--- বিজ্ঞাপন ---

ভিন্ন মতের কারনে আবরার হত্যা, বলছে বিদেশী মিডিয়া

0

ডেস্ক রিপোর্টঃবাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা বিদেশি গণমাধ্যমেও সাড়া ফেলেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভের ঘটনাও উঠে আসে তাদের প্রতিবেদনে।

এএফপি, রয়টার্স, বিবিসি, আল জাজিরা, নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট, ভয়েস অব আমেরিকা, দ্য গার্ডিয়ান, গালফ নিউজ, দ্য হিন্দু, দ্য ন্যাশনাল, এবিসি নিউজসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বুয়েটের এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডটি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তির সমালোচনায় আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আল জাজিরা। এ ঘটনার জন্য ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দায়ী করে একাধিক শিক্ষার্থীর প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি।

এই হত্যাকাণ্ডের জন্য অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা নয় বুয়েট শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারের খবরটিও জানায় তারা।

নিহত শিক্ষার্থীর এক বন্ধু আল জাজিরাকে বলে, ‘ফেসবুক পোস্টের কারণে উন্মত্ত হয়ে তাকে মেরে ফেলা হলো। ছাত্রলীগের গুন্ডারা তাকে হত্যা করেছে। আমরা এর বিচার চাই।’

আবরারের বাবা বরকতুল্লাহ (৫৭) বলেন, ‘আমার ছেলেটা একেবারেই নিরীহ ছাত্র ছিল। সে তার শক্তিশালী মতামত প্রকাশ করেছিল এবং এ জন্য তাকে হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হলো।’

এ ছাড়া গঙ্গা চুক্তিসহ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিতর্কিত পানি চুক্তির বিষয়টিও উঠে আসে আলজাজিরার প্রতিবেদনটিতে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিতে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ৪ ঘণ্টা ধরে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে আবরার ফাহাদকে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বুয়েটের এক শিক্ষার্থীর বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি জানায়, রোববার দিবাগত রাত দুইটার সময়ও জীবিত ছিলেন আবরার। জুনিয়র কয়েকজন শিক্ষার্থী আবরারকে ধরে যখন নিচের সিঁড়িতে নিয়ে যাচ্ছিল তখনো সে বলছিল, ‘আমাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাও।’

কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই আবরারের মৃত্যু ঘটে।  বুয়েটে এ ধরনের নির্যাতন ও সহিংসতার ঘটনা প্রায় ঘটে বলেও জানায় বিবিসি। ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানায়, সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘বিতর্কিত’ চুক্তির সমালোচনা করায় হত্যার শিকার হয়েছে আবরার।

ঢাকার এক সাংবাদিকের বরাত দিয়ে বিশেষ প্রতিনিধির করা দ্য হিন্দুর সেই প্রতিবেদনে জানানো হয়, আবরারের ফেসবুক পোস্টে ব্যাখ্যা করা হয়, শেখ হাসিনা ভারতকে সবকিছুই দিয়ে এসেছেন কিন্তু কিছুই পাননি।

এই সমালোচনার কারণে জামায়াত ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ছাত্রশিবিরের সঙ্গে আবরারের সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ। আবরার হত্যার ঘটনাটি এবং একে কেন্দ্র করে বুয়েটসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের খবর গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করেছে রয়টার্স।

সেখানেও উঠে আসে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকারের পানিচুক্তির সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যমটি।

বুয়েটের এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বাংলাদেশ জুড়ে বিক্ষোভ নিয়ে খবর প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন পোস্ট। তাদের প্রতিবেদনেও উঠে আসে, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের পানিচুক্তি নিয়ে ফেসবুকে সমালোচনা করায় আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

আবরারের হত্যাকারীদের বিচার করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া আশ্বাসের বিষয়টিও জানায় তারা।

আরেক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানেও আবরার হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করে। বিচারের দাবি জানিয়ে আবরারের বাবার বক্তব্যও প্রকাশ করে তারা।

এএফপির বরাত দিয়ে ভয়েস অব আমেরিকা, দ্য গালফসহ একাধিক সংবাদমাধ্যমেও একই বিষয়টি উঠে আসে।

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের পানি বণ্টন চুক্তির সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে আবরার ফাহাদ।

এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হত্যার ঘটনার জন্য ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগকে অভিযুক্ত করা হয়। এ ছাড়া বাস চাপায় কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদ সড়ক আন্দোলনেও ছাত্রলীগের হামলার বিষয়টিও প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যমগুলো। (সূত্রঃ দেশ রুপান্তর)

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.