--- বিজ্ঞাপন ---

তাদের টার্গেট ছিল সরকার প্রধান থেকে শেখ হাসিনাকে সরানো

পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে জার্মান বাংলা প্রেস ক্লাবের সাথে খোলামেলা আলোচনায় জার্মানীতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত

0

 

ওমর ফারুক হিমেল, ইউরোপ প্রতিনিধি

বিজয়ের মাসে স্বপ্নের পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের দৃশ্য। আগামী এক বছর পর পদ্মা সেতু দিয়ে ২১ জেলার মানুষ যোগাযোগের অনন্য করিডোরে যুক্ত হবে। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগের নামে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র আর কূটকৌশলে থমকে গিয়েছিল নির্মাণ কাজ। অর্থায়ন ও বন্ধ করে দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক সহ উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো। পরে বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সেতু বিভাগ। সেতু নির্মাণের জন্য তাদের ঋণ হিসাবে টাকা দিচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়। জার্মানীতে এসব কথা বলেছেন, সাবেক যোগাযোগ সচিব মোশাররফ হোসেন ভূইঁয়া।তখনকার এই যোগাযোগ সচিব এখন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করছেন জার্মানিতে। কী ঘটেছিলো এই প্রকল্পে? খোলামেলা কথা বলেছেন, জার্মান বাংলা প্রেস ক্লাবের বিজয় দিবসের ভার্চুয়াল আলোচনায়।

জার্মানিতে দ্বিতীয় দফায় করোনা সংক্রমণ রোধে বুধবার থেকে জাতীয় লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল। এরই মধ্যে  ২০ ডিসেম্বর রবিবার ৪৯ তম বিজয় দিবস উপলক্ষে জার্মান বাংলা প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে একটি ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জার্মান বাংলা প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি হাবিবউল্লাহ বাহারের উপস্থাপনায় , আলোচনায় অংশ নেন সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্ণেল( অব) ফারুক খান,জার্মানের বার্লিনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্টদূত ও সাবেক সচিব মোশাররফ হোসাইন ভূঁইয়া এনডিসি।ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন জার্মান বাংলা প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি খান লিটন, অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ।

ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কর্ণেল অব: ফারুক খান বলেন, এই বারের বিজয় দিবস বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, পাহাড়সম ষড়যন্ত্র ছিন্ন করে আওয়ামী সরকার এই মাসে পদ্মাসেতু দৃশ্যমান করেছেন। এখন বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে। মোশাররফ সাহেব পদ্মা সেতুর জ্বলন্ত সাক্ষী। বিজয়ের মাসে পদ্মা সেতুর কাজ দৃশ্যমান। একই সাথে তিনি জানান, বাংলাদেশ হ্যাংরি ক্যাসিঞ্জারের তলাবিহীন ঝুড়ি নই, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বিস্ময়।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমাদের টার্গেট ছিল পদ্মা সেতু ২০১৪ সালের ভেতর শেষ করা,সে হিসেবে আমরা কাজ শুরু করেছিলাম। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়। অবশেষে প্রমাণ হয় সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেনসহ আমি নির্দোষ প্রমাণিত হয়। তিনি আরো উল্লেখ করেন,আমি যেখানে দায়িত্ব পেয়েছি সেখানে সততার সাথে কাজ করেছি। মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমি সেতু বিভাগে কাজ করেছি, অত্যন্ত সততার সাথেই। কিন্তু মহলটি তারপরেও মিথ্যা অপবাদ দেয় আমার বিরুদ্ধে, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ক্ষান্ত হইনি তারা, সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেন সাহেবের সততাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেয়েছে। কুচক্রী মহলটি বিশ্বব্যাংকের অফিসে স্বশরীরে গিয়ে, ইমেইল করে, চিঠি লিখে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে।এটা কিছু মানুষের স্বার্থ ও ষড়যন্ত্রের কারণেই হয়েছে এমনটি উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। তখন দুদক মামলা করে। আমি জেলে যাই। তাদের টার্গেট ছিল সরকার প্রধান থেকে শেখ হাসিনাকে সরানো।
এ প্রসঙ্গে জার্মানিতে নিযুক্ত এই রাষ্ট্রদূত বলেন, তখন প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারকে দোষারোপ করা হয়েছিল। কিন্তু পরে তদন্ত করে কিছুই পাওয়া যায়নি। সবই ছিল গুজব, এমনটি জানিয়েছে কানাডীয় আদালত। সব ভূয়া অভিযোগ মিথ্যে প্রমাণ করে, বিশ্ব ব্যাংককে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যখন নিজেদের অর্থায়নে সেতু নির্মাণে বাংলাদেশ সফল।

আমন্ত্রিত অতিথিরা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানেই বাংলাদেশ। অতিথিরা আরো জানান,কিছু কিছু ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুকে ছাপিয়ে যাচ্ছেন তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভায়, দেশের উন্নয়নে প্রবাসী বাংলাদেশী, প্রবাসী সাংবাদিকদের অবদানের কথা স্বীকার করে বক্তব্য রাখেন অতিথিরা। একই সাথে দেশ গঠনে প্রত্যয় ব্যক্ত করে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখ্য, পদ্মা সেতু নির্মাণের শুরু দিকে দুর্নীতির মিথ্যে অভিযোগে তৎকালীন যোগাযোগ সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া কারাবরণ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। যিনি এখন জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত।বাংলাদেশের মানুষ জানে ১০ বছর আগের ঘটনা, গণমাধ্যমের শিরোনাম আর বড় অংশ জুড়ে ছাপা হতো পদ্মা সেতুর দুর্নীতির নানা অভিযোগ। এই প্রকল্প নিয়ে যারা কাজ করেছিলেন, তাদের অসততা ও নৈতিকতার প্রশ্ন উঠেছিল। পদত্যাগ করতে বাধ্য হন সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেন। পরে আদালতে সব অভিযোগ মিথ্যা প্রমানিত হয়। বাংলাদেশের টাকায় নির্মিত হয় স্বপ্নের পদ্মা সেতু।

ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানটিতে সাংবাদিক, রাজনৈতিক,সামাজিক, সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।অনুষ্ঠানে, জাতীয় সংগীত ও গান পরিবেশন করেন শিল্পী লুৎফর রহমান শিল্পী লিপিকা।

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.