--- বিজ্ঞাপন ---

করোনা ভ্যাকসিনের তথ্য হাতিয়ে নিতে তৎপর হ্যাকাররা!!

0

আবদুল্লাহ আরাফাত ##

করোনা মহামারির টিকা বা ভ্যাকসিন এ মূহূর্তে সারা বিশ্বে সবচেয়ে মূল্যবান বস্ত। কে কার আগে এ ভ্যাকসিন বা টিকা আবিস্কার করবেন তার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশ দৌড়ের উপর আছে। প্রতিদিন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বের হচ্ছে করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে নানা তথ্য। আর এ সুযোগে বসে নেই হ্যাকাররাও। বিভিন্ন দেশের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন হ্যাকাররা ভ্যাকসিন আবিষ্কারক প্রতিষ্ঠান এবং তাদের বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করছে। হ্যাকার গোষ্ঠীগুলি দীর্ঘদিন যাবত অন্য  দেশের মূল্যবান তথ্য হাতিয়ে নেওয়াটা এক ধরণের রেওয়াজে পরিণত করেছে। বিশ্বের বহুদেশ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় হ্যাকার গোষ্ঠীগুলিকে সমর্থন করে যায় নিজেদের ফায়দা হাসিলের জন্য। সম্প্রতি, বহু শ্রম ও সাধনালব্ধ কোভিড-১৯ এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপাত্ত হাতিয়ে নিতে উঠে পড়ে লেগেছে বিভিন্নদেশ। ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম ‘ দ্য গার্ডিয়ান’ এমন কয়েকটি দেশের তালিকা তুলে ধরেছে।

রাশিয়া

পশ্চিমা গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মতে রাশিয়ার সর্বাধিক পরিচিত হ্যাকার – ‘ ফ্যান্সি বিয়ার এবং কোজি বিয়ার’ – দেশটির গোয়েন্দা সংস্থার সাথে যুক্ত বলে মনে করা হয়। ফ্যান্সি বিয়ার জিআরইউ সামরিক গোয়েন্দার সাথে যুক্ত এবং ২০১৬ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (ওবামা, হিলারী, বাইডেনের দল) কম্পিউটার হ্যাক করার পেছনে রয়েছে বলে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মাইক্রোসফট, যারা এই গ্রুপটিকে স্ট্রন্টিয়াম বলে, গত সপ্তাহে ফ্যান্সি বিয়ারকে “পাসওয়ার্ড স্প্রে এবং ব্রুট ফোর্স লগইন প্রচেষ্টা” ব্যবহার করে কোভিড -১৯ ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারীদের লক্ষ্য করার জন্য অভিযুক্ত করেছে ।

রাশিয়ার স্থানীয় এফএসবি এবং বিদেশী এসভিআর এজেন্সিগুলির সাথে বিভিন্নভাবে যুক্ত কোজি বিয়ারের বিরুদ্ধে ’ ব্রিটেনের এনসিএসসি’ এজেন্সি জুলাইয়ে যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার ওষুধ গবেষণা ল্যাবকে লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ করেছিল। এনসিএসসি জানিয়েছে, তাদের লক্ষ্য ছিল “কোভিড -১৯ ভ্যাকসিনের বিকাশ ও পরীক্ষার সাথে সম্পর্কিত তথ্য এবং মেধাস্বত্ব ” চুরি করা। এই গোষ্ঠীর হ্যাকাররা চিকিৎসা গবেষণা সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরণের ক্ষেত্রে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল এবং ওয়েবসাইটের দুর্বলতাগুলি কাজে লাগানোর চেষ্টা করে চলেছে।

চীন

পশ্চিমে বহু বছর ধরে হ্যাকিং কার্যক্রমে লিপ্ত থাকার অভিযোগে চীনকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। ২০১৫ সালে, চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং এবং তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বাণিজ্যিক সুবিধার জন্য “জ্ঞানীদের মেধাস্বত্ব চুরিকে সমর্থন না করার” প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র – চীন সম্পর্কের অবনতি ঘটায়, বিশেষত ডোনাল্ড ট্রাম্প রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরে, চীনা কার্যক্রম আবার শুরু হয়েছিল, এবার দেশের প্রধান বেসামরিক গুপ্তচর সংস্থা দেশটির রাষ্ট নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের (এমএসএস) সাথে যুক্ত।

চীনাপন্থী গোষ্ঠীগুলি রাজনৈতিক লাভের চেয়েও অর্থনৈতিক দিকে বেশি মনোযোগী থাকে, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ম্যান্ডিয়েন্ট ফায়ারআইয়ের’ মতে, গত বছর ‘এপিটি৪১’ নামে পরিচিত একটি গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করেছিল, যার “চীনের পাঁচ বছরের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিকল্পনার সাথে জড়িত”।

ইরান

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দেশগুলির মধ্যে অন্যতম ইরান, তাদের বিরুদ্ধে ফিশিংয়ের কৌশল ব্যবহার করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে লক্ষ্য করার অভিযোগ আনা হয়েছিল, যেখানে পাসওয়ার্ড চুরির চেষ্টায় ম্যালওয়্যারযুক্ত ইমেইল লিংক পাঠানো হয়েছিল সংস্থার কর্মীদের কাছে। ইসরাইলের সাইবার সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠান ক্লিয়ারস্কাই-এর গবেষকরা বলেছেন, অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ রেমডেসিভিয়ারের মার্কিন নির্মাতা ‘গিলিয়েড রিসার্চের’ একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ইরান থেকে একই ধরণের ফিশিং ইমেইল পেয়েছিলেন।

উত্তর কোরিয়া

উত্তর কোরিয়ার হ্যাকার গোষ্ঠীগুলি পশ্চিমা দেশগুলো থেকে তথ্য হাতিয়ে নিতে সর্বদা সচেষ্ট। সর্বাধিক পরিচিত গোষ্ঠী ‘লাজারাস”-এর দিকে অভিযোগের মারাত্মক অভিযোগের তীর আনা হয়েছে।

অন্যান্য

আন্তর্জাতিক সংস্থা ফায়ারআই বলেছে, তারা বিস্ময়করভাবে ভিয়েতনামের এমন একটি হ্যাকার গোষ্ঠীকে শনাক্ত করেছে যারা জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে মহামারী সংকটের প্রাথমিক পর্যায়ে চীনের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালিয়েছে

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.