যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার জন্য চীনকে দায়ী করে বক্তব্য দেয়ার পর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের মধ্যে চলমান উত্তেজনা সামনে চলে এসেছে।
বিশ্বে মহামারি ছড়িয়ে পড়ার জন্য চীনের জবাবদিহি চেয়েছেন ট্রাম্প। চীনের প্রেসিডেন্ট শী জিনপিং তার বক্তব্যে বলেছেন, কোন দেশের সঙ্গে স্নায়ু যুদ্ধে জড়ানোর ইচ্ছা নেই তার দেশের।
বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে এই দুই বিশ্ব শক্তির মধ্যে বিরোধ চলছে। নিউইয়র্কে এই বছরের জাতিসংঘের সম্মেলন মূলত ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেখানে বিশ্ব নেতারা আগে থেকে রেকর্ড করে রাখা বক্তব্য সরবরাহ করেছেন। এর ফলে জাতিসংঘের বড় অধিবেশনগুলোয় ভূ-রাজনৈতিক যেসব চিত্র বা ঘটনা দেখা যায়, তা এবার অনুপস্থিত। প্রতিটি সদস্য দেশের একজন করে প্রতিনিধি অধিবেশনে প্রতিনিধিত্ব করছেন। ফলে এক দেশের সঙ্গ অন্য দেশের বাকযুদ্ধের সীমিত সুযোগ রয়েছে। তবে বরাবরের মতোই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতিসংঘ অধিবেশনে তার বক্তব্যে নিজের সাফল্য তুলে ধরার পাশাপাশি প্রতিপক্ষের প্রতি বিষোদগার করেছেন।
”চীন – বিশ্বে যে এই মহামারি ছড়িয়ে দিয়েছে, আমাদের অবশ্যই সেই জাতিকে জবাবদিহি করতে হবে,” বক্তব্যে বলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ”ভাইরাস শুরুর প্রথম দিকে চীন স্থানীয়ভাবে ভ্রমণ বন্ধ করে দিয়েছে, অথচ চীন থেকে ফ্লাইট চলাচল চালু রেখে বিশ্বকে সংক্রমিত করেছে। এমনকি যখন তারা দেশের ভেতর ফ্লাইট বাতিল করেছে এবং নাগরিকদের ঘরের ভেতর আটকে রেখেছে, তখনো তারা তাদের দেশে আমার ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেছে।” বলেছেন ট্রাম্প।
করোনাভাইরাস মোকাবেলা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনের সামনে নিজেই চাপের মধ্যে থাকা ডোনাল্ড ট্রাম্প এর মধ্যেই কয়েকবার বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ তুলে বলেছেন, তারা ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে পারতো। তবে এসব বক্তব্যকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে চীন।
করোনাভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়ে গেছে, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। বাণিজ্য, প্রযুক্তি, হংকং এবং জিনজিয়ান প্রদেশে মুসলমানদের ওপর নিপীড়নের ঘটানর মতো বেশে কিছু বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনে মধ্যে উত্তেজনা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র নেতার পরে দেয়া বক্তব্যে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ‘সভ্যতার সংঘাতের’ ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন।
সংলাপ এবং আলোচনার মাধ্যমে অন্যান্য দেশের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য এবং বিরোধ নিষ্পত্তি করার চেষ্টা অব্যাহত রাখবো। আমরা কেবল নিজেদের উন্নয়ন করতে চাই না।” তিনি বলেছেন।
মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ভাষণের আগে প্রকাশ করা অংশে দেখা যাচ্ছে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর এক চোট নিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ”কোন দেশের অধিকার নেই বৈশ্বিক বিষয়গুলোকে প্রভাবিত করার, অন্যদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা অথবা শুধু নিজের উন্নয়নের জন্য সুবিধা নেয়ার।” যদিও চীনের বিরুদ্ধেও এসব সমালোচনা রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট শি তার ভাষণে আরো বলেছেন যে চীন- যে দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গতকারী- ২০৩০ সালের মধ্যে গ্যাস নির্গমন কমিয়ে আনা আর ২০৬০ সালে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছেন। #বিবিসি