--- বিজ্ঞাপন ---

হিন্দু রাষ্ট্র তৈরির স্বপ্ন দেখছে ভারত, ইরান সন্ত্রাসী রাষ্ট্র

জাতিসংঘের ভাষণে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও সৌদি বাদশাহ সালমান

0

বিশেষ প্রতিবেদন##

করোনা মহামারির কারনে জাতিসংঘের রেকর্ড করা ভাষণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বক্তব্য ক্ষুদ্ধ ভারত। ভারতকে উদ্দেশ করে ইমরান খান বলেছেন, ‘গাঁধী-নেহরুর ধর্মনিরপেক্ষতার বদলে এখন এসেছে হিন্দু রাষ্ট্র তৈরির স্বপ্ন। যেখানে লক্ষ্য হল, মুসলিম ও অন্য সংখ্যালঘুদের শাসন করা, এমনকি মুছে ফেলা।’’ অন্যদিকে আরেক ভাষণে ইরানের উপর তোপ দাগান সৌদিআরবের বাদশাহ সালমান। ইরানকে শক্ররাষ্ট্র চিহ্নিত করে সালমান বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি একটি ‘চরমপন্থি এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী’ শক্তি’।

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এবছর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সদস্যদেশগুলোর নেতাদের ভাষণ আগে থেকেই রেকর্ড করা হয়েছিল। বুধবার সাধারণ পরিষদের হলে সেই ভাষণের ভিডিও সম্প্রচার করা হয়।ভারতের আনন্দবাজার উল্লেখ করে, ইমরান বলেছেন, ‘‘নাৎসিদের বিদ্বেষের লক্ষ্য ছিলেন ইহুদিরা। আরএসএসের নিশানা মুসলিমরা। খ্রিস্টানদের ক্ষেত্রে কিছুটা কম। গাঁধী-নেহরুর ধর্মনিরপেক্ষতার বদলে এখন এসেছে হিন্দু রাষ্ট্র তৈরির স্বপ্ন। যেখানে লক্ষ্য হল, মুসলিম ও অন্য সংখ্যালঘুদের শাসন করা, এমনকি মুছে ফেলা।’’ ইমরানের অভিযোগ, দিল্লির সংঘর্ষে নিশানা করে মারা হয় মুসলিমদের। গুজরাত দাঙ্গায় সংখ্যালঘুদের নিহত হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘এটা হয়েছিল (তৎকালীন) মুখ্যমন্ত্রী মোদীর শাসনে।’’ ইমরানের বক্তব্য, অভূতপূর্ব ভাবে ‘হিন্দুত্বের আদর্শে’ ৩০ কোটি মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখেদের নির্যাতন করা হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতিতেও মোদী সরকার বৈষম্যমূলক নীতি নিয়েছে বলে অভিযোগ করে তিনি জানান, ভারতে সংক্রমণ ছড়ানোর জন্য দায়ী করা হয়েছে মুসলিমদের। অথচ তাঁরা অনেক ক্ষেত্রে যথাযথ চিকিৎসা পাননি।বরাবরের মতো কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ ঘিরে বাহিনীর জুলুমের অভিযোগ তুলেছেন ইমরান। ‘মানবতা-বিরোধী অপরাধে’ ভারতের সামরিক-অসামরিক কর্তাদের বিচার চেয়েছেন। অভিযোগ করেছেন, কাশ্মীরের জনবিন্যাস পাল্টে দিতে চাইছে মোদী সরকার, যা যুদ্ধাপরাধের শামিল। তাঁর বক্তব্য, বিশ্বের নজর ঘোরাতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক সক্রিয়তা দেখিয়ে ‘বিপজ্জনক খেলা’ খেলছে ভারত। কিন্তু ‘ফ্যাসিস্ট আরএসএস নেতৃত্বাধীন’ ভারত সরকার ‘অপচেষ্টা’ করলে পাকিস্তানও লড়তে তৈরি।

অপরদিকে ইরানের উপর তোপ দাগান বাদশাহ সালমান। তাঁর উদ্বোধনী ভাষণে সালমান প্রথমে ত্রাণ এবং তহবিল সহায়তায় সৌদি আরবের অবদানের কথা তুলে ধরেন। এরপরই কড়া ভাষায় ইরানের সমালোচনা করেন। তিনি ইরানকে শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করেন। সালমান বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে দেশটি একটি ‘চরমপন্থি এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী’ শক্তি। , বিগত কয়েক দশক দরে ইরানে প্রতি সৌদি আরব ইতিবাচক এবং খোলা মন নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিল। ইরানের দিকে শান্তির হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু্ই হয়নি।”

সালমান অভিযোগ করে বলেন, গত ২০১৫ সালে ছয় শক্তিধর দেশের সঙ্গে যে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর করেছে তা ধংব্সাত্মক কাজে ব্যবহারের জন্য কাজে লাগিয়েছে। আগ্রাসী কর্মকাণ্ড বাড়িয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,, সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে এবং সন্ত্রাসবাদকে ব্যবহার করেছে- যা কেবল ‘বিশৃঙ্খলা, উগ্রবাদ আর সাম্প্রদায়িকতাই উস্কে দিয়েছে বলে বাদশাহ অভিযোগ করেন।, “ইরানের ব্যাপারে সবার অংশগ্রহণের ভিত্তিতে একটি সামগ্রিক সমাধান এবং সুদৃঢ় আন্তর্জাতিক অবস্থান প্রয়োজন।”

অনেকটা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সুরেই সৌদি বাদশাহ বলেন, “ইরানকে নিয়ে আমাদের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তাতে আমরা এ শিক্ষাই পেয়েছি যে, সংকটের আংশিক সমাধান কিংবা সম্প্রীতির পথে হেঁটে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তায় ইরানের হুমকি ঠেকানো যাবে না।”

ওদিকে, জাতিসংঘে ইরান মিশনের মুখপাত্র আলিরেজা মিরইউসেফি ইরানের বিরুদ্ধে এই সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। আলিরেজা বলেন, সৌদি নেতার এই অহেতুক এবং অযৌক্তিক ব্ক্তব্য আঞ্চলিক দেশগুলোর মধ্যে বিশৃঙ্খলা উস্কে দেওয়া, স্থায়ী বিভক্তির বীজ বপন করা এবং আরও প্রাণঘাতী অস্ত্র বিক্রির অভিসন্ধি থাকা শক্তিগুলোকেই কেবল উস্কে দেবে। সুন্নি-মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ সৌদি আরব এবং শিয়া-অধুষ্যিত ইরান মধ্যপ্রাচ্যে একাধিক ছায়া-যুদ্ধে লিপ্ত। এর মধ্যে ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে জড়িয়েছে দেশ দুটি। পাঁচ বছর ধরে চলে আসা এ যুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট ইরান-সমর্থিত হুতিদের সঙ্গে লড়ছে।### ২৬.৯.২০

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.