--- বিজ্ঞাপন ---

পৃথিবীর আলো দেখতে পেল রোহিঙ্গা-স্থানীয় ২০ শিশু

0

দুই বছর বয়সী কন্যাশিশু শহিদা বেগম। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জন্ম নেয়া শিশুটি জন্মগতভাবে অন্ধ ছিল। চোখে ছানির কারণে দেখতে পাচ্ছিল না সে। অবশেষে রঙিন পৃথিবীর আলোয় আলোকিত হলো তার জীবন। চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালে দুই দফায় শহিদা বেগমসহ ২০ জন বাংলাদেশে আশ্রয়প্রার্থী রোহিঙ্গা ও কক্সবাজারের স্থানীয় শিশুর সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। অস্ত্রোপচারের পর আজ ১০ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার চোখের বাঁধন খুললে এসব শিশুরা স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায়। পাশাপাশি ঔষধসহ যাবতীয় সেবা প্রদান করা হয়। এর আগে ২ ডিসেম্বর ও ৯ ডিসেম্বর অস্ত্রোপচার শুরু হয়।
রোহিঙ্গা শিবিরের আশপাশে চোখের অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা না থাকায় চক্ষু হাসপাতালে এই কার্যক্রম চালু হয়। শিশুদের চোখের অস্ত্রোপচার করেন চক্ষু হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. নাসিমুল গনি চৌধুরী। তাকে সহযোগিতা করেন, অরবিস ইন্টারন্যাশনালের এম.আই.এস কনসালটেন্ট মকবুল হোসেন, চক্ষু হাসপাতালের অফথ্যালমিক প্যারামেডিক নুরতাজ, নাসরিন ও ফখরের জাহান। এছাড়া সহযোগিতা দেন ক.বা.শ হাসপাতালের ম্যানেজার (প্রোগ্রাম এন্ড অপারেশন)শহীদ উদ্দিন মাহমুদ, অপটোমেট্টি আফসানা আফরিন, ফিল্ড ফেসিলিটেটর জামিল উদ্দিন বাপ্পী।
কাতার ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্টের (কিউএফএফডি) সহায়তায় অরবিস ইন্টারন্যাশনাল বাস্তবায়িত ‘কাতার ক্রিয়েটিং ভিশন (কিউসিভি) এক্সপান্ডিং আই কেয়ার ইন সাউথ ইস্ট বাংলাদেশ’ প্রকল্পের আওতায় ও কক্সবাজার বায়তুশ শরফ (ক.বা.শ) হাসপাতালের তত্বাবধানে অস্ত্রোপচারে টেকনিক্যাল সার্পেট দিচ্ছে চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল।
এর আগে চক্ষু চিকিৎসার জন্য অরবিস পরিচালিত বিভিন্ন ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শিশুদের এবং নিয়মিত স্কুল সাইট টেস্টিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে স্থানীয় শিশুদের চোখ পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা প্রদানের জন্য ক.বা.শ হাসপাতালে এবং অস্ত্রোপচারের জন্য চটগ্রাম চক্ষু হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
গত ৯ ডিসেম্বর অস্ত্রোপচার হওয়া কক্সবাজারের স্থানীয় ৬ শিশুর আজ বৃহস্পতিবার চোখেন বাঁধন খোলা হয়। এরা হল, বিবি হাজেরা (৫), আরাফাত ইসলাম (১৫) তজু ((১), আরব (৪ বছর ৬মাস),সায়মন (৬) ও নুরন্নবী (১০)। এছাড়া গত ২ ডিসেম্বর ৯ শিশুর সেলাই কাটা হয়। এরা হল রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জন্ম নেয়া শিশু মো. ছাদেক (৩), লালু (৩ বছর ৬ মাস), শহীদা বেগম (২), তাসমিনা তারা (৬), মো. শাহেদ (১২), ইয়াসমিন বিবি (৫ মাস), কক্সবাজারের স্থানীয় শিশু মোস্তফা (১২), মো, তারেক(৭) ও মোমিন (২)। ওই দিন আরো ৫ রোহিঙ্গা শিশুর অস্ত্রোপাচার হয়। এরা হল মো. রশিদ (৫), মোয়াজ্জেম (৩), জান্নাতারা (১১), আয়াতুল্লাহ (১১) ও ইয়াসমিন বিবি (৫ মাস)। অস্ত্রোপচারের পর শিশুদের বাবা-মা অভিব্যক্তি ব্যক্ত করে বলেন, আমরা অনেক আনন্দিত। এতদিন সন্তানের চোখ নিয়ে যে দুঃশ্চিন্তায় ছিলাম তা এখন কেটে গেছে। আমরা অরবিসসহ সবার কাছে কৃতজ্ঞ, যারা আমাদের সন্তানদের চোখের চিকিৎসার সম্পূর্ণ খরচ বহন করেছে। এই চিকিৎসার ফলে আমাদের সন্তানদের সঠিক ভবিষ্যত নিশ্চিত হয়েছে।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.