--- বিজ্ঞাপন ---

ইরানের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা আলী খামেনিকে নিয়ে গুজব

কে হবেন উত্তরসূরি

0

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ##

আলী খামেনিকে নিয়ে হঠাৎ করে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে। বলা হচ্ছে তিনি গুরুতর অসুস্থ। তিনিই এখন ইরানের রাজনৈতিক ক্ষমতার শীর্ষ নেতা। বর্তমানে তাঁর বয়স ৮১ বছর। তিনি মারা গেলে বা অসুস্থ থাকলে তার উত্তরসূরি কে হবেন, তা নিয়ে বেশ জল্পনা চলছে। ২০১৪ সালে ক্যান্সার হওয়ার কারণে একটি অপারেশন হয়েছিল ইরানের সর্বোচ্চ নেতার। তারপর থেকেই তার বিষয়ে খুব একটা খোঁজ-খবর পাওয়া যায় না। বেশিরভাগ সময়ই লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকেন তিনি। ফলে তার স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে।

ইরানের ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার পদে আসীন দ্বিতীয় ব্যক্তি। তবে এই পদে কে থাকবেন তা নির্ধারণ করেন বিশেষজ্ঞমণ্ডলী বা অ্যাসেম্বলি অফ এক্সপার্টস নামে ৮৮ জন ধর্মীয় নেতার একটি পরিষদ। গুজব আছে যে, সম্ভাব্য প্রার্থীদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে যা চূড়ান্তভাবে গোপনীয়। ওই তালিকায় কাদের নাম আছে তা জানার দাবিও কেউ করেন না। তবে পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে বা বিভিন্ন ঘটনার নিরিখে বলা হচ্ছে যে, আলী খামেনির পছন্দের উত্তরসূরি হতে পারেন তার ছেলে মোজতাবা অথবা বিচার বিভাগের প্রধান ইব্রাহিম রাইসি।তবে দেশটির এক সাংবাদিক জানান, খামেনির স্বাস্থ্যের অবনতির কারণে তার ৫১ বছর বয়সি ছেলে মোজতাবা হোসেইনি খামেনিকে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হতে পারে।এদিকে, রাইসির পূর্বসূরি সাদেক লারিজানি ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি দুজনেই পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতার দায়িত্ব গ্রহণে আগ্রহী বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিবিসি জানায়, মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ক্ষমতাশীল ও গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ ইরান। দেশটির রাজনৈতিক ক্ষমতার শীর্ষে আছেন ৮১ বছর বয়স্ক আলি খামেনি। কাজেই তার উত্তরসূরি কে হতে যাচ্ছেন এ বিষয়টি অতিগুরুত্বপূর্ণ তো বটেই গোটা এলাকা ও বাকি বিশ্বের জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ। ইরানে ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার পদে আসীন হওয়া দ্বিতীয় ব্যক্তি। এ পদে কে থাকবেন তা নির্ধারণ করেন বিশেষজ্ঞমণ্ডলী বা অ্যাসেম্বলি অফ এক্সপার্টস নামে ৮৮ জন ধর্মীয় নেতার একটি পরিষদ। এই মন্ডলীর সদস্যদের নির্বাচন করা হয় প্রতি আট বছর পর পর। কিন্তু কারা গোষ্ঠীর সদস্য পদের জন্য প্রার্থী হতে পারবেন তা নির্ভর করে দেশটির গার্ডিয়ান কাউন্সিল নামের আরেকটি কমিটির অনুমোদনের ওপর। আর এই গার্ডিয়ান কাউন্সিলের সদস্যদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্বাচন করেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা।
অর্থাৎ এ দু’টি পরিষদ বা মণ্ডলীর ওপর সর্বোচ্চ নেতার প্রভাব থাকে। গত তিন দশক ধরে আলি খামেনি নিশ্চিত করেছেন যে, বিশেষজ্ঞমণ্ডলীর নির্বাচিত সদস্যরা যেন রক্ষণশীল হয়। যারা তার উত্তরসূরি নির্বাচনের সময় তারই নির্দেশ মেনে চলবে। তবে নির্বাচিত হবার পর সর্বোচ্চ নেতা তার পদে আজীবন বহাল থাকতে পারেন।
