--- বিজ্ঞাপন ---

ট্রাম্পের সুর নরম, ইরানের নজর মধ্যপ্রাচ্যের আমেরিকান ঘাটিগুলোর দিকে

0

সম্ভবত আমেরিকাতেই জনসমর্থন পাচ্ছেন না ডোনাল্ট ট্রাম্প। তা নাহলে কোন প্রকার শর্ত ছাড়াই ইরানের সাথে আলোচনায় বসতে রাজী হয়েছে আমেরিকা। ইরানের এক সোলাইমানির বদলে ৯৭ জন মার্কিন সেনা প্রান হারিয়েছে বলে ইরানী গণমাধ্যমে প্রকাশ। যদিও আমেরিকা তা মানতে নারাজ। কিন্ত কিছু একটা না হলে আমেরিকা কেন সুর নরম করবে তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। এরই মধ্যে রাশিয়া সাপোর্ট দিয়েছে ইরানকে। অন্যদিকে খোদ আমেরিকান প্রশাসন থেকে ট্রাম্পকে বলা হয়েছে, আরেকটি উপ-সাগরীয় যুদ্ধ সামলানোর মতো অর্থ আমেরিকার নেই।

জানা গেছে, ট্রাম্প চেয়েছিলেন ইরানকে ব্যবহার করে মধ্যেপ্রাচ্যে অস্থিরতা তৈরি করতে। যাতে ইরানের সাথে সৌদিআরবসহ আমেরিকান মিত্রদের যুদ্ধ লেগে যায়। বর্তমানে কাতার, সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে আমেরিকার ২১টি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। এ থেকেই এ অঞ্চলে তাদের ব্যাপক সামরিক উপস্থিতির বিষয়টি উপলব্ধি করা যায়। এ অঞ্চলে মার্কিন স্বার্থ রক্ষায় এসব ঘাঁটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে এই ছয়টি দেশের মধ্যে শুধু কুয়েতেই রয়েছে আমেরিকার ছয়টি সামরিক ঘাঁটি। ইরাকে আগ্রাসন চালানোসহ এ অঞ্চলে আধিপত্য বজায় রাখার জন্য এসব ঘাঁটি ব্যবহার করে আমেরিকা।

এ ছাড়া অধিকৃত ফিলিস্তিন অর্থাৎ ইসরাইলেও আমেরিকার ছয়টি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। দখলদার ইসরাইল ও আমেরিকার মধ্যে সমঝোতা অনুযায়ী সেখানে সংরক্ষিত আমেরিকার অস্ত্রশস্ত্র প্রয়োজনে ইসরাইলও ব্যবহার করত পারবে।

এসব ঘাটি ব্যবহার করে ইরানে হামলার ছক কষেছিলেন ট্রাম্প। এখন হয়েছে উল্টোটা। এসব ঘাট থেকে বিদেশী সৈন্যরা তাদের দেশে চলে যেতে শুরু করেছে। কারন ইরাকের আমেরিকান ঘাটিতে ইরানের ক্ষেপনাস্ত্র হামলার প্রমান পেয়েছে আমেরিকা। ইরান ইতিমধ্যে হুশিয়ারী দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে থাকা আমেরিকার ঘাটিগুলো লক্ষ্য করে ইরান এরই মধ্যে ক্ষেপনাস্ত্র প্রস্তত করে রেখেছে।

এরই মধ্যে সুর নরম করে ফেলেছেন ট্রাম্প। বিবিসি’র খবরে প্রকাশ, যুক্তরাষ্ট্র বলছে তারা ইরানের সাথে কোন শর্ত ছাড়াই আলোচনা করতে প্রস্তুত আছে। জাতিসংঘে দেয়া এক চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্র কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার যুক্তি তুলে বলেছে নিজেদের রক্ষা করার জন্যই এ কাজ করা হয়েছে। সোলেইমানি হত্যার জবাবে গত মঙ্গলবার ইরাকে অবস্থিত দুটি মার্কিন ঘাঁটিতে একের পর এক মিসাইল হামলা চালিয়েছে ইরান। যদিও এতে আমেরিকান সৈন্যদের কোন ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে।

ইরানও জাতিসংঘে বলেছে যে নিজেদের রক্ষার জন্যই এ মিসাইল হামলা চালানো হয়েছে।চিঠিতে কী বলা হয়েছে? জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে দেয়া এক চিঠিতে জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেলি ক্র্যাফট বলেছেন, ইরানের দ্বারা আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা যাতে হুমকির মুখে না পড়ে এবং উত্তেজনা যাতে বৃদ্ধি না পায় সেজন্য যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা করতে তৈরি আছে।

যুক্তরাষ্ট্রের চিঠিতে বলা হয়, সোলেইমানি হত্যাকাণ্ড সঠিক পদক্ষেপ ছিল। জাতিসংঘ সনদের ৫১ ধারায় বলা হয়েছে, কোন রাষ্ট্র যদি নিজেদের রক্ষার জন্য পদক্ষেপ নেয় তাহলে সেটি দ্রুত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে অবহিত করতে হবে।

চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের সৈন্য এবং স্বার্থ রক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজন অনুযায়ী অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেবে। অন্যদিকে জাতিসংঘ সনদের ৫১ ধারা উল্লেখ করে ইরানও চিঠির মাধ্যমে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে। জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত মাজিদ তখত রাভানচি এক চিঠিতে জানিয়েছেন, ইরান কোন যুদ্ধ কিংবা উত্তেজনা বাড়াতে চায়না। মার্কিন ঘাঁটিতে সুনির্দিষ্ট এবং যথাযথ সামরিক পদক্ষেপের মাধ্যমে ইরান আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত।

” এই অভিযান ছিল সুনির্দিষ্ট সামরিক পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে সামরিক ছাড়া কোন বেসামরিক মানুষ এবং তাদের সম্পদের কোন ক্ষতি হয়নি,” চিঠিতে জানিয়েছেন ইরানের রাষ্ট্রদূত।###৯.১.২০২০

 

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.