--- বিজ্ঞাপন ---

বাগদাদির মৃত্যুর ১৫ মিনিটেই ডিএনএ নিশ্চিত করে মার্কিন কমান্ডোরা

0

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত ২৬ অক্টোবর রাতের কমান্ডো অভিযানে ডিএনএ সনাক্ত করার যাবতীয় সরঞ্জাম ও টেকনিশিয়ানও সাথে নিয়েছিল মার্কিন কমান্ডোরা। তার মৃত্যুর মাত্র পনের মিনিটের মধ্যেই নিশ্চিত হয় যে ওই দেহটি টার্গেট বাগদাদীর। সীমান্তবর্তী দেশ তুরস্কের সংবাদ মাধ্যম বিবিসি, এএফপিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে অভিযানের আরও বিস্তারিত জানা গেছে। ইসলামিক স্টেটের (আইএসআইএস) নেতা বাগদাদীর মৃত্যুর পরদিন অপর এক অভিযানে আইএসের প্রধান মুখপাত্র আবুল হাসান আল মুহাজিরও নিহত হয়। এর আগে বাগদাদীর সাথে তার ডিপুটি আবু সাঈদ আল ইরাকীও নিহত হয়। আন্তর্জাতিক ভাষ্যকাররা প্রথমসারির কয়েকজন নেতা নিহতের ফলে সংগঠনটির তৎপরতা একেবারেই ক্ষীণ হয়ে আসবে মনে করছেন।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউজের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক প্রোগ্রামের পরিচালক লীনা খাতিব আলোকপাত করেছেন তার ওপর।তিনি বলছেন, আবু বকর আল-বাগদাদির মৃত্যুতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আইএসের অস্তিত্ব ধ্বংস বা সম্পূর্ণ পতন নিশ্চিত হবে না। বরং কাছাকাছি সময়ে সিরিয়ার স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে আইএসের এখনকার ভবিষ্যত, তাতে দলটির নেতা থাকুক আর না থাকুক।

আইএসের জন্য বাগদাদি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা ছিলেন, বিশেষ করে দলটি যখন একটি তথাকথিত রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা করছিল।

 

 

মার্কিন ৮ টি হেলিকপ্টারে কমান্ডোরা হামলায় অংশ নেয়

প্রায় দুই ঘন্টা ধরে অভিযান চালায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্পেশাল ফোর্সের কমান্ডো দল। অভিযান চলাকালে  হেলিকপ্টার থেকে ৪০ মি.মি. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরী এম৪৩৩এইচইডিপি (হাই এক্সপ্লোসিভ ডুয়েল পারপাস) রাউন্ড ৩০ মি.মি. এম৭৮৯ এইচইডিপি রাউন্ড ব্যবহার করেছে। এসকল গোলাবারুদ ও উচ্চ প্রযুক্তির বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্রে আবু বকর বাগদাদী যে বাড়ীতে অবস্থান করছিল সেটি সহ স্থানটি সম্পূর্ণ ধূলিস্যাৎ হয়ে যায়। মাটির সাথে মিশে যায় পুরো এলাকা।

বাগদাদিকে হত্যার জন্য চালানো অভিযানের পর সেখানকার পরিস্থিতি

যেহেতু খলিফা ছাড়া খিলাফত প্রতিষ্ঠা করা যায় না, সে কারণে আইএস বাগদাদিকে জনসম্মুখে একজন শক্তিমান নেতা হিসেবে হাজির করেছিল। যে কারণে সিরিয়া এবং ইরাকে আইএসের পতনের পরেও এই গ্রুপের সমর্থকদের বিশ্বাস ছিল একদিন বাগদাদি আবার খিলাফত প্রতিষ্ঠা করবেন।

সাংবাদিক এবং দাতা সংস্থার কর্মী, যারা সিরিয়ার ভেতরে আল-হোল ক্যাম্পে আইএস যোদ্ধাদের স্ত্রী ও বিধবাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বিভিন্ন সময়, তারা জানিয়েছেন, বাগদাদির যেকোন বক্তৃতা তার সমর্থকদের উদ্দীপ্ত করতো।

উত্তর সিরিয়ায় তুরস্ক অভিযান চালানোর পর, আইএসের সামরিক শক্তি অনেকটাই  হ্রাস পেয়েছিল, কিন্তু তারা তৎপর ছিল। উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় আইএসের স্লিপার সেল বা গোপনে কাজ করে এমন ছোট ছোট দল সুযোগ পেলেই হামলা চালিয়েছে, বিশেষ করে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর। হোমসের কাছে পালমিরার উত্তরে সোখানা মরুভূমিতে আইএস সিরিয়া এবং রুশ স্থাপনার ওপর আলাদাভাবে হামলা চালিয়েছে।

