলথ প্রযুক্তির অর্থাৎ রাডারে ধরা পড়বেনা। রাডার ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে এটি সাবমেরিন ধ্বংস করতে সক্ষম। ভারতীয় নৌ বাহিনীর জন্য এটিও মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠবে বলে সামরিক মহল মনে করছেন। পাকিস্তানের ডন প্রত্রিকা জানায় ‘আডা’ শ্রেণীর এই ফ্রিগেট ২,৪০০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন । এটি ৯৯ দশমিক ৫০ মিটার দীর্ঘ। ঘন্টায় ২৯ নটিক্যাল মাইল গতির এই ‘আডা’ শ্রেণীর ফ্রিগেট-এ ১টি ১০ টন ওজনের সাবমেরিন বিধ্বংসী হেলিকপ্টার বহন করতে সক্ষম। ঘন্টায় ১৫ নটিক্যাল মাইল গতিতে এই যুদ্ধজাহাজ ৩,৫০০ নটিক্যাল মাইল একনাগাড়ে পাড়ি দিতে পারে। এ ফ্রিগেট চুক্তির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, পাকিস্তানের নৌ শিপইয়ার্ডে প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে এটি নির্মাণ করা যাবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল ইলেকট্রিক কোম্পানীর এলএম-২৫০০ গ্যাস টারবাইন সিস্টেমে জাহাজটি চালিত হবে অর্থাৎ এটি হবে ইঞ্জিন। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ কোন ইঞ্জিন নিষেধাজ্ঞা এড়াতে পাকিস্তানের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাকিস্তানের নৌ বাহিনী প্রধান এডমিরাল জাফর মাহমুদ আব্বাসি ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসিপ তাইফ এরদোয়ান ২৯ সেপ্টেম্বর তুরস্কের ইস্তাম্বুল নেভাল শিপইয়ার্ডে পাকিস্তানের জন্য প্রথম ‘আডা’ শ্রেণীর ফ্রিগেটটির ষ্টীলের পাত কেটে এর উদ্বোধন করেন।

তুরস্কের তৈরী এই অত্যাধুনিক ‘আডা’ ফ্রিগেটের অনেক কিছুই গোপণ রাখা হয়েছে। তবে গত ফেব্রুয়ারী মাসে তুরস্কের সাথে নৌ মহড়া ‘আমান’ চলার সময় পাকিস্তানের নৌ বাহিনী প্রধান এডমিরাল জাফর মাহমুদ আব্বাসি বলেন, তুরস্ক ও পাকিস্তানে প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে নির্মীয়মান এ ফ্রিগেটে চীনের তৈরী এলওয়াই-৮০ অথবা এইচএইচকিউ-১৬ ভিএলসি সিস্টেমস এতে  অন্তর্ভুক্ত হবে। তবে তিনি জানান, এ ফ্রিগেটের সবচাইতে আক্রমণাত্নক অস্ত্র হচ্ছে, পাকিস্তানের তৈরী সাবমেরিন বিধ্বংসী ‘হারবাহ’ ক্রুজ মিসাইল। চীনের জাহাজ বিধ্বংসী সি-৮০২ ক্ষেপণাস্ত্রও যুক্ত হতে পারে । তুরস্কের অস্ত্র নির্মাতা আসেলসান কোম্পানীর ‘গোকডেনিজ’ ক্লোজ-ইন সিস্টেমও এতে থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। আরও থাকছে সংযুক্ত রয়েছে, ১ টি ৭৬ মিলিমিটার কামান, ১ টি আরআইএম-১১৬ (রোলিং এয়ারফ্রেম মিসাইল), ২ টি টর্পেডো লাঞ্চার, ২ টি কোয়ার্ড সেল এএসসিএম। এছাড়া রয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সার্ভিল্যান্স রাডার থেলস স্মার্ট টি-এস মার্ক-২ এবং ইলেকট্রনিক এন্টি সাবমেরিন কাউন্টারমিজারস, সোনার ও ইনফ্রারেড পড। তুরস্কের এসটিএম জাহাজ নির্মাতা কোম্পানীর জিএম ডাভুত ইলমাজ সেদেশের বার্তা সংস্থা আন্দালু সংবাদ সংস্থাকে জানান, প্রতিটি ফ্রিগেটের জন্য তুরস্কের জন্য  নির্মিত প্রতিটির খরচ পড়ে ৩০ কোটি মার্কিন ডলার। তবে পাকিস্তানের জন্য এর মূল্য কমিয়ে ২৫ কোটি ডলার প্রতিটি হতে পারে বলে তিনি আভাস দেন। তুরস্কের তৈরী এই অত্যাধুনিক ‘আডা’ ফ্রিগেটের অনেক কিছুই গোপণ রাখা হয়েছে। তবে গত ফেব্রুয়ারী মাসে তুরস্কের সাথে নৌ মহড়া ‘আমান’ চলার সময় পাকিস্তানের নৌ বাহিনী প্রধান এডমিরাল জাফর মাহমুদ আব্বাসি বলেছিলেন, তুরস্ক ও পাকিস্তানে প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে নির্মীয়মান ‘আডা’ শ্রেণীর ফ্রিগেটে চীনের তৈরী এলওয়াই-৮০ অথবা এইচএইচকিউ-১৬ ভিএলসি অন্তর্ভুক্ত হবে। তবে তিনি জানান, এ ফ্রিগেটের সবচাইতে আক্রমণাত্নক অস্ত্র হচ্ছে, পাকিস্তানের তৈরী সাবমেরিন বিধ্বংসী ‘হারবাহ’ ক্রুজ মিসাইল। চীনের জাহাজ বিধ্বংসী সি-৮০২ ক্ষেপণাস্ত্রও যুক্ত হতে পারে । তুরস্কের অস্ত্র নির্মাতা আসেলসান কোম্পানীর ‘গোকডেনিজ’ ক্লোজ-ইন সিস্টেমও এতে থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এতে আরও সংযুক্ত  রয়েছে, ১ টি ৭৬ মিলিমিটার কামান, ১ টি আরআইএম-১১৬ (রোলিং এয়ারফ্রেম মিসাইল), ২ টি টর্পেডো লাঞ্চার, ২ টি কোয়ার্ড সেল এএসসিএম। এছাড়া রয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সার্ভিল্যান্স রাডার থেলস স্মার্ট টি-এস মার্ক-২ এবং ইলেকট্রনিক এন্টি সাবমেরিন কাউন্টারমিজারস, সোনার ও ইনফ্রারেড পড।

