--- বিজ্ঞাপন ---

ট্রাম্প কি একের পর এক ট্রাম্প মেরে যাচ্ছেন!!

0

কাজী ফেরদৌস##

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কি একের পর এক ট্রাম্প মেরে যাচ্ছেন। নির্বাচনের আগে আরবআমিরাত, বাহরাইন এমনকি সৌদি আরব কে দিয়ে ইসরায়েলের স্বীকৃতি আদায় করে নিয়েছেন। বিশ্ব ইহুদি সংঘ খুশিতে এখন উদ্বেল। এখন তাঁর জন্য মানি ইজ নো প্রবলেম! ইহুদি ধনকুবের, আরবের শেখ সবাই প্রস্তুত। মোদি, পুতিন, নেতানিয়াহু আরবের শেখরা ট্রাম্প কে জেতানোর জন্য একজোট হয়েছে।আমেরিকার সংখ্যা গরিষ্ঠ এভান্জেলিক খৃষ্টান জনগোষ্ঠী ও বর্নবাদীরা ও চায় ট্রাম্প এর পুনঃনির্বাচন। ভাগ্য তার সুপ্রসন্ন বলতে হবে।

ট্রম্প পুননির্বাচিত হলে অবাক হবনা মোটেই।  এরই মাঝে হঠাৎ মারা গেলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারক গিন্সবার্গ। এখন তড়িঘড়ি করে সেই শুন্য পদ পুরণ করতে চান ট্রাম্প । উদ্দেশ্য একটাই- সর্বোচ্চ আদালতে রক্ষণশীলদের পাল্লা আরো ভারি করা।কারণ আগামী নির্বাচনের ফলাফল দু’হাজার সালে বুশের নির্বাচনের মত আদালত পর্যন্ত গড়ানোর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছ ইতিমধ্যে পোস্টাল ব্যালটের বিতর্কের কারণে।এদিকে গোয়েন্দা সংস্থা গুলো নির্বাচন নিয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপের আশংকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। একিই সাথে ট্রাম্প মহাশয় ঘোষণা দিয়েছেন তাঁর নির্বাচনে হেরে যাওয়ার নাকি প্রশ্নই আসে না!বুঝতে অসুবিধা হয়না নির্বাচনের ফলাফল তাঁর বিপক্ষে গেলে তিনি কারচুপির অভিযোগ তুলে সেটা প্রত্যাখান করতে পারেন যেটা আমেরিকার নির্বাচনের ইতিহাসে এক অচিন্তনীয় ঘটনার জন্ম দিতে পারে।

দু’হাজার সালে সুপ্রিম কোর্টের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে বুশের নির্বাচন তাঁর প্রতিদ্বন্ধী অতি ভদ্রলোক আলগোর আমেরিকার গনতন্ত্রের মর্যাদা রক্ষার খাতিরে মেনে নিলেও এবার সেরকম কোন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত মেনে নেবেনা বলে আগাম ঘোষণা দিয়েছেন ডেমোক্রেটিক দল। হিলারি ক্লিনটন ইতিমধ্যে জো বাইডেন কে এ ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন যেন আলগোর এর মত ভুল না করেন এবং কিছুতেই যেন আদালতের কোন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত মেনে না নেন। ট্রাম্পের রিপাবলিকান দল ও মানাবে না। একধরনের সংঘাতময় মুখোমুখি অবস্থান! ইতিমধ্যেই পোস্টাল ব্যালট নিয়ে এক ধরনের শংকা তৈরি হয়ে গেছে বিশেষ করে পোষ্টাল ব্যালট সম্পর্কে ট্রাম্পের আগাম মন্তব্য এবং এটা কে বাধাগ্রস্ত করার তাঁর যত অপচেষ্টার কারণে। ট্রাম্পের ধারণা এবার বেশির ভাগ মানুষ করোনার কারনে ব্যাপক হারে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেবে এবং সেই কারণে ভাট প্রদান অন্যান্য বারের চেয়ে বেশি হবে। তাঁর আশংকা ভোট যত বেশি পড়বে তাঁর ভরাডুবির আশংকা ও তত বাড়বে। একারণে তিনি শুরু থেকেই পোস্টাল ব্যালটকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। এখানেই ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে এক ধরনের শংকা তৈরি হয়েছে। এত ব্যাপক সংখ্যার পোস্টাল ব্যালট সময় মত পৌঁছবে কিনা এবং সঠিক ভাবে গননা হবে কিনা সেটা নিয়ে একধরনের সংশয় সৃষ্টি হয়েছে যেটা  দু ‘হাজার সালে ফিলাডেলফিয়া অঙ্গ রাজ্যের ভোট গননা নিয়ে হয়েছিল। সেই ভোটে বুশ ফিলাডেলফিয়ায় মাত্র তিনশ ভোটের ব্যববধানে জিতেছিলেন ফিলাডেলফিয়ায়। সময় মতো না আসার অজুহাতে অনেক পোস্টাল ভোট গননা হয়নি। আল গোরের পুনঃ গণনার আবেদন সুপ্রিম কোর্ট নাকচ করে দেন আমেরিকার গনতন্ত্রের মর্যাদা রক্ষার কথা বলে। অথচ ফিলাডেলফিয়ার ভোট পুনঃ গননা হলে ফিলাডেলফিয়ার সবগুলো ইলেকট্রোল কলেজ ভোট আলগোরের পক্ষে আসার সম্ভাবনা ছিল এবং সেই ক্ষেত্রে তিনিই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবার সম্ভাবনা ছিল ।ইতিপূর্বে বুথ ফেরত ফলাফল ও সেই পূর্বাভাস দিচ্ছিল।
সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে মনে হচ্ছে আমেরিকার এবারের প্রসিডেন্ট নির্বাচন মার্কিন ইতিহাসের অন্যতম একটি বিতর্কিত নির্বাচন হতে যাচ্ছে এবং নির্বাচনের ফলাফল সঠিক সময়ে ঘোষণা করা যাবে কিনা নাকি সুদীর্ঘ আইনী লড়াইয়ের গ্যাড়াকলে আটকে গিয়ে শেষ পর্যন্ত ভন্ডুল হয়ে এক অনিশ্চিত অবস্থার সৃষ্টি করে এনিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্হ আমেরিকার সচেতন মহল।এধরণের একটা অনভিপ্রেত পরিস্থিতি মার্কিন গনতান্ত্রিক ব্যবস্হার মর্মমূলে চরম আঘাত হানতে পারে।
মনে হচ্ছে একবিংশ শতাব্দী আমেরিকার গনতন্ত্রের জন্য একটা নুতন চ্যালেঞ্জ নিয়ে হাজির হয়েছে। দেখাযাক আমেরিকার মানুষ কোন পক্ষে যায়! বহুত্তবাদী গনতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা নাকি শেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ত্ববাদী কর্তৃত্ববাদী অসহনশীলতার দিকে?
আমেরিকার গনতন্ত্রের জন্য এবারের প্রসিডেন্ট নির্বাচন যেন একটা বড় এ্যাসিড টেস্ট! সফলভাবে আমেরিকার জনগণ এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারবে তো?###২২.৯.২০

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.