ইরানের সংবিধান অনুযায়ী সর্বোচ্চ নেতা হতে হবে একজন আয়াতুল্লাহকে, অর্থাৎ যিনি একজন শীর্ষস্থানীয় শিয়া নেতা। কিন্তু আলি খামেনিকে যখন নির্বাচন করা হয়েছিল তখন তিনি আয়াতুল্লাহ ছিলেন না। পরে তিনি যাতে এই দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারেন তার জন্য আইন পরিবর্তন করা হয়েছিল। কাজেই প্রয়োজনে আইন আবার পরিবর্তন করা সম্ভব। যখন নতুন নেতা নির্বাচনের সময় আসবে তখন রাজনৈতিক পরিস্থিতির আলোকে আইন পরিবর্তনের রাস্তা খোলা রয়েছে। ইরানে চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার পদাধিকারী ব্যক্তি। দেশটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে তার নির্দেশই শেষ কথা। দেশটির নীতিমালার রূপকার তিনি বহির্বিশ্বের সাথে ইরানের সম্পর্কের মূল নির্দেশকও তিনি।
ইরান বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী শিয়া মতাবলম্বী দেশ এবং আলি খামেনির নেতৃত্বে ইরান মধ্যপ্রাচ্যে তার প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে। তবে আলি খামেনির মৃত্যু গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। শুধু তাই নয়, গোটা বিশ্বে এর ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে।
ইসলামী প্রজাতন্ত্রটির রাজনৈতিক উপ-দলগুলো পরবর্তী উত্তরসূরি কেমন হবেন তা নিয়ে গভীরভাবে আগ্রহী। কিন্তু ইরানে এমন কোনো ক্ষমতাধর ব্যক্তি নেই যিনি একটা সঙ্কট প্রতিরোধ করার জন্য নেতৃত্ব দিতে পারেন।
তবে আলি খামেনির অনুগত মহলে তার একটা বড় প্রভাব রয়েছে। এদের বেশিরভাগই ইরানের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী বাহিনী রেভল্যুশনারি গার্ডের সদস্য। রেভল্যুশনারি গার্ড যদি কোনো প্রার্থীকে পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দেখতে না চায় বা তারা যদি কোনো প্রার্থীকে অপছন্দ করে তাহলে তাকে ঠেকানোর চেষ্টা যে তারা করবে সে সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে এমনও গুজব রয়েছে, সম্ভাব্য প্রার্থীদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে যা চূড়ান্তভাবে গোপনীয়। ওই তালিকায় কাদের নাম আছে তা জানার দাবিও কেউ করেন না। পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে বা বিভিন্ন ঘটনার নিরীক্ষা করে বলা হচ্ছে, আলি খামেনির পছন্দের উত্তরসূরি হতে পারেন তার ছেলে মোজতাবা অথবা বিচার বিভাগের প্রধান ইব্রাহিম রাইসি। সেটা যদি সঠিক হয় তাহলে তার কিছুটা ওজন অবশ্যই রয়েছে।
ইব্রাহিম রাইসির পূর্বসূরি সাদেক লারিজানি ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি দু’জনেই পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতার দায়িত্ব গ্রহণে আগ্রহী বলে ধারণা করা হয়।
এ দিকে সর্বোচ্চ নেতা আলি খামেনির ৫১ বছর বয়স্ক ছেলে মোজতাবা সম্পর্কে ধোঁয়াশা রয়েছে। ধর্মীয় শহর মাশহাদে তার জন্ম ও বাবার মতো তিনিও একজন ধর্মীয় নেতা। আলি খামেনি কোনো বাদশাহ নন। কাজেই উত্তরসূরি হিসেবে সন্তানের হাতে সিংহাসন তুলে নেবার কোনো প্রথা এখানে কাজ করবে না। কিন্তু তার বাবার কট্টরপন্থী ঘনিষ্ঠ মহলে মোজতাবার যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। এমনকি দফতরেও তার ব্যাপক প্রতিপত্তি রয়েছে। রেভল্যুশনারি গার্ড যদি তাকে সমর্থন করে তাহলে বৈধ নির্বাচন প্রক্রিয়াকে মোজতাবার অনুকূলে কাজ করানোর ব্যাপারটা তারা প্রভাবিত করতে পারে।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.