--- বিজ্ঞাপন ---

ভারতে করোনা টিকা দেয়া শুরু হচ্ছে কাল

অসুস্থ হলে দায় নেবে না মোদি সরকার

0

করোনায় ভারতে মৃত্যুর সংখ্যা ব্যাপক। প্রতিদিন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে কেউ না কেউ। করোনায় মৃত্যু ঠেকাতে শুরু হচ্ছে টিকা দেয়া। ভারতের সেরাম ইতিমধ্যে সারা দেশের চাহিদা মেটাতে টিকা প্রস্তত শুরু করেছে। এরই মধ্যে তৈরি টিকা ভারতের নাগরিকদের শনিবার থেকে দেয়া শুরু হচ্ছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম জানায়, শনিবার শুরু হচ্ছে করোনার টিকাকরণ। সকাল সাড়ে ১০টায় যার আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যে স্বাস্থ্যকর্মীরা ভ্যাকসিন নেবেন, তাঁদের কয়েকজনের সঙ্গে তিনি ভার্চুয়াল মাধ্যমে কথাও বলবেন। কিন্তু তার ঠিক আগে কোভিড-যোদ্ধা বা আপামর জনসাধারণের জন্য খুব স্বস্তিজনক বার্তা কেন্দ্র দিল না। কারণ সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, টিকা নিয়ে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার দায় নেবে না মোদি সরকার। ভ্যাকসিন নিয়েই সমস্যা হয়েছে প্রমাণ হলে, চিকিৎসার যাবতীয় খরচ এবং ক্ষতিপূরণ সংশ্লিষ্ট প্রস্তুতকারক সংস্থাকেই দিতে হবে।

প্রথমদিন পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা দেশের ৩ হাজার ৬টি কেন্দ্রে করোনার টিকা দেওয়া হবে। ক্রমশ এই সংখ্যা বাড়িয়ে অন্তত ৫ হাজার করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্র। প্রতিটি কেন্দ্রে কমপক্ষে ১০০ জন ভ্যাকসিন পাবেন। সেই মতো প্রথমদিনই এক লপ্তে প্রায় তিন লক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর টিকা পাওয়ার কথা। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর প্রত্যেককে আধ ঘণ্টা টিকাকরণ কেন্দ্রেই বসে থাকতে হবে। উদ্দেশ্য একটাই, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কি না, সে সম্পর্কে নিশ্চিন্ত হওয়া। বাড়ি ফেরার পরও থাকবে নজরদারি। ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে পেশিতে টিকার প্রথম ডোজের ২৯ দিনের মাথায় দ্বিতীয়বার সুঁচ ফোটাতে হবে। ওই দ্বিতীয় ডোজের ১৪ দিন পর থেকে কাজ করবে ভ্যাকসিন। আপাতত ৩০ কোটি নাগরিককে সরকারি খরচে টিকা দেওয়া হবে। প্রথম দফায় তিন কোটি কোভিড যোদ্ধা রয়েছেন ‘ইমার্জেন্সি ইউজে’র তালিকায়। তবে রাজ্যগুলিকে চিঠি দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, এই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত হলেও এখনই অন্তঃসত্ত্বা বা সক্রিয় আক্রান্তদের টিকা দেওয়া হবে না।  আট সপ্তাহ আগে যঁারা সুস্থ হয়েছেন, তঁাদের অবশ্য টিকা দিতে সমস্যা নেই।

যদিও সরকার এই ভ্যাকসিনের শুধু ব্যবস্থাই করছে বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার উপর নজরদারি চালাচ্ছে। অসুস্থতার দায় কেন্দ্রের নেই। সেখানে ‘শিখণ্ডি’ ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থা। আইসিএমআর-এর মহামারীবিদ্যা বিভাগের প্রধান ডাঃ সমীরণ পাণ্ডা জানান, ‘কোভ্যাকসিনের চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে। তাই ডিসিজিআইয়ের ছাড়পত্র রেস্ট্রিকটেড বা নিয়ন্ত্রিত। যাকে টেকনিক্যালি চতুর্থ দফার ট্রায়াল বললেও ভুল হয় না। তাই ট্রায়ালে যেভাবে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকেই ক্ষতিপূরণ দিতে হয়, এক্ষেত্রেও তাই হবে। সিরামের ক্ষেত্রেও বিষয়টা এক। কারণ, শনিবার থেকে শুরু হওয়া টিকাকরণ কমর্সূচি সার্বিক নয়। ছাড়পত্রই মিলেছে রেস্ট্রিকটেড ইমার্জেন্সি ইউজের।’ আইসিএমআরের শীর্ষ সূত্রে খবর, টিকাকরণ কর্মসূচিতে কারও মারাত্মক তথা অস্বাভাবিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে তার ক্ষতিপূরণ তথা আইনি বিষয়টি সরকারকে দায়িত্ব নেওয়া জন্য দুই কোম্পানির পক্ষ থেকেই আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু সরকার তা নাকচ করে দিয়েছে। যদিও আদৌ টিকা থেকেই ব্যাপক শারীরিক সমস্যা হল কি না, তা বিচার-বিশ্লেষণ করবে সাইট এথিক্স কমিটি, ডিসিজিআই এবং ডিএসএমবি। তারপর ক্ষতিপূরণ ইস্যুর প্রশ্ন উঠবে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে উঠে আসা যাবতীয় প্রশ্ন উড়িয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডঃ হর্ষ বর্ধন। টি ডি ডোগরা সহ দেশের ৪৯ জন বিশিষ্ট চিকিৎসক এবং গবেষকও বিবৃতি দিয়েছেন, দু’টি ভ্যাকসিনই নিরাপদ। এরইমধ্যে অবশ্য ভ্যাকসিনের নিরাপত্তা তথা বিতরণবিধি সংক্রান্ত প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির অন্যতম সদস্য তথা তৃণমূল এমপি ডাঃ শান্তনু সেন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণের কাছে এ ব্যাপারে ১৭ দফা প্রশ্ন তুলে চিঠি দিয়েছেন তিনি। সূত্রঃ বর্তমান

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.