--- বিজ্ঞাপন ---

দক্ষিণ আফ্রিকার বাংলাদেশীরা আতঙ্ক নিয়ে দিন কাটায়

0

আন্তর্জাতিক ডেস্ক##

দক্ষিণ আফ্র্রিকায় একের পর এক খুন হচ্ছে বাংলাদেশীরা। কেন এবং কি কারনে এত বাংলাদেশীর প্রাণ যাচ্ছে তা খতিয়ে দেখছে না কেউ। কারও মতে বাংলাদেশীদের পরিকল্পিতভাবে খুন করা হচ্ছে। বাংলাদেশীদে অগ্রযাত্রা থমকে দেয়ার জন্য এ কাজ করছে। বিষয়টি নিয়ে নজর দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দক্ষিণ আফ্রিকার বাংলাদেশীরা আতঙ্ক নিয়ে দিন কাটায়।

এরই মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকায় জাহের নামে এক বাংলাদেশী খুন হয়েছে। প্রথমদিকে বলা হয়েছে ডাকাতরা তাকে খুন করেছে। এখন বলা হচ্ছে তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্রী স্টেইট প্রদেশের ফান্ডারবিলিপার্কে বাংলাদেশী নাগরিক জাহের খুনের নেপথ্যে ডাকাতির ঘটনা নয় বলে নিশ্চিত করেছে একই এলাকায় বসবাসকারী বাংলাদেশী নাগরিকেরা।বাংলাদেশী এবং পুলিশের প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী জাহের খুনের ঘটনাটি ছিলো একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড।
ঘটনার দিন গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় সশস্ত্র কৃষাঙ্গ অস্ত্রধারীরা দোকানের কাউন্টার দিয়ে প্রথমে দুই রাউন্ড গুলি করে দরজা ভেঙে দোকানে প্রবেশ করে পরপর ১৭ রাউন্ড গুলি করে জাহের এর মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়।  এলাকাবাসীর ধারণা জাহের এর ব্যবসায়ীক পার্টনারের সাথে দীর্ঘ দিন থেকে ঝামেলা চলে আসছিল এবং সম্প্রতি জাহের তার পার্রনারকে জোরপূর্বক দোকান থেকে বের করে দিয়েছে।এই ঘটনার জের ধরে তার পার্টনার ভাড়াটিয়া খুনি দিয়ে জাহেরকে খুন করতে পারে।

বিবিসি বলছে, প্রিটোরিয়াতে বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে জানানো হয়, ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ এর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকায় মোট ৪৫২জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এর মধ্যে ২০১৯ সালের প্রথম নয় মাসে ইতিমধ্যে ৮৮জন বাংলাদেশির মরদেহ দেশে পাঠানো হয়েছে।

দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাব্বির আহমেদ চৌধুরী বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, নিহতদের শতকরা ৯৫ শতাংশই হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। যার মধ্যে বেশিরভাগই ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব, ব্যক্তিগত ও নারীঘটিত শত্রুতার কারণে নিহত হয়েছেন বলে হাইকমিশন জানতে পেরেছে।

তবে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মোঃ রেজাউল করিম খান ফারুক জানিয়েছেন, বাংলাদেশিদের মালিকানাধীন দোকানপাটে হামলা এবং লুটতরাজ প্রায় নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।এছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কেপটাউন, জোহানসবার্গ, প্রিটোরিয়া এবং ব্লুমফন্টেইনে অভিবাসী বিরোধী হামলার শিকার হয়েছেন বহু বাংলাদেশি।

“বাংলাদেশ থেকে বৈধ এবং অবৈধভাবে যারা আসেন, নানাভাবে কিছুদিন পর তারা এখানে ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করে, বিশেষ করে মুদি বা গ্রোসারি দোকান দেয় তারা। তখন দেখা যায় বাংলাদেশি আরেকজন অভিবাসীর সঙ্গেই হয়ত তার দ্বন্দ্ব শুরু হলো। এর পরিণতিতে অনেক খুনখারাপি আমরা দেখেছি।”

“এছাড়া কাগজপত্র বিশেষ চেক করা হয় না বলে অনেকে চলে যায় গ্রামের দিকে। সেখানে গিয়ে দেখা যায় তারা স্থানীয়দের সঙ্গে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। এ থেকে দোকানে লুট ও সংঘর্ষ এবং খুনের ঘটনা ঘটার অভিযোগ আছে।”

মিঃ খান জানিয়েছেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশিদের জন্য একটি বড় সমস্যা হচ্ছে, দেশটিতে বহু বাংলাদেশি অবৈধভাবে অবস্থান ও কাজ করছেন, যে কারণে অনেক সময় হত্যাকাণ্ডের পর মামলা করায় জটিলতা সৃষ্টি হয়।

তিনি জানিয়েছেন, হামলা, লুট এবং হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করে অভিবাসী বাংলাদেশিরা নিরাপত্তা চেয়ে জাতিসংঘ শরণার্থী হাইকমিশনের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভও হয়েছে।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.