--- বিজ্ঞাপন ---

মিয়ানমারকে যুদ্ধ সাবমেরিন দিচ্ছে ভারত

0

আন্তর্জাতিক ডেস্ক##

ভারতের সাথে মিয়ানমারের সম্পর্ক ঠিক কি রকম তা বিশ্লেষকরা খুব একটা ধারনা করতে পারে নি এতদিন। কারন মিয়ানমারের সবকিছুতে জড়িয়ে আছে চীন। ভারতও মিয়ানমারকে তোয়াজ করে চলে। কেন এবং কি কারনে ঠিক বুঝে উঠা মুস্কিল। তবে মিয়ানমার কি চীনকে ফেলে ভারতের দিকে কখনো ঝুকবে। মনে হয় না। তারপরও মিয়ানমারের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে ভারত। আর এই সুসম্পর্কের কারনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারত বাংলাদেশের পক্ষ নেয় নি। মিয়ানমারকেও কিছু বলে নি। তবে এবার যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে ভারত ও মিয়ানমারের সামরিক সখ্যতা নিয়ে। কারন মিয়ানমারকে একটি যুদ্ধ সাবমেরিন দিচ্ছে ভারত। এর আগে ভারত মিয়ানমারকে নানা সামরিক সরঞ্জাম দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব নয়াদিল্লিতে সাপ্তাহিক সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র সংক্রান্ত সহযোগিতা আমাদের বৈচিত্র্যময় সম্পর্কের একটি অংশ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভারত মিয়ানমারের নৌবাহিনীকে কিলো ক্লাস সাবমেরিন আইএনএস “সিন্ধুবীর” দেবে।’ ১৯৮৮ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে এই সাবমেরিনটি সংগ্রহ করেছিল ভারত। অন্ধ্র প্রদেশের বিশাখাপত্তমের একটি শিপইয়ার্ডে এর সংস্কার কাজ চলছে।

ভারতের গণমাধ্যম বলছে, প্রতিবেশী মায়ানমারকে একটি সাবমেরিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার মাধ্যমে অংশীদারিত্ব মজবুত করার লক্ষ্যেই ভারত নৌবাহিনী বহর থেকে আইএনএস সিন্ধুবীরকে লিজ মারফৎ মায়ানমারকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতের এই গুরুত্বপূর্ণ রণনৈতিক সিদ্ধান্তর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব। তিনি জানিয়েছেন, সমুদ্রে সহযোগিতা মায়ানমারের সঙ্গে ভারতের বৈচিত্রময় ও বর্দ্ধিত সম্পর্কের অঙ্গ। এরই প্রেক্ষাপটে ভারত মায়ানমার নৌবাহিনীকে কিলো শ্রেণীর সাবমেরিন আইএনএস সিদ্ধুবীর সরবরাহ করছে। এই অঞ্চলে সবার নিরাপত্তা ও সম্বৃদ্ধি সংক্রান্ত আমাদের সাগর দৃষ্টিভঙ্গি এবং সেই সঙ্গে আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলির সক্ষমতা ও আত্মনির্ভরতা সংক্রান্ত আমাদের দায়বদ্ধতা অনুসারে এই সিদ্ধান্ত।
আইএনএস সিন্ধুবীর একটি ডিজেল ইলেকট্রিক কিলো ক্লাস সাবমেরিন।

জানা গেছে, মায়ানমারের নৌবহরে এটিই হবে প্রথম সাবমেরিন। শুধু তাই নয়, দ্বিতীয় কোনও দেশকে ভারতের সাবমেরিন সরবরাহও এই প্রথম। মায়ানমার সেনাকে সাবমেরিন দেওয়ার ঘোষণা সেনা প্রধান এমএম নরবনে ও বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সাম্প্রতিক সফরের সময় ঘোষণা হয়েছিল। ২০২০-র ফেব্রুয়ারিতে নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল করমবীর সিংহর সফরের সময় আইএনএস সিন্ধুবীর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল গত ২৫ জুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহর সঙ্গে মায়ানমারের সেনা প্রধান সিনিয়ার জেনারেল অং হিয়ালিংয়ের মস্কোর বৈঠকে।
প্রতিবেশী মায়ানমারকে ভারতের সামরিক সহায়তা এই প্রথম নয়। ভারত মায়ানমারকে ১০৫ এমএস লাইট আর্টিলারি গান, রকেট লঞ্চার, রাইফেল, বেলি ব্রিজ সমেত অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে। টর্পোডো সরবরাহ নিয়েও দুই দেশের চুক্তি হয়েছে।

মায়ানমার সেনা দীর্ঘ সময় ধরে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের ক্ষেত্রে চিনের ওপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু গত এক দশক ধরে মায়ানমার তাদের চিনা নির্ভরতা কমিয়ে বিকল্পের সুযোগ বাড়িয়েছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ।

জানা গেছে, চলতি মাসের গোড়ার দিকে ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ নারাভানে ও পররাষ্ট্রসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলার মিয়ানমার সফরের পরিপ্রেক্ষিতে সাবমেরিন হস্তান্তরের এই ঘোষণা এল। সফরে শ্রিংলা মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সাং সু চির সঙ্গে এবং জেনারেল নারাভানে মিয়ানমারের সিনিয়র জেনারেল মিন অং লাইং এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।## ১৬.১০.২০

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.