--- বিজ্ঞাপন ---

পাকিস্তান ৫০টি জে-১০ জঙ্গী বিমান কিনছে

ভারত রাফাল জঙ্গী বিমান সংগ্রহ করায় এ পদক্ষেপ

0

মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম

ভারত রাফাল জঙ্গী বিমান সংগ্রহ করায় পাকিস্তান চীন থেকে জরুরী ভিত্তিতে ৫০ টি অত‌্যাধুনিক জে -১০ (সিই) জঙ্গী বিমান এবং এর ক্ষেপণাস্ত্র কেনার চেষ্টা করছে। সূত্রমতে, গত অক্টোবরে, পাকিস্তান থেকে একটি দল চীন সফর করে এবং ৫০ টি জে -১০ (সিই) যুদ্ধবিমান কেনার আলোচনা চূড়ান্ত করেছে । সামরিক মহল সূত্র বলছে , রাফাল ক্রয়ের সূচনা থেকেই পাকিস্তান ওই জঙ্গী বিমানের বিকল্প খুঁজছিল এবং সেই মোতাবেক পরিকল্পনা নিয়েই দেশটির বিমান বাহিনী পিএএফ (পাকিস্তান এয়ার ফোর্স ) এগুচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে। পাকিস্তান মোকাবেলায় কি পদক্ষেপ নিতে পারে এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সামরিক বিশ্লেষকরা নানা মতামত দিয়ে চলেছেন। এমনও শোনা গিয়েছিল পাকিস্তান বিমান বাহিনী দূরপাল্লার দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট ডীপ স্ট্রাইক জঙ্গী বিমান জেএইচ-৭ ক্রয় করবে। তবে এরই মধ‌্যে ভারতীয় সংবাদ মাধ‌্যমে প্রকাশিত সংবাদটির দিকেই সবার দৃষ্টি এখন।  জি  মিডিয়ায় গত ৩ নভেম্বর  কৃষ্ণ মোহন মিশ্র এক প্রতিবেদনে অনেকটা নিশ্চিত করেই বলেছেন,পাকিস্তান  অতি জরুরী ভিত্তিতে  ৫০টির মধ্যে ৩০ টি জঙ্গী বিমান এবং এসকল বিমানের জন‌্য সর্বাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র সংগ্রহের চেষ্টা করছে।  ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনে তৈরী জে -১০ কেনার আলোচনা শুরু হয়েছিল ২০০৯ সালে। পাকিস্তান ২০০৯ সালে চাইনিজ জে-১০ ক্রয় নিয়ে আলোচনা শুরু করে, কিন্তু জেএফ-১৭ জঙ্গী বিমান যৌথভাবে তৈরী শুরু হওয়ার পরে তা স্থগিত করা হয়েছিল। রাফাল জঙ্গী বিমান ভারতীয় বিমানবাহিনীতে আসার পর পাকিস্তান আবার সেই আলোচনা শুরু করে। সূত্রমতে, পাকিস্তানের কর্মকর্তাদের একটি ১৩ সদস্যের দল এই চুক্তি চূড়ান্ত করতে ২২ অক্টোবর চীন গিয়েছিল।

ভারতের দি উইক ম্যাগাজিনে ( ১১ আগস্ট, ২০২০ সংখ্যায় )  “রাফাল  যথেষ্ট নয়? পাক, চীনের  কাছে আইএএফের চেয়ে আরও বেশি ‘ফোর্স মাল্টিপ্লাইয়ার রয়েছে “ শিরোনামে এক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়েছে, ভারতের বিমান বাহিনীর চেয়ে চীন-পাকিস্তান সুবিধাজনক  অবস্থানে রয়েছে উল্লেখ করে আকাশ যুদ্ধে ভারতের সামরিক পরিকল্পনাবিদদের সমালোচনা করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী ম‌্যাগাজিন ফরেন পলিসি’তে প্রকাশিত  এবিষয়ে দুই ভারতীয় বিশেষজ্ঞ হর্ষ ভি পান্ত এবং অঙ্গদ সিংহের লেখা মতামত নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়।  পান্ত অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের থিঙ্ক ট্যাঙ্কের গবেষণা পরিচালক এবং অঙ্গদ সিং একই প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প সমন্বয়ক।