তুরস্কের এসটিএম জাহাজ নির্মাতা কোম্পানীর জিএম ডাভুত ইলমাজ সেদেশের বার্তা সংস্থা আন্দালু সংবাদ সংস্থাকে জানান, প্রতিটি ফ্রিগেটের জন্য তুরস্কে নির্মিত প্রতিটির খরচ পড়ে ৩০ কোটি মার্কিন ডলার। তবে পাকিস্তানের জন্য এর মূল্য কমিয়ে ২৫ কোটি ডলার প্রতিটি হতে পারে বলে তিনি আভাস দেন।
এই ৪টি আডা শ্রেণীর ফ্রিগেট সহ চীন থেকে ০৫৪ শ্রেণীর আরও ৪টি মডার্ণ ফ্রিগেট, হল্যান্ড থেকে ২টি ডামেন ওপিভি ১৯০০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন অপসোর প্যাট্রোল ভেসেল সহ সর্বমোট ১০ টি সর্বাধুনিক প্রযুক্তির যুদ্ধজাহাজ কয়েক বছরের মধ্যেই যুক্ত হতে যাচ্ছে পাকিস্তানের নৌ বাহিনীতে। চীনের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ০৫৪ শ্রেণীর  ফ্রিগেটে যে ক্ষেপণাস্ত্র সজ্জিত হবে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই ভারতে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন সেদেশের সামরিক বিশেষজ্ঞরা।

জানা গেছে, ভারতের বিমানবাহী জাহাজের জন্য পাকিস্তানের চীনের তৈরী ০৫৪ শ্রেণীর নতুন জেনারেশন ফ্রিগেটে সজ্জিত শব্দের চাইতে তিনগুণ দ্রুত গতির সিএম-৩০২ ক্ষেপণাস্ত্র মারাত্নক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। ভারতের এনডিটিভি বিভিন্ন সমর বিশারদদের মতামতের উদ্ধৃতি দিয়ে পাকিস্তানের ফ্রিগেটে সজ্জিত সুপারসনিক গতির এই সিএস-৩০২ নিয়ে মতামত প্রতিবেদন করেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রকে ভারতের ব্রামোস ক্রুজ গতির ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের গেম চেঞ্জার হিসেবে দাঁড়াবে বলে আখ্যা দিয়েছে এনডিটিভি। এসব পাকিস্তানি যুদ্ধজাহাজ যথেষ্ট প্রতিরোধে সক্ষম হবে বলে মনে করছেন নৌ যুদ্ধবিশারদরা। পাকিস্তান চীন থেকে পেতে যাচ্ছে ৮টি- ০৪১ ‘উয়ান’ শ্রেণীর ডিজেল সাবমেরিন। ২০১৬ সালে পাকিস্তান এই ৮টি সাবমেরিন ক্রয় করার জন্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি সই করে। এই অত্যাধুনিক সাবমেরিনগুলি সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এআইপি (এয়ার ইন্ডিপেনডেন্ট প্রপালশন সিস্টেম ) সমৃদ্ধ যা দিয়ে পানির নীচে কয়েক মাস লুকিয়ে থাকতে সক্ষম এই সাবমেরিনগুলি। সামরিক পর্যবেক্ষকদের মতে এগুলি আগামীতে পাকিস্তানের নৌ বাহিনীতে সংযুক্ত  হলে ভারতের মোকাবেলায় অনেক দূর এগিয়ে যাবে পাকিস্তান।
## শহীদ, ০১.১০.২০১৯ ইং।

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.