--- বিজ্ঞাপন ---

তুরস্কের বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ‘টিসিজি আন্দালু’ পাল্টে দিবে যুদ্ধক্ষেত্র

0

মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম: এবছরই মুসলিম দেশগুলির মধ্যে প্রযুক্তিতে এগিয়ে থাকা দেশ তুরস্ক সেদেশের নৌ বাহিনীতে যুক্ত করতে যাচ্ছে বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ‘টিসিজি আন্দালু’ । আর এটি যুক্ত হলে সেদেশের দূরবর্তী স্থানে অভিযান পরিচালনার ক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। দেশটির নৌ বাহিনীর চেহারাই পাল্টে যাবে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ম্যাগাজিন ফোর্বস ১৬ মে শনিবার (২০২০ইং) তুর্কী বাহিনীর উপর বিশেষ প্রতিবেদনে এ বিষয়ে আলোকপাত করেছে। ম্যাগাজিনটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে তুরস্ক এককভাবে লিবিয়ায় প্রতিপক্ষ ৫টি দেশের মিলিত শক্তির বিরুদ্ধে লড়ছে ( ফ্রান্স, গ্রীস, সাইপ্রাস, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর ) ও সিরিয়ায় অভিযানে লিপ্ত রয়েছে।

এই নতুন বিমানবাহী জাহাজ টিসিজি আন্দালু নৌ বাহিনীতে যুক্ত হলে তুরস্কের দূর দূরান্তে অভিযান পরিচালনার ক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে সন্দেহ নেই। হালকা শ্রেণীর এই বিমানবাহী জাহাজে মার্কিন এফ-৩৫ স্টিলথ জঙ্গী বোমারু বিমান মোতায়েন করার কথা ছিল। কিন্তু সম্প্রতি রাশিয়া থেকে এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স ক্ষেপণাস্ত্র ক্রয় করায় যুক্তরাষ্ট্র তুরস্ককে তার প্রাপ্য ১০০টি এফ-৩৫ রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম বিমান সরবরাহ চুক্তি একপ্রকার বাতিল করে দেয়। তবে তুরস্ক ঐ বিমানের পরিবর্তে বিমানবাহী জাহাজটিতে সেদেশে তৈরী  টি- ১২৯ এ্যাটাক হেলিকপ্টার গানশিপ ও এস-৭০ সী হক সাবমেরিন বিধ্বংসী হেলিকপ্টার বহন করতে পারবে। তাছাড়া বিমানবাহী জাহাজটিতে ৫০টি ট্যাংক, স্বল্প রানওয়েতে উড্ডয়নে সক্ষম ৭ টি এফ-৩৫ জঙ্গী বিমান, ১০টি হেলিকপ্টার ও মনুষ্যবিহীন ড্রোন, ২৭টি উভচর যান, ৬টি আমর্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার ও ১,৪২৩ সৈন্য বহনে সক্ষম। জাহাজটিতে ফিল্ড হাসপাতালও রয়েছে। ২৩১ মিটার লম্বা ও ৩২ মিটার প্রশ্বস্ত যুদ্ধজাহাজটি কোনপ্রকার পুন: জ্বালানি না নিয়েই  একটানা ১৪,৫০০ কিলোমিটার ( ৯,০০০ মাইল ) পাড়ি দিতে সক্ষম। ২৭ হাজার টন ক্ষমতার যুদ্ধজাহাজ আন্দালু তুরস্কের ইস্তানবুলের সেডেফ শিপইয়ার্ডে নির্মাণ কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে। সব মিলিয়ে এটি হচ্ছে বিশ্বের অন্যতম অত্যাধুনিক এই শ্রেণীর বিমানবাহী জাহাজগুলোর একটি। তুরস্কের ২য় বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ‘টিসিজি ট্রাকিয়া’র  নির্মাণ কাজও পরিকল্পনামাফিক এগিয়েছে বলে বলছেন সামরিক মহল।

সামরিক পর্যবেক্ষক মহলের কেউ কেউ বলছেন, বর্তমান তুরস্কের লৌহমানব রেসিপ তায়িফ এরদোয়ান তুরস্ককে তার  উসমানী খেলাফতের আমলের সাম্রাজ্যের হারানো গৌরব ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে দেশটিকে উন্নীত করতে বন্ধপরিকর। আজকের গ্রীস, বুলগেরিয়া,হাঙ্গেরী থেকে শুরু করে আফ্রিকার লিবিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল বিশাল তুর্কী সাম্রাজ্য। ১৯১৪ সালে ১ম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে জার্মানীর পক্ষ নেয় তুরস্ক।  বৃটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া প্রভৃতি দেশের মিত্রশক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধে জার্মানদের সাথে  তুরস্কও হেরে যায়।এবং আস্তে আস্তে তুর্কী সাম্রাজ্য মিত্র শক্তির চাপে হারাতে বাধ্য হয়। বর্তমান এরদোয়ানের নেতৃত্বে আধুনিক তুরস্ক পশ্চিমা দেশগুলির উপর নির্ভরশীল না হয়ে স্বয়ঙসর্ম্পূর্ন হতে দ্রুত এগিয়ে চলেছে। সাম্প্রতিককালে সিরিয়া ও লিবিয়ায় তুরস্কের তৈরী মনুষ্যবিহীন আক্রমণকারী সশস্ত্র ড্রোন গোটা যুদ্ধ পরিস্থিতিকে পাল্টে দিতে সক্ষম হয়েছে যা সামরিক দুনিয়ার সাম্প্রতিক সময়ের এক আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়।

##

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.