--- বিজ্ঞাপন ---

আফ্রিকায় পরাশক্তিদের মহড়া

সুদানে রাশিয়ার পারমানবিক নৌ ঘাটি স্থাপনের অনুমোদন

0

আব্দুল্লাহ আরাফাত ##

‘রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণে’ বিভিন্ন মূল্যবান সম্পদে পরিপূর্ণ আফ্রিকা অতীতে শক্তিশালী দেশগুলোর কাছে খুব বেশী গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। শক্তিধর দেশগুলো সম্পদের লোভে আফ্রিকায় নিজেদের অবস্থান জানান দিলেও আন্তঃদেশীয় ও মহাদেশীয় রাজনীতিতে আফ্রিকা অত্যধিক গুরুত্ব কখনো পায়নি মোটাদাগে। কিন্তু পাশার দান বদলে গেছে। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের বন্দর-শহরে শক্তিধর দেশের মোড়লদের আনাগোনা বেড়ে গিয়েছে।

সোমবার রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পর আফ্রিকা মহাদেশের সুদানে প্রথম পারমাণবিক নৌ ঘাটি স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছেন। সুদান বন্দরের পাশে নির্মিত নতুন সামরিক ঘাটিতে প্রায় ৩০০ জন সামরিক ও বেসামরিক কর্মচারী অবস্থান করতে পারবে এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে প্রভাব বাড়ানোর সাথে সাথে ভারত মহাসাগরে রাশিয়ার নজরদারি বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবে।“সুদানে ঘাটি স্থাপনের মাধ্যমে অন্যরা আমাদের উপস্থিতি জানান পাবে এবং আমাদের দিকে দৃষ্টি দিবে” – রাশিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম তাসের এক খবরে এমনটাই বলা হয়েছে। পুতিন গত বছর রাশিয়া-আফ্রিকা শীর্ষ সম্মেলনের একটি প্রধান অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেছিলেন, এবং একই সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় পারমাণবিক সক্ষমতায় পরিপূর্ণ দুইটি বোমারো বিমান অবতরণ করে।  

সোমবার প্রকাশিত এক ডিক্রীতে পুতিন বলেছেন, তিনি সুদানে একটি নৌ রসদ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য রাশিয়ার সরকারের একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে  চুক্তি স্বাক্ষরের নির্দেশ দিয়েছেন। এই সামরিক নৌ ঘাটিতে জাহাজ মেরামত ও পুনরায় রসদ সরবরাহ এবং রাশিয়ান নৌ কর্মীরা বিশ্রাম নিতে পারে এমন সুযোগ রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে এই ঘাটিকে রাশিয়া ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপনযোগ্য মিসাইলের সংযোজন করবে। লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে, সুদান এই ঘাটির জন্য বিনামূল্যে তাদের জমি দিচ্ছে এবং একই সাথে রাশিয়ার অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং অন্যান্য সরঞ্জাম আনার জন্য নিজেদের বিমানবন্দর ও বন্দরের সুবিধা দিবে। সিরিয়ার তারটাস বন্দরে রাশিয়ার অনুরূপ সুবিধা রয়েছে, সেখান থেকে তারা একটি বিমান ঘাঁটিও পরিচালনা করে থাকে।

জাতিসংঘের তালিকাভূক্ত ৫৪ টি দেশ নিয়ে গঠিত আফ্রিকা মহাদেশে রাশিয়ার প্রভাব আরও বাড়াতে পুতিন প্রশাসন দীর্ঘদিন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার তৈরি অস্ত্রের বিক্রিবাট্টা বাড়ানোর জন্য আফ্রিকা‍য় নতুন বাজার খোঁজা ও খনিজ সম্পদের প্রতি তাদের আগ্রহ ছিল দীর্ঘদিন থেকে।

শুধুমাত্র রাশিয়া নয় বর্তমানে শক্ত অর্থনীতির দেশ চীনও আফ্রিকায় প্রভাব ও সামরিক পদক্ষেপের বাড়ানোর দিকে ঝুঁকছে। আফ্রিকার আরেক দেশ জিবুতিতে চীনা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ফরাসী নৌ ঘাঁটি রয়েছে, অন্য দেশের নৌবাহিনীও প্রায়শই এর বন্দর ব্যবহার করে থাকে।

দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলোতে ক্ষমতাধরদের এমন উপস্থিতি ভবিষ্যতে হিতে বিপরীত হতে পারে বলে অনুমান করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশেষজ্ঞরা।### ১৭.১১.২০

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.