--- বিজ্ঞাপন ---

পাকিস্তানের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি রুখতে স্মার্টফোন, ফেসবুক নিষিদ্ধ করল ভারতীয় নৌসেনা

সেনা প্রধানের প্রমোশন

0

পাকিস্তানের হয়ে গোয়েন্দাগিরির ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর কড়া পদক্ষেপ করল ভারতীয় নৌসেনা। নৌঘাঁটি হোক বা নৌবহর কোনও জায়গাতেই আর স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবেন না নৌসেনারা। নিষিদ্ধ করা হয়েছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপের মতো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপও। নিরাপত্তার কারণে এবং চরবৃত্তি রুখতে এমন পদক্ষেপ বলেই নৌসেনা সূত্রের বরাত দিয়ে কলকাতার আনন্দবাজার অনলাইন পত্রিকা ৩০ ডিসেম্বর এ খবর প্রকাশ করে ।

পত্রিকাটি জানায়, গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গত ২০ ডিসেম্বর বিশাখাপত্তপনম, মুম্বাই এবং কর্নাটকের কারওয়ার থেকে সাত ভারতীয় নৌসেনাকে গ্রেফতার করেছিল অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশ। ‘হানি ট্র্যাপ’-এর শিকার হয়ে পাকিস্তানে তথ্য পাচারের অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। ওই সাত জন ছাড়াও  হাওয়ালা কারবারের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় বিশাখাপত্তনমের এক ব্যবসায়ীকেও।

অপারেশন ‘ডলফিন নোজ’নামে ওই তদন্তের সঙ্গে যুক্ত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা জানান, ধৃত সাত নৌসেনা ২০১৭-তে নাবিক হিসেবে বাহিনীতে যোগ দেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ,  বাহিনীর নিয়ম ভেঙে ফেসবুকে অন্য নামে অ্যাকাউন্ট খোলেন তাঁরা। ২০১৮-তে ফেসবুকের মাধ্যমেই এক মহিলার সঙ্গে আলাপ হয় তাঁদের। সেখান থেকে ঘনিষ্ঠতা বেড়ে ওঠে। পরে জানা যায়, এক জন নন, তিন জন মহিলা এই ঘটনায় যুক্ত। তাঁরা নৌসেনাদের ব্ল্যাকমেল করে নৌবাহিনীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নিয়েছেন।

সেনাবাহিনীতে হানি ট্র্যাপ-এর ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। কিন্তু ভারতীয় নৌসেনায় এমন ঘটনা যথেষ্ট চিন্তায় ফেলে বাহিনীর শীর্ষ মহলকে। এমন ঘটনা আটকাতে তড়িঘড়ি স্মার্টফোন ও সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল।

অবসরে যাওয়ার একদিন আগে নতুন পদে বিপিন রাওয়াত

এদিকে ভারতের পত্রিকায় ৩০ ডিসেম্বর প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, দেশের প্রথম ‘চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ’ (সিডিএস) হলেন সেনাপ্রধান হলেন বিপিন রাওয়াত। তাঁর অবসরের এক দিন আগে এই ঘোষণা করল এল সরকারের তরফ থেকে। ফলে আরও তিন বছর এই পদে কাজ করার পর এই পদ থেকে অবসর নেবেন তিনি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সেনা বিষয়ক দফতরের প্রধান হচ্ছেন তিনি। সেনার তিন বাহিনীর কাজে সমন্বয়ের জন্য গত ২৪ ডিসেম্বর এই পদের ঘোষণা করে ভারতের কেন্দ্র সরকার। তখন থেকেই জল্পনায় ছিল এই সেনাপ্রধানের নাম। বিতর্কিত এ সেনাপ্রধান সম্প্রতি ভারতের  সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে মুসলিম বিরোধী নানা রাজনৈতিক মন্তব্য করে সেদেশের সেনাবাহিনীর আচরণবিধি লংঘন করেছেন। এ মর্মে কেরালার কংগ্রেস এমপি টিএন প্রথাপন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নিকট এক পত্রে তাকে সেনা প্রধানের পদ থেকে বাদ দেয়ার দাবী জানিয়েছিলেন দুদিন আগে। ভারতের দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকা এ খবর দেয়। এ পদোন্নতির মধ্য দিয়ে মোদী সরকার তার মেয়াদ বাড়িয়ে তাকে পুরস্কৃত করলেন।

সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংযোগ রক্ষাকারী ‘সিঙ্গল পয়েন্ট অ্যাডভাইজর’ হলেন বিপিন রাওয়াত। সরকারকে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে সমস্ত পরামর্শও দেবেন ‘চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ’। সশস্ত্র বাহিনীর  তিন বাহিনীর সমন্বয় বাড়ানো এবং তিন বাহিনীর পরামর্শদাতা নিয়োগের দাবি উঠছিল সেনা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত নানা মহল থেকে। অবশেষে সেই দাবিই পূরণ হল।

১৯৯৯-এর কার্গিল যুদ্ধে ভারতীয় স্থলসেনা বাহিনী, বায়ুসেনা ও নৌ সেনার পারদর্শিতা খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠিত হয়েছিল। সেই কমিটিই প্রথম তিন বাহিনীর উপদেষ্টার এই সুপারিশ করেছিল। এ বছর স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রথম এই পদের ঘোষণা করেন। তার পর থেকেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে তৎপরতা শুরু হয় বলে ভারতীয় পত্রিকা জানায়। অবশেষে ২৪ ডিসেম্বর এই পদাধিকারীর দায়িত্ব-কর্তব্য নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। তাতে বলা হয়েছিল, সেনার যে কোনও বাহিনীর ‘ফোর স্টার’ ক্যাটেগরির অফিসারকে নিয়োগ করা হবে।

সেনার তিন বাহিনীর শীর্ষ পদাধিকারীদের অবসরের বয়স ৬২ বছর। সে ক্ষেত্রে নতুন এই পদে অবসরের বয়স বাড়িয়ে করা হয়েছে ৬৫ বছর। অর্থাৎ সেনাবাহিনী থেকে অবসরের পর এই পদে দায়িত্ব নিলে আরও তিন বছর চাকরির মেয়াদ বেড়ে যাবে। তবে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, এই পদে সর্বোচ্চ তিন বছর চাকরি করতে পারবেন কোনও সেনা অফিসার । অর্থাৎ তিন বছর কাজ করা বা ৬৫ বছর বয়স, যেটা আগে হবে, সেটাই হবে এই পদে চাকরি থেকে অবসরের সময়।

শিমলার সেন্ট এডওয়ার্ড স্কুলে পড়াশোনা করেছেন বিপিন রাওয়াত। এরপর খড়কভাসলার ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি এবং দেহরাদূনে ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমির প্রাক্তন ছাত্র বিপিন রাওয়াত গোর্খা রেজিমেন্টে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিন বছর কাজ করার পর ৩১ ডিসেম্বর তাঁর অবসর নেওয়ার কথা ছিল তাঁর।### ৩০.১২.১৯

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.