--- বিজ্ঞাপন ---

চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ পুন:নির্মাণের দাবীতে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন 

0

চট্টগ্রাম,(০৫ অক্টোবর,২০১৯ ইং)ঃ চট্টগ্রামের দক্ষিণাঞ্চলের সাথে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম কালুরঘাট সেতুটিরে বর্তমান অবস্থা অত্যন্ত নাজুক এবং জরাজীর্ণ। দক্ষিণ চট্টগ্রাম তথা বোয়ালখালীবাসীর প্রাণের দাবী কালুরঘাট বহুমুখী সেতু।এখনো পর্যন্ত এই জনগুরুত্বপূর্ণ সেতুটি নির্মাণে কার্যকরী এবং বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।স্বয়ং চট্টগ্রাম-৮ আসনের মহাজোটের এম.পি মঈনুদ্দিন খাঁন বাদল গত ৯ আগস্ট  চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময়কালে এই সেতু নির্মাণের ব্যাপারে আক্ষেপ করে বলেছেন   ডিসেম্বরের মধ্যে কালুরঘাট সেতু নির্মাণ করা না হলে মহান সংসদকে তিনি সালাম জানাবেন।সরকার বার বার সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিলেও অদ্যবধি সেতু নির্মাণের কোন লক্ষণ পরিলক্ষিত হচ্ছেনা।

আজ শনিবার (৫ অক্টোবর) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে বোয়ালখালী বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও বিজিএমইএর প্রাক্তন প্রথম সহসভাতি আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ এ কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এরশাদ উল্লাহ বলেন, বোয়ালখালী তথা দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার সাথে এক সময়ে সড়ক ও রেল যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল কালুরঘাট রেল সেতু। বৃটিশ আমলে নির্মিত এই সেতুটির মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। কালুরঘাট সেতু দিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করে অন্তত ৩০/৪০ হাজার মানুষ পায়ে হেঁটে পার হয়। তাছাড়া রাত-দিন অসংখ্য ছোট-বড় ভারী যানবাহন চলাচল করে। সেতুটির বর্তমান অবস্থা অত্যন্ত নাজুক এবং জরাজীর্ণ। প্রতিনিয়ত ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। যে কোন সময় সেতুটি ভেঙ্গে ভয়াবহ মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে এবং জনগণের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশংকা রয়েছে। বর্তমান সরকার যদিও পতেঙ্গা দিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার যাওয়ার জন্য ট্যানেল নির্মাণ শুরু করেছেন। কিন্তু ঐ ট্যানেল দিয়ে আনোয়ারা থানার জনসাধারণ, দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় যাতায়াতের জন্য সুবিধা হবে। কিন্তু বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলার একাংশের জনসাধারণের জন্য কালুরঘাট সেতুটি ছাড়া অন্যকোন বিকল্প মাধ্যম নেই। তাই কালুরঘাট রেল সেতু বহুমুখী করণ (দুই লাইন বিশিষ্ট) তৈরি করা অতীব জরুরী প্রয়োজন এবং বোয়ালখালী, পটিয়া, রাঙ্গুনিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবী।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম হইতে বাংলাদেশের রাজস্ব আয়ের শতকরা ৮০% যোগান দিয়ে আসছে সেই স্বাধীনতার পর থেকে, কিন্তু উন্নয়নের ব্যাপারে প্রতিটি সরকার বিমাতাসূলভ আচরণ করে আসছে। কালুরঘাট সেতু নিয়ে ইতিমধ্যে চার বার সমীক্ষা হয়েছে। কোরিয়ান কোম্পানী চুড়ান্ত সমীক্ষা করেছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু হওয়া সত্ত্বেও কেন এই সেতুর কাজ শুরু করা হচ্ছেনা তা আমাদের বোধগম্য নয়। এখন কালুরঘাট সেতু (রেল সেতু) যে অবস্থায় আছে সেটার উপর দিয়ে মাত্র ২টি ট্রেন আসা যাওয়া করে। দোহাজারী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ফার্নেস ওয়েল নেওয়া হয় ট্রেনের মাধ্যমে। সে ট্রেন গুলোর মাত্র আড়াই মাইল বেগে চলে। যেকোন সময় এই ব্রীজ ভেঙ্গে যেতে পারে। বর্তমানে সরকার দোহাজারী থেকে কক্সবাজার-টেকনাফ-গুনধুম পর্যন্ত রেল সম্প্রসারণের জন্য প্রকল্পের কাজ শুরু করেছেন।যাহা আমরা সবাই এই প্রকল্পের কাজের জন্য সাধুবাদ জানাই। তাই এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কালুরঘাট রেল সেতু নতুন করে তৈরী করা ছাড়া সরকারের নিকট আর কোন বিকল্প পথ নাই। তাই এই বহুমুখী রেল সেতু অতিসত্ত্বর নির্মাণ কাজ শুরু করা উচিত এবং অতীব জরুরীভাবে প্রয়োজন বলে আমরা সকলে মনে করি।

বর্তমান কালুরঘাট রেল সেতুর বয়স ৮৯ বছর। ১৯৩০ সালে নির্মিত এই সেতু। বর্তমানে সেতুটি জোড়াতালি দিয়ে কোন রকম টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এরপরও এই সেতুতে যানবাহন ও জনগণের চলাচল বাড়ছে দিন দিন। ফলে ঝুঁকিও বাড়ছে। ২০০১ সালে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সেতুটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করে। ফলে চরম ঝুঁকিতে যানবাহন চলাচল করছে মেয়াদোত্তীর্ণ কালুরঘাট সেতুটি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য ও বোয়ালখালী থানা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব আজিজুল হক, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি নেতা এম এ হাশেম রাজু, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আর ইউ চৌধুরী শাহিন, চান্দগাঁও থানা বিএনপি’র সভাপতি কাউন্সিলর আলহাজ্ব মোহাম্মদ আজম, বোয়ালখালী থানা বিএনপি’র সাবেক আহ্বায়ক ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সদস্য শওকত উল আলম, চান্দগাঁও থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শরিফ উদ্দিন খান, চান্দগাঁও ৪নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি মোহাম্মদ ইলিয়াছ, মোহরা ৫নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এম ফিরোজ খান, বোয়ালখালী থানা বিএনপি’র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ সরওয়ার আলমগীর,যুবদল দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আজগর, চট্টগ্রাম মহানগর যুবদল নেতা জাফর আহম্মেদ, সহ-সভাপতি চান্দগাঁও, বোয়ালখালী, পাঁচলাইশসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিপুল নেতাকর্মী সমর্থক।
## শহীদ, চট্টগ্রাম, ০৫.১০.২০১৯ইং।

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.