“ভারতীয় বিমানবাহিনী এই অঞ্চলে গুণগত ও পরিমাণগত উভয় দিকে  অন্যতম সেরা বিমানবাহিনী ছিল, তবে গত দুই দশক ধরে চীন ও পাকিস্তানের তুলনায় ভারত নাটকীয়ভাবে পিছিয়ে পড়তে শুরু করে। অঙ্গদ এবং পান্ত ফরেন পলিসিতে বলছেন,  এখন পরিস্থিতি আরও খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, পাকিস্তান ও চীনা বিমান বাহিনীর সম্ভাব্য জোটকে মোকাবেলা করার জন্য পর্যাপ্ত বিমান সংগ্রহ ভারতের জন্য এক  চ্যালেঞ্জ।  তারা উল্লেখ করেন,  চীন তিব্বতের বিমানবন্দরগুলিতে আরও বেশি জঙ্গী বিমান মোতায়েন বাড়িয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে , অন্যদিকে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের স্কার্দু বিমানবন্দরটিতে মহড়া চালিয়েছে ।

ফরেন পলিসির প্রবন্ধে যুক্তি দেখিয়ে বলছে, “রাফাল জঙ্গী বিমান যতই অগ্রসর  না কেন  বা এর দূরপাল্লার অস্ত্রশস্ত্র যতটা কার্যকর হোক না কেন, ৩৬ টি জঙ্গী বিমান ভারতের বিমান বাহিনীতে এলে  এই অঞ্চলে শক্তির ভারসাম্য নাটকীয়ভাবে বদলাবে না। “  বিশেষজ্ঞরা যুক্তি দেখান যে, “চীনের ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড ভারতের সীমান্তে প্রায় ২০০ টি জঙ্গী বিমান মোতায়েন করেছে । অপরদিকে পাকিস্তান ভারতের বিপক্ষে ৩৫০ টি জঙ্গী বিমান প্রস্তুত রেখেছে”। ফরেন পলিসি  বিশ্লেষণে বলা হয়,  “সব মিলিয়ে এধরনের অপরিপক্ক সামরিক পরিকল্পনা ভারতীয় বাহিনী করতে থাকলে, পাকিস্তান ও চীনা বিমানবাহিনী ভারতের চেয়ে অনেক বেশী এগিয়ে থাকবে এবং  অদূর ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত রাখবে”।  অঙ্গদ ও পান্ত এ বলে তাদের প্রবন্ধে যুক্তি দেখান যে, পাকিস্তান এবং চীনের কাছে ভারতীয় বিমানবাহিনীর চেয়ে আরও বেশী আকাশে জ্বালানী ভরতে সক্ষম ট্যাঙ্কার বিমান এবং আগাম সতর্কীকরণ আর্লি ওয়ার্নিং বিমান রয়েছে। ফরেন পলিসি বলছে “এসকল  কৌশলগত সুবিধাগুলি যুদ্ধে আক্রমণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে নাটকীয়ভাবে আকাশ যুদ্ধের মোড় অনুকূলে নিয়ে যাবে।”

চীন কমপক্ষে দুটি পৃথক আগাম সতর্কীকরন আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেমস ব্যবহার করে থাকে। প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৯ সালে পাকিস্তানের নিকট ৩টি সুইডিশ সাব-২০০০ এবং ৪টি শানসি ওয়াই-৮  আগাম সতর্কীকরণ বিমান রয়েছে। একই সময়ে তুলনায় ভারতীয় বিমানবাহিনীতে রয়েছে ইস্রায়েল থেকে সংগ্রহ করা ৩টি ফ্যালকন সিস্টেমস । এগুলি রাশিয়ার আইএল-৭৬ বিমানের উপর স্থাপিত ছিল এবং ব্রাজিল থেকে সংগ্রহ করা এমব্রায়ার বিমানে উপর আরও দুটি দেশীয়ভাবে নির্মিত ‘নেত্রা’ আগাম সতর্কীকরন সিস্টেমও ব‌্যবহার করছে ভারত।

 

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.