--- বিজ্ঞাপন ---

করোনায় গোটা বিশ্বের কাছে অভিযুক্ত চীন

0

করোনায় গোটা বিশ্বের কাছে অভিযুক্ত চীন। তার উপর নিজের দেশেই উইঘুর মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজনের কাছে নতুন করে মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাড়িঁয়েছে চীন।

একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্টে প্রকাশিত তথ্যে জানা গেছে, চীনের সংখ্যালঘু মুসলিম এবং চীনের পশ্চিমাঞ্চলের উইঘুর সম্প্রদায়ের মুসলিমদের বিষেশত মহিলাদের জন্ম নিয়ন্ত্রণের উপর চাপ সৃষ্টি করছে কর্তৃত্ববাদী চীনা সরকার।

চীনে মুসলিমদের উপর অত্যাচারের ঘটনা নতুন কিছু নয়। এর আগেও বহুবার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের দ্বারা চীনা মুসলিমদের উপর নিদারুণ অত্যাচারের বিষয় প্রকাশ্যে এসেছে। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। এই বিষয়ে চীনকে সতর্কও করেছে বিট্রেন আমেরিকাও।

তবে ফের উইঘুর সম্প্রদায়ের মহিলাদের উপর চীনা সরকারের অত্যাচারের কাহিনী প্রকাশ্যে আসতেই হই চই পড়ে গিয়েছে দুনিয়া জুড়ে। যদিও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত এই তথ্যকে অসত্য বলে দাবি করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এই বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে গোটা বিষয়টিকে ‘ফেক নিউজ’ বলে এড়িয়ে যান তিনি।

যদিও মার্কিন তদন্তকারী সংস্থার দাবি, চীনের ‘এক সন্তান’ নীতির ফলে উইঘুর মুসলিম মহিলাদের ভয় দেখানো হচ্ছে। কেউ একের বেশি সন্তান নেয়ার চেষ্টা করলে তাকে বিভিন্ন রকম হুমকি, জরিমানা এবং সারাজীবন হাজতবাসের ভয় দেখানো হচ্ছে। শুধু তাই নয়, চীনে এক সন্তান নীতি কার্যকর করতে উইঘুরসহ সংখ্যালঘু মুসলিম নারীদের উপর নজর রাখা হচ্ছে। এমনকি তারা অন্তঃসত্ত্বা কিনা? তা জানতে টেস্টও করা হচ্ছে। আর কেউ গর্ভাবস্থায় ধরা পড়লে তার ভ্রূণ নষ্ট করে দেয়াসহ বিভিন্ন ধরনের শাস্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

আর চীনের এই আচরণ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে সব মহলেই। চীনা সরকারের এমন অমানবিক কাজকে বিশেষজ্ঞরা ‘পরিকল্পিত গণহত্যা’ বলে দাবি করেছেন।

শুধু তাই নয়, গোটা চীনে এক সন্তান নীতি পুরোদমে কার্যকর করতে প্রতিদিন অন্তত এক হাজার মহিলার ভ্রূণ হত্যা করা হচ্ছে। এমনকি বাড়ি বাড়ি পুলিশ পাঠিয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে কারও এক বা দুইয়ের বেশি সন্তান রয়েছে কিনা, এছাড়াও কেউ দুইয়ের বেশি সন্তান লুকিয়ে রেখেছে কিনা। আর কেউ যদি ধরা পড়ে যায় তাহলে তাকে দিতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা অথবা খাটতে হবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

চীনের পশ্চিমাঞ্চল শিংজিয়াং প্রদেশে বসবাসকারী এই উইঘুর সম্প্রদায়ের মুসলিমদের জীবনে গত তিন চার বছর ধরে নেমে এসেছে এমনই অদ্ভুত খাড়া। যা অমান্য করলে বা ধরা পড়লে রয়েছে কঠোর শাস্তির বিধান।
চীন সরকারের এই নীতির তীব্র সমালোচনা করেছে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহলগুলিও। তবু পিছু হটতে নারাজ চীন।

চীনা বংশোদ্ভূত উইঘুর মুসলিম ওমিরযখ জানিয়েছেন, তার তৃতীয় সন্তান জন্মানোর আগে তার স্ত্রীকে ভ্রূণ হত্যা করানোর চাপ দেয়া হয়েছিলো এছাড়াও একের বেশি সন্তান নেয়ার অপরাধে তাকে তিন বছর জেলে থাকতে হয়েছিল। আর গত বছর জেল থেকে পালিয়ে আসার পর সরকার তাকে ২.৬৮৫ ডলার জরিমানা করে।

শুধু তাই নয়, সরকারের অত্যাচারের ভয়ে প্রতিদিন প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ মহিলা শিংজিয়াং প্রদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে গর্ভপাত করাতে যান বলে জানা গিয়েছে। আর এই চিত্রটা শুধু উইঘুরদের জন্য নয় কর্তৃত্ববাদী চীনা প্রেসিডেন্ট এক সন্তান ধারনের বিধান সকল চীনা নাগরিকদের জন্য জারি করেছেন। যার ফলে ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত উইগুর সম্প্রদায়ের মধ্যে জন্ম নিয়ন্ত্রনের হার গিয়ে ঠেকেছে ৬০ শতাংশে। চীনা সরকারের অদ্ভুত নীতির ফলে তা আরও তলানিতে চলে যেতে পারে বলে অনুমান বিশেষজ্ঞদের।

তবে যেকোনও রাষ্ট্র ব্যবস্থায় শাসক শ্রেণীর সমাজের গরীব, সংখ্যালঘু অসহায়দের উপর অত্যাচার এবং নিপীড়নের ছবিই বেশি ধরা পড়ে। যার ফলে আজও চীনা উইঘুরদের মতো সমাজের অবহেলিত মানুষদের কথা বার বার উঠে আসে সংবাদ মাধ্যমগুলিতে। এখন দেখার বিষয়, ‘এক সন্তান নীতিতে’ চীন কোনদিকে যায়।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.