--- বিজ্ঞাপন ---

মিশরে মমিতে পাওয়া গেলো সোনার জিভ

0

মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া শহরের উপকণ্ঠে একটি মন্দিরের লাগোয়া এলাকায় ১২টি প্রকোষ্ঠে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজ চালাতে গিয়ে বহু মমি উদ্ধার করা হয়। তারই মধ্যে দু’জনের মমিতে ছিল সোনার জিভ। মিশরের পর্যটন ও পুরাতত্ত্ব মন্ত্রকের তরফে শুক্রবার এই আবিষ্কারের খবর দেওয়া হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মৃত্যুর পরও কি আত্মা বেঁচে থাকে। এমন বিশ্বাস অনেকে এখনও করেন। যেমনটি করতেন মিসরীয়রা। তারা আত্মাকে ঘর বন্দী করে রাখতেন। এমনভাবে করতেন যাতে আত্মা সেখান থেকে বের হতে না পারে! মিসরের পিরামিড হলো সেসব আত্মাদের ঘর-বাড়ী। তাদের বিশ্বাস ছিল আত্মা জীবিত আছে, তাই তার খাবারের প্রয়োজন। এমন কি কাপড়-চোপড়ের ব্যবস্থাও করতেন। এসব অদ্ভুত বিষয় সবসময় সক্রিয় থাকতো প্রাচীন মিসরীয়দের মনে। মারা যাওয়া মানুষকে মমি করে পাথরের পাহাড়ের ভেতর রেখে দিতেন তারা। মিসরীয় প্রভাবশালী কোন নেতা বা রাজা মারা গেলে তো কথাই নেই। তার আত্মার ঘর হতো বিশাল। বছরের পর বছর ধরে চলতো এর নির্মান কাজ। এত এত বড় পাহাড় কিভাবে যে তৈরি করেছিল তারা তার কুল কিনারা এখনও কেউ করতে পারেনি। তাই মিসরের পিরামিড হলো পৃথিবীর আশ্চর্য স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্যতম।
প্রাচীন মিসর শাসন করতো ফেরাউনরা। অনেকে মনে করেন ফেরাউন বুঝি কারও নাম। আসলে তা নয়, ফেরাউন কারও নাম না। এটি হলো খেতাব। প্রাচীন মিসরে যারা রাজ্য শাসন করতো তাদের ফেরাউন বলে অভিহিত করা হতো। হযরত মুসা জম্মগ্রহণ করেছিলেন ফেরাউনের আমলে। ফেরাউনদের অনেকে বেঁচে ছিলেন ৪০০/৫০০ বছর! এসব ফেরাউন এতই প্রভাবশালী ছিলেন যে, তাদের মৃত্যুর পর ধন-দৌলতও আত্মার সাথে দিয়ে দেয়া হতো।

মিশরের সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মৃত্যুর পরেও ‘অন্য জীবনে’ যাতে তাঁরা ‘কথা বলতে পারেন’ সে জন্যই তাঁদের মমিতে সোনার জিভ বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল সেগুলি শবাধারবন্দি করার সময়। যে মন্দিরটির লাগোয়া এলাকায় খোঁড়াখুঁড়ি করতে গিয়ে সোনার জিভ বসানো দু’টি মমির হদিশ পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা, সেই মন্দিরটি রয়েছে ভূমধ্যসাগরের উপকূলবর্তী আলেকজান্দ্রিয়া শহরের দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি মফস্‌সলে। মন্দিরে যে দেবতার মূর্তি রয়েছে মিশরীয় ভাষায় তার নাম- ‘টাপোসিরিস মাগনা’।

মমি রাখার ওই ১২টি প্রকোষ্ঠ থেকে সোনার আরও কয়েকটি জিনিসপত্র পাওয়া গিয়েছে। মিলেছে মিশরের মৃত্যুদেবতা ‘ওসিরিস’-এর সোনার মূর্তিও। মৃত্যুর পর মিশরে যে মুখোশ পরানো হত মৃত ব্যক্তিকে (‘ফিউনারাল মাস্ক’), সোনা দিয়ে বানানো সেই মুখোশেরও হদিশ মিলেছে। প্রসঙ্গত, সমাধি দেওয়ার সময়ে মিশরের ফারাও তুতানখামেনকেও সোনার মুখোশ পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর হাত ও পায়ের পাতাও মুড়ে দেওয়া হয়েছিল সোনায়।

মিসরের পিরামিডগুলো হলো আসলে ফেরাউন বা প্রাচীন মিসরীয়দের কবর। মিসরে ৭৫টি পিরামিড আছে। সবচেয়ে বড় আকর্ষনীয় পিরামিডটির নাম গীজার পিরামিড। উচ্চতা প্রায় ৪৮১ ফুট। সাড়ে সাত’শ বর্গফুট জমির উপর এটি নির্মিত। মিসরের পাথর খন্ডের এক একটির ওজন ছিল প্রায় ৬০ টন! দৈর্ঘ্য ৪০ থেকে ৫০ ফুট। বহুদুর থেকে এগুলো এনে জোড়া লাগানো হতো। মানুষরাই এগুলো রশি বেধেঁ টেনে টেনে আনতো। অনেক চিত্রে এসব পিরামিড তৈরির কষ্টকর দৃশ্য ফুটে রয়েছে। এই পিরামিড এমনভাবে নির্মান করা হয়েছিল যাতে বিন্দুমাত্র কোন ফাঁক না থাকে। পাথরের এসব নির্মান শৈলি আজও মানুষের মনে নানা রহস্যেও জম্ম দেয়। এখনও মিসরের অনেক মানুষ পুরানো দিনের এসব বিশ্বাস লালন করে চলেছে। ## সূত্রঃ আনন্দবাজার

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.