--- বিজ্ঞাপন ---

আজারবাইজানের দখলে কৌশলগত শহর শুশা

0

মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম ##

আজারবাইজানের সৈন্যরা আর্মেনিয়া দখলিকৃত নগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলের রাজধানী স্টেপানাকার্ট (খানকেন্দি) এর নিকট সামরিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ শহর শুশা দখল করে নিয়েছে। আর্মেনিয়িার সাথে যোগাযোগ রক্ষাকারী সড়কের লাচিন করিডোরের উপর কৌশলগত এই শুশা শহরটি দখলে নেয়ার ফলে রাজধানী স্টেপানাকার্ট একপ্রকার অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে। রাজধানী স্টেপানাকার্ট থেকে মাত্র ৬ মাইল দক্ষিণে এবং আর্মেনীয়ার সাথে সংযোগকারী রাস্তায় লাচিন করিডোরে এই  শুশা শহরটির দখলে নেয়া সামরিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। শুশা হাতছাড়া মানেই হল আর্মেনিয়া এ যুদ্ধে কৌশলগত পরাজয় হল।  এর ফলে আজারবাইজানের পক্ষে রাজধানী দখল এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ শুশা দখলকে যুদ্ধে এক ঐতিহাসিক বিজয় বলেছেন।

ওএসসিই মিনস্ক গ্রুপের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ম্যাথু ব্রায়জা ট্রেন্ড বার্তা সংস্থাকে বলেছেন, আজারবাইজানের শুশার দখল হাতে নেয় সম্ভবত আজারবাইজানের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক বিজয়। তিনি বলেন,  আমি মনে করি আর্মেনিয়ার জন্য একটি সম্পূর্ণ বিপর্যয়। এটি সম্ভবত আর্মেনিয়ার সবচেয়ে বড় কৌশলগত পরাজয়। এএফপির সংবাদদাতা টফিক বাবেয়েভ  গুরুত্বপূর্ণ শুশা শহর দখলে নেয়ার পর সেখানে আজারবাইজানের পতাকা উত্তোলনের ছবি প্রকাশ করেছে।  লন্ডনের দি টেলিগ্রাফ পত্রিকার সাংবাদিক  কলিন ফ্রিম্যান জানান, রবিবার আজারবাইজান আর্মেনিয়ার সাথে যুদ্ধে বিতর্কিত নাগোরানো কারাবাখের একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত শহর  শুশা দখল করেছে দাবী করেছে।  আর্মেনিয়ান কর্মকর্তারা শুশা হাতছাড়া হওয়ার খবর অস্বীকার করে বলেছেন সংঘর্ষ চলছে। আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আজারটেক বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, শুশা শহরটির উপর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে আজারবাইজানের সেনাবাহিনী।

শুশায় ২৮ বছর পরে আবার নামাজের ডাক শোনা যাবে-প্রেসিডেন্ট আলিয়েভ

আজেরনিউজ বার্তা সংস্থা জানায়, শুশা শহরটি দখলমুক্ত হওয়ার পর রোববার আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ জাতির উদ্দেশ্যে এক ভাষণে বলেছেন, আর্মেনিয়ান দখলের ২৮ বছর পরে আজারবাইজান তার শুশা শহরটি মুক্ত করেছে। তিনি বলেন, “আমি অত্যন্ত গর্বের সাথে ঘোষণা করছি যে শুশা শহরটি দখলমু্ক্ত করেছে। শুশা আমাদের! কারাবাখ আমাদের! তিনি বলেন, “৮ ই নভেম্বর, ২০২০ আজারবাইজানের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকবে”। আমরা যুদ্ধের ময়দানে এক ঐতিহাসিক জয় পেয়েছি। শুশা কেবল আজারবাইজানই নয় পুরো ককেশাসের মুক্তো। তবে শুশা দখল করে শত্রুরা আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য এক বিরাট আঘাত করেছিল, আমাদের ঐতিহাসিক স্থানসমূহ ধ্বংস করেছে, আমাদের মসজিদ ধ্বংস করেছে । আমরা এখন শুশায় ফিরে এসেছি। আমরা আমাদের সমস্ত ঐতিহাসিক স্থান, আমাদের সমস্ত মসজিদ পুনরুদ্ধার করব এবং শুশায় ২৮ বছর পরে আবার নামাজের ডাক শোনা যাবে।

মেহরিবান আলিয়েভা: আমরা আমাদের শুশায়ি ফিরে এসেছি !

আজারবাইজানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মেহেরিবান আলিয়েভা আর্মেনিয়ান দখল থেকে আজারবাইজানীয় শহর শুশাকে মুক্ত করার প্রসঙ্গে তার অফিসিয়াল ইনস্টাগ্রাম পেজে বলেছেন, ‘এই মুহুর্তে, আমাদের সমস্ত মানুষ অবিশ্বাস্য গর্ব এবং আনন্দ বোধ করছে ! শুশা দখলমুক্ত হয়েছে। আমি আমাদের সকল দেশবাসীর প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই!প্রিয় ভাই ও বোনেরা! আমরা আমাদের শুশাকে ফিরে পেয়েছি! আবারও, আমি এই উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক দিনটিতে সবাইকে অভিনন্দন জানাই! আল্লাহ আমাদের মাতৃভূমির মারা যাওয়া শহীদদের আত্মার শান্তি দিন! ###৭.১১.২০

 

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.