কেবল আইএসের নামে নয়, বহু সাবেক আইএস যোদ্ধা উত্তর পশ্চিম সিরিয়ায় স্থানীয় একটি জিহাদি দলে যোগ দিয়েছেন। ইদলিবে আইএস ঘনিষ্ঠ ঐ দলটির নাম হুরাস আল-দ্বীন, এটি আল-কায়েদার সাথে সরাসরি সম্পর্কিত একটি দল।এই দলটির সীমিত আকারে সামরিক শক্তি থাকলেও স্থানীয়দের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা কম।

সিরিয়ায়  আইএসের মূল কর্মকান্ড উত্তর-পূর্বে দেইর আল-যোওর এলাকায়, বিশেষ করে বসাইরার দক্ষিণে দিবানের দিকে। এ এলাকাটি নিয়ন্ত্রণ করে সিরিয়া ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস এসডিএফ, কিন্তু এলাকাটি কুর্দি অধ্যুষিত হওয়ায় সেখানে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই সংকটে রয়েছে এসডিএফ।

সেখানকার বাসিন্দাদের বড় অংশটি বিভিন্ন আরব গোত্রের, যারা কেবল এসডিএফকেই নয়, বরং ঐ এলাকায় সক্রিয় সিরিয়ার সামরিক বাহিনী এবং ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনীকেও প্রত্যাখ্যান করে আসছে। সিরিয়ার সরকার এবং ইরানের বিরুদ্ধে সম্প্রতি এই গোত্রগুলো বিক্ষোভ করেছে। উত্তর সিরিয়ায় তুরস্কের অভিযানের আগে, দেইর আল-যোওরে সেখানকার আরব গোত্রসমূহ এবং এসডিএফের মধ্যে নিয়মিত বিবাদ সংঘর্ষ হতো।পরে সেখানে আইএসের তৎপরতা ক্রমে বাড়ে। কয়েক মাস আগে এসডিএফের এক চেকপয়েন্ট থেকে একজন আরব পথচারীকে হত্যার ঘটনা ঘটে। এরপরের দুই সপ্তাহে দেইর আল-যোওরে স্লিপার সেলের হামলার সংখ্যা বেড়ে যায়।

তুরস্ক অভিযান চালানোর পর, ঐ এলাকায় এসডিএফ যেহেতু সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয়, তাদের অনুপস্থিতির এই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগানোর চেষ্টা করে আইএস। সেখানে নিজেদের কর্মকান্ড বাড়িয়ে দেয় তারা, যদিও নতুন করে ভূমি দখলের চেষ্টা এবার তারা করেনি। এ সময় দলটি আইইডিএসের ব্যবহার করে, যা থেকে বোঝা যায় তাদের সামরিক সক্ষমতা ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে।

একই সঙ্গে মার্কিন প্রশাসন জানায়, দেইর আল-যোওরে আইএস বিরোধী আন্তর্জাতিক জোট সেখানকার তেলক্ষেত্রগুলো রক্ষার দায়িত্ব নিয়েছে, সেটাও আইএসের কলেবর না বাড়াতে পারার আরেকটি বড় কারণ।

বিবিসি বিশ্লেষন: এখন কী করতে পারে দলটি?

এখন বাগদাদির মৃত্যুকে কাজে লাগিয়ে আইএস তার সমর্থকদের মধ্যে এ ঘটনার প্রতিশোধের বার্তা দেবে। কিন্তু শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত  দলটির যোদ্ধারা যুদ্ধ করে যাবে, এমন দৃঢ়  প্রতিজ্ঞ  এখনে আর তাদের মধ্যে নাও দেখা যেতে পারে।মৃত্যুর আগে সিরিয়ায় দলটির নেতা আবু আয়মান আল-ইরাকি মাত্র ছয়জন যোদ্ধাকে নিয়ে এসডিএফের বিরুদ্ধে লড়াই এ নেমেছিলেন। কিন্তু মাঝপথে সব কয়জন যোদ্ধা তাকে রেখে পালিয়ে যায়। আইএসের স্বর্ণ সময়ে এমন পরিস্থিতির কথা কেউ কল্পনাও করতে পারতো না।

নতুন নেতা আসবে আইএসে?

আইএস হয়তো শীঘ্রই বাগদাদির একজন উত্তরসূরি এবং একজন শীর্ষ নেতা চূড়ান্ত করবে। তবে দলটির কার্যক্রমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, সিরিয়ার উত্তর-পূর্ব এবং উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের পরিস্থিতি কেমন থাকে। প্রেসিডেন্ট  ট্রাম্প বলেছিলেন, বাগদাদি ইদলিবে আছে, সেখানেই তাকে হত্যা করা হয়েছে, কারণ তিনি সেখানে আইএসকে সংগঠিত করার চেষ্টা করছিলেন। এদিকে ইদলিবের জিহাদি দল হুরাস আল-দ্বীন আল-কায়েদার প্রতি আনুগত্যের কারণে হায়াত তাহরির আল-শাম নামে আরেকটি ইসলামি দল থেকে আলাদা হয়ে যায়। কিন্তু এই দলটি কিংবা আইএস কেউই সেখানে ততটা জনপ্রিয় না হওয়ায়  এই প্রদেশে আইএস তাদের ঘাঁটি গড়ে তুলবে এমন সম্ভাবনা কম। এছাড়া উত্তর-পূর্বে সিরিয়ার সেনাবাহিনী নিজেদের উপস্থিতি বাড়াচ্ছে, যদিও তাদের ক্ষমতা খুবই সীমিত। তাদের সৈন্য সংখ্যা আর সামরিক যন্ত্রপাতির ঘাটতি যেমন আছে, তেমনি সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে ছোট কয়েকটি দলের অন্ত:দ্বন্ধ মেটাতেও হিমশিম খাচ্ছে তারা। উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণ এখনো কুর্দি যোদ্ধাদের হাতে।

একমাত্র আইএস বিরোধী আন্তর্জাতিক জোট দেইর আল-যোওর ত্যাগ করলেই, আইএস ঐ এলাকা টার্গেট করতে পারে।এক্ষেত্রে তারা এসডিএফকে প্রত্যাখ্যানকারী আরব গোত্রসমূহের সহায়তা পাবে।

কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, এই জোট সেখানকার তেলক্ষেত্রগুলো ছেড়ে শ্রীঘ্র নড়ছে না।কিন্তু মনে রাখা দরকার, বাগদাদির মৃত্যুকে যদি একটি প্রতীকী বিজয় হিসেবেও দেখা হয়, তবু সেখানকার স্থানীয় দলগুলোর কোন্দল ও অন্তদ্বন্ধ আইএসের কাজ করার সুযোগ বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে।

আবু বকর আল বাগদাদি: মার্কিন সেনাদের গুলিতে নয়, আত্মঘাতী হলেন আই এস নেতা

শনিবার থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়ায় লেখা হচ্ছিল উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশে মার্কিন বিশেষ বাহিনীর সেনা অভিযানে আইএসের প্রতিষ্ঠাতা এবং শীর্ষ নেতা আবু বকর আল বাগদাদি মারা গেছেন। শনিবার রাতে মি. ট্রাম্পও এক টুইটে পরোক্ষভাবে এই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।

রোববার ওয়াশিংটন সময় সকালে হোয়াইট হাউজে তা নিশ্চিত করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড  ট্রাম্প, এবং অভিযানের বিস্তারিত বিবরণ দেন। প্রেসিডেন্ট  ট্রাম্প বলেন, মি আল বাগদাদি যে বাড়ীতে লুকিয়ে ছিলেন রাতের বেলায় মার্কিন স্পেশাল ফোর্স সেখানে ঐ অভিযান চালায়। আটটি হেলিকপ্টার অভিযানে অংশ নেয়। ‘প্রচন্ড গোলাগুলির’ পর আমেরিকান কমান্ডোরা বাড়ীটি ঘিরে ফেলে দরজা দিয়ে না ঢুকে দেয়াল ভেঙ্গে বাড়ীর আঙ্গিনায় ঢোকে।আল বাগদাদি সেসময় তার তিন বাচ্চাকে নিয়ে একটি বদ্ধ সুড়ঙ্গে লুকানোর চেষ্টা করেন। মার্কিন সেনাদের সাথে থাকা কুকুর তাকে তাড়া করলে উপায় না দেখে আইএস নেতা শরীরে বাঁধা বিস্ফোরক ফাটিয়ে দেন। বিস্ফোরণে সুড়ঙ্গটি তার শরীরের ওপর ধসে পড়ে। বিস্ফোরণে আল বাগদাদির শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। সাথে থাকা তিনটি শিশুও নিহত হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, আই এস নেতার বেশ কজন সহযোগীও নিহত হয়েছেন। ডোনাল্ড বলেন, ছিন্নভিন্ন শরীরের ডিএনএ পরীক্ষা করে আল বাগদাদির পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। তিনি বলেন, দু ঘণ্টা ধরে চলা অভিযানের শুরুতে ১১টি শিশুকে সেখান থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেয় হয়। তারা অক্ষত রয়েছে।

 

 

সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “বাগদাদি কুকুরের মত মারা গেছে…কাপুরুষের মত মারা গেছে। বিশ্বের এক নম্বর সন্ত্রাসী নেতার বিচার সম্পন্ন করেছে।”

উত্তর পশ্চিম সিরিয়ায়  ইদলিব প্রদেশে বারিশা নামের একটি গ্রামের একজন গ্রামবাসী শনিবার গভীর রাতে চালানো ঐ নাটকীয় সেনা অভিযানের কথা বিবিসিকে বলেছেন। তিনি বলেন, ৩০ মিনিট ধরে হেলিকপ্টার থেকে হামলা চালানো হয়। দুটি বাড়িকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়। অভিযানে একটা বাড়ী গুড়িয়ে যাওয়ার কথা তিনি জানান এবং বলেন এরপর সেনাবাহিনী সেখানে ঢোকে। প্রেসিডেন্ট  ট্রাম্পও বলেছেন, মার্কিন বাহিনী ঐ অভিযানে ব্যাপক অস্ত্র ব্যবহার করেছে। ২০১১ সালে আইএস নেতাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করে আমেরিকা। পরে পুরস্কারের অঙ্ক বাড়িয়ে  ২৫ মিলিয়ন ডলার করা হয়।ঐ পুরস্কারের লোভেই কেউ বা কারা তার সন্ধান দিয়েছে কিনা- তা জানা যায়নি।

তবে  ট্রাম্প তার বক্তব্যে এই অভিযানে নানাভাবে সহায়তা করার জন্য সিরিয়া, তুরস্ক, রাশিয়া এবং কুর্দিদের প্রশংসা করেন। প্রেসিডেন্ট  ট্রাম্প বলেছেন অভিযানস্থল থেকে তারা স্পর্শকাতর নথিপত্র সংগ্রহ করেছেন যার মধ্যে ইসলামিক স্টেটের ভবিষ্যত পরিকল্পনাও ছিল।

কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসের কমান্ডার মাজলুম আবদি বলেছেন, শনিবার রাতের এই অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে তারাও এতে অংশ নেন। আবু বকর আল বাগদাদি নিহত হওয়ার খবর এর আগেও অনেকবারই পাওয়া যায়, কিন্তু পরে তার সত্যতা পাওয়া যায়নি।

বিবিসির একজন সিরিয়া বিষয়ে বিশেষজ্ঞ বলেছেন অন্তত ৩৫বার তার নিহত হবার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু পরে দেখা গেছে, সেসব খবর সঠিক ছিল না।

কে ছিলেন আবু বকর আল-বাগদাদি?

আবু বকর আল বাগদাদীর আসল পরিচয় কী তা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। আল বাগদাদী তার আসল নাম নয় বলে মনে করা হয়। নাম আবু বকর আল-বাগদাদি – তবে তার আসল নাম ইব্রাহিম আওয়াদ আল-বদরি। ধারণা করা হয়, ১৯৭১ সালে ইরাকের সামারার কাছে একটি সুন্নি পরিবারে তার জন্ম। অল্প বয়সে গভীরভাবে ধর্মের দিকে ঝুঁকে পড়েন। তিনি ইসলামিক স্টাডিজে স্নাতক ডিগ্রী  লাভের পর কোরানিক স্টাডিজে স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

২০০৪ সালে ইঙ্গ-মার্কিন আক্রমণের শিকার হয়ে ক্যাম্প বুকাতে বন্দী হন তিনি। সেখানে তিনি প্রাক্তন ইরাকী গোয়েন্দা কর্মকর্তাসহ অন্য বন্দীদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন।

২০০৩ সালে যখন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইরাকে সামরিক অভিযান চলে, তখন আল বাগদাদি বাগদাদের কোন একটি মসজিদের ইমাম ছিলেন বলে দাবি করা হয় কোন কোন রিপোর্টে।

অনেকের বিশ্বাস, সাদ্দাম হোসেনের শাসনামলেই আল বাগদাদি জঙ্গি জিহাদীতে পরিণত হয়েছিলেন। তবে অন্য অনেকের ধারণা, যখন তাকে দক্ষিণ ইরাকে একটি মার্কিন সামরিক ক্যাম্পে চার বছর আটকে রাখা হয়েছিল তখনই আসলে আল বাগদাদি জঙ্গিবাদে দীক্ষা নেন। এই ক্যাম্পে অনেক আল কায়েদা কমান্ডারকে বন্দী রাখা হয়েছিল। আল বাগদাদি পরে ইরাকে আল কায়েদার নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। পরে অবশ্য ইরাকের আল কায়েদা নিজেদেরকে ২০১০ সালে ‘ইসলামিক স্টেট অব ইরাক এন্ড লেভান্ট’ বলে ঘোষণা করে।

## শহীদ

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.