--- বিজ্ঞাপন ---

বাইডেনের আমলে কেমন হতে পারে বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্ক

0

আব্দুল্লাহ আরাফাত#

যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো ক্ষমতা হস্তান্তর করেননি। কিন্তু বিশ্বজুড়ে সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে জানু রাজনীতিবিদ ও কূটনৈতিকদের মাঝে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ ও পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ জো বাইডেন ও নবীন কমলা হ্যারিসের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে চলছে বিস্তর আলোচনা। অন্তত এটা বলা যাচ্ছে যে, ডেমোক্রেট প্রার্থীদের জয়ের ফলে বিশ্ববাসী আবারও তুলনামূলকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের উদারপন্থী পররাষ্ট্রনীতির দেখা পেতে যাচ্ছে। এর ফলে বিশ্বের ছোট দেশগুলোর মতো বাংলাদেশও এর সুফল ভোগ করবে।

১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ভূমিকা নিয়ে বাংলাদেশের সচেতন মহলে এখনো আলোচনার খোরাক জোগালেও সেই দিনগুলি উভয় দেশ পেরিয়ে এসেছে। বর্তমান প্রতিযোগিতার বিশ্বে বিভিন্ন শক্তিশালী দেশ নিজেদের বৃহত্তর স্বার্থে বাংলাদেশের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাই। এর অন্যতম প্রধান কারণ বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানগত সুবিধা। অতীতে ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশকে “ভারতের চোখে” দেখলেও বাইডেন-কমলার আমলে সেটি না দেখার সম্ভাবনায় বেশী। মনে রাখা উচিত, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সাথে দক্ষিন এশিয়ার নাড়ির সম্পর্ক রয়েছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, তিনিই হতে চলেছেন বর্তমান যুক্তরাষ্ট্রের নীতি নির্ধারনী মহলে সবচেয়ে আলোচিত নারী কারণ বাইডেন তার বয়সের কারণে সরকার পরিচালনায় কমলার উপর অনেকখানি নির্ভর করতে পারেন। এর থেকে অনুমান করা যায়, দক্ষিন এশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে গুরুত্বপূর্ন হয়ে উঠছে।

বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পররাষ্ট্রনীতি থেকে কেমন সুবিধা পেতে?

জলবায়ু

ডোনাল্ড ট্রাম্প তার একগুয়েমির কারণে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেলেও বাইডেন আবারও চুক্তিতে ফিরবেন। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও অন্যান্য কারনে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশী ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। যদি বাইডেন প্যারিস চুক্তিতে দ্রুত ফিরে যান তবে তার সুফল ভোগ করবে বাংলাদেশ।

রোহিঙ্গা সমস্যা

বাস্তুহারা রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা সমাধানে বাইডেনের সরকার আরও বেশী জোরালো ভূমিকা রাখবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশ আরও বেশী সুবিধা পেতে চলেছে।

অর্থনৈতিক

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের উদারনীতির কারনে বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা আবারও ফিরে পেতে পারে। দুই দেশের মাঝে বানিজ্য ঘাটতি থাকলেও বানিজ্যের পরিমান বৃদ্ধি পাবে। মূলত টিকফা চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ব্যবসায়িক-বানিজ্যিক দরকষাকষিতে যেতে হবে এবং এর অত্যধিক সাফল্য নির্ভর করছে কূটনৈতিকদের লবিং ও জোর প্রচেষ্টার উপর।

সামরিক

যুক্তরাষ্ট্র আধুনিক সামরিক সরঞ্জামাদি বিক্রির ব্যাপারে বাংলাদেশকে ক্রেতা দেশ হিসেবে গুরুত্ব দিতে পারে। বর্তমানে, ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির কারণে ট্রাম্প প্রশাসন এই অঞ্চলে সামরিকীকরণে জোর প্রচেষ্টা চালালেও বাইডেন সম্ভবত অর্থনৈতিক দিকগুলোতেই বেশি জোর দেবেন বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

শিক্ষা

বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের স্বপ্নের দুয়ার আরো সহজ ও বড় পরিসরে বৃদ্ধি পেতে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন সরকার আরো বেশী উদার হতে চলেছে। ঐতিহ্যগতভাবে, বাংলাদেশের অভিবাসীরা ডেমোক্রেট সমর্থক বলে মনে করা হয়। বৈধ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকলে ইউরোপের অনেক দেশ থেকেও আমেরিকায় অভিবাসন হওয়া সহজ।

যে সব অসুবিধায় পড়তে পারেঃ

বিশেষজ্ঞ মহল করছে, মানবাধিকার, গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও বাকস্বাধীনতার মতো মৌলিক চাহিদার প্রশ্নে বাংলাদেশ বরাবরের মতো প্রশ্নবানে পড়তে পারে। বাইডেন তাঁর  বিভিন্ন বক্তব্যে যেভাবে এই বিষয়গুলোতে জোর দিয়েছেন তার থেকেই অনুমান করা যায়। হিলারী ক্লিনটন তথা ডেমোক্রেটদের সাথে মুহাম্মদ ইউনূসের সুসম্পর্ক শেখ হাসিনার প্রশাসনের জন্য মাথাব্যথার কারণ হতে পারে বলেও অনেকে মনে করেন### ১১.১১.২০

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.