আবরারের মৃত্যু শুধু বাংলাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি করেনি। বিশ্ব বিবেককেও নাড়া দিয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে আবরার হত্যাকান্ড গুরুত্বপূর্ন ইস্যু হিসেবে প্রচারিত হয়েছে।
এ এফপি’র খবরে বলা হয়েছে, ভারতের সঙ্গে পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে সরকারের সমালোচনা করায় ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন। এ নিয়ে রাজধানী ঢাকা ও রাজশাহীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ চলছে। ন্যায়বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে এসেছেন। শিক্ষকরাও যোগ দিয়েছেন সেই বিক্ষোভে। ঢাকার উপপুলিশ কমিশনার মুন্তাসিরুল ইসলাম এএফপিকে বলেন, আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ নিয়ে জেরা করতে ছাত্রলীগে নেতাদের হাজতে নেয়া হয়েছে। এএফপি জানায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কয়েকজন সদস্য হত্যা, সহিংসতা ও লুটতরাজে জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্রলীগ কুখ্যাতি অর্জন করেছে।
দ্য হিন্দুর খবরে বলা হয়েছে, ভারতের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক দ্বিপক্ষীয় চুক্তি নিয়ে আবরার ফাহাদ প্রশ্ন তুলেছিলেন। পত্রিকাটি জানায়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা জেরা করার সময় তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন। তার বন্ধু দ্য হিন্দুকে বলেন, আবরার ফাহাদকে একটি রুমে আটকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এসময় ভারত ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে পোস্ট দেয়ায় তিনি শিবিরের সঙ্গে যুক্ত কিনা, সেই প্রশ্নও করা হয়েছে।
দোহাভিত্তিক আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ছাত্রলীগের কর্মীরা বুয়েটের এক শিক্ষার্থীকে হত্যার পর ঢাকা ও রাজশাহীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবরারের এক সহপাঠী বলেন, কয়েকটি ফেসবুক পোস্টের কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এটা কাণ্ডজ্ঞানহীন। ছাত্রলীগের গুণ্ডারা তাকে হত্যা করেছেন। আমরা ন্যায়বিচার চাচ্ছি। আবরার ফাহাদের বাবা ৫৭ বছর বয়সী বারাকাত উল্লাহ বলেন, আমার সন্তান নিরপরাধ ছিলেন। তিনি তার জোরালো মত দিয়েছেন, যেজন্য তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনবিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল আল-জাজিরাকে বলেন, শিবিরের সঙ্গে জড়িত থাকায় আরেক শিক্ষার্থীকে প্রশ্ন করার অধিকার ছাত্রলীগকে কে দিয়েছে? সংগঠনটি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। তাদের এসব তৎপরতা বন্ধ করতে হবে।
এছাড়া বিবিসি , ভয়েস অব আমেরিকাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডের খবর প্রকাশ পেয়েছে।