--- বিজ্ঞাপন ---

কোরিয়ার তথ্য প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট পণ্যের চাহিদা রয়েছে বাংলাদেশে

বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়া ডিজিটাল কনক্লেভ" শীর্ষক ওয়েবিনারে রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম

0

 

সিউল প্রতিনিধি

“বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়া: ডিজিটাল কনক্লেভ” শীর্ষক একটি ওয়েবিনার সিউলস্থ বাংলা দেশ দূতাবাসের আয়োজনে ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ তারিখে দক্ষিণ কোরিয়ার স্থানীয় সময় বেলা দু’টায় এবং বাংলাদেশ সময় বেলা ১১ টায় অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত ওয়েবিনারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ দু’দেশের তথ্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন-যা ছিল দুই দেশের শুধুমাত্র তথ্য প্রযুক্তি খাতকে কেন্দ্র করে দূতাবাসের কর্তৃক আয়োজিত প্রথম উদ্যোগ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) শাব্বির আহমদ চৌধুরী তাঁর প্রারম্ভিক বক্তব্যে বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি খাত, এর সম্ভাবনা এবং সাম্প্রতিকালে এখাতে রফতানির অভূতপূর্ব প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে আলোকপাত করেন। তিনি বাংলাদেশের ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের (জনসংখ্যাতাত্ত্বিক লভ্যাংশ) কথা উল্লেখ করে এই অনন্য সুযোগটি গ্রহণের জন্য দক্ষিণ কোরিয়া সহ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানান।
KOEXIMA ও KOTIPA-এর চেয়ারম্যান Howard Jung তাঁর বক্তব্যে বলেন যে, তথ্য প্রযুক্তির স্বমন্বয় ঘটিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া মোটরযান, যন্ত্রপাতি, জাহাজ নির্মাণ, অবকাঠামো নির্মাণ, স্বাস্থ্য এবং টেক্সটাইল শিল্পে পরিবর্তন এনেছে। দক্ষিণ কোরিয়া তার এই প্রযুক্তি ও দক্ষতা ব্যবহার করে এ জাতীয় শিল্প বিকাশে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। এরপর, দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্রসমূহ উল্লেখ করে KOEXIMA ‘দক্ষিণ কোরিয়া এবং এর তথ্য প্রযুক্তি খাত’ শীর্ষক একটি বিশদ উপস্থাপনা প্রদান করে ।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)-এর সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির তাঁর বক্তব্যের পাশাপাশি তাঁর বিস্তৃত উপস্থাপনায় বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে বেসিসের কার্যক্রম ও উদ্যোগ সম্পর্কে আলোকপাত করেন। তিনি দু’দেশের তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থার প্রতিনিধিদের মধ্যে নিয়মিত মতবিনিময় ও দ্বিপাক্ষিক সফরের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। বেসিসের সিনিয়র সহ-সভাপতি মিস ফারহানা রহমান বাংলাদেশের ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়া বