--- বিজ্ঞাপন ---

ফিনল্যান্ডের স্বনামধন্য ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি’র ফুল স্কলারশিপ পেলেন তাশফিক

0

মাহাবুব আবদুল্লা, কোরিয়া থেকে

 

সন্তানদের উচ্চতর মেধা বিকাশে প্রত্যেকটি পরিবারকে শুধু আর্থিক সাপোর্ট করলেও হয় না, সাথে মানসিক সাপোর্ট প্রয়োজন। সিলেট কানাইঘাট উপজেলার বড়দেশ গ্রামের গর্ব। সবার ভাগ্যে জোটে না, বাবা নামের এমন বটবৃক্ষ। একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের এক সন্তানের কৃতিত্ব ও সাফল্য।

ইউরোপের দেশ ফিনল্যান্ডের স্বনামধন্য ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি করার ফুল স্কলারশিপ পেলেন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান তাশফিক। তাশফিকের পেছনে ছায়ার মতো তারঁ বাবাই উৎসাহ জুগিয়ে গেছেন। গ্রামের একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানকে প্রাইভেট কলেজ থেকে শুরু করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পড়াশোনা করানোর জন্য যে খরচটা হয়, সেটা অনেক পরিবারের পক্ষে বহন করা কঠিন। অনেক ক্ষেত্রে ধারাবহিকভাবে খরচ টেনে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। আর এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন তাশফিকের পরিবার। তাদের নিজস্ব সখ আহ্লাদ উপেক্ষা করে সন্তানের নিজেদের সব ত্যাগ করে গেছেন। আর্থিক ও মানসিকভাবে সাপোর্ট দিয়েছেন সবসময়। সেই বাবার বাকী দুই সন্তানরাও তাদের ছোট ভাইকে পড়াশোনার জন্য সাধ্য মতো আর্থিক সহযোগিতা করে গেছেন। প্রতিটি সন্তানদের তার মেধা বিকাশের জন্য পরিবার থেকে শুধু আর্থিক সাপোর্ট করলেও হয় না,মানসিক সাপোর্টও প্রয়োজন হয়। সেই বাবার বাকী সন্তানরাও তাদের ছোট ভাইকে পড়াশোনার জন্য মন থেকে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন তাদের সাধ্যমত।

তাশফিকের বাবা বলেন, ‘ অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত তার এই সন্তানকে নিজেই পড়িয়েছেন। অনেক সময় কোন বিষয়ে তার সন্তানকে বোঝাতে অক্ষম হলে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে গিয়ে নিজে সমাধান করে শিখেছেন। তারপর ঘরে এসে পরের দিন সন্তানকে শিখিয়ে সমাধান করার চেষ্টা করেছেন । এমনিভাবে এক ভিডিও বার্তায় আবেগঘন ভাবে ছেলের সাফল্যে কামনা করে দেশবাসির কাছে দোয়া চেয়েছেন।’
তাশফিক  সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার বড়দেশ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০৯ সালে এসএসসি পাশ করে সিলেট শহরের স্বনামধন্য প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান স্কলার্স স্কুল এন্ড কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০১১ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। পরে সিলেট লিডিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেক্টিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং সিজিপিএ ৩.৯৭ পেয়ে কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন। সর্বোচ্চ পয়েন্ট উপর ভিত্তি করে ভাইস চ্যান্সেল কতৃক একটি গোল্ড মেডেলও পান। পরবর্তীতে ছেলের পড়াশোনা আগ্রহ দেখে পরিবারের সহযোগিতায় বিদেশে পড়াশোনা করানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ছেলেকে পাঠিয়ে দেন ফিনল্যান্ড। এমএসসি করতে ভর্তি  হন ইউনিভার্সিটি অব ইস্টার্ন ফিনল্যান্ড। সেখান থেকে ফোটনিক্স (এপ্লাইড ফিজিক্স) মাস্টার্স থিসিস করেন গ্রেড:৫.০০/৫.০০ মার্ক পেয়ে। এই সাফল্যের পরিপেক্ষিতে ৪ বছরের ফুল স্কলারশীপ পেয়ে সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে যান পিএইচডি ডিগ্রী করতে ইউনিভার্সিটি অব অউলো ফিনল্যান্ড এ।
তাশফিকুজ্জামানের এই সাফল্য গ্রামবাসী গর্বিত এবং আত্মীয় স্বজনেরা তার জন্য দোয়া ও ভালবাসা সাধুবাদ জানাচ্ছেন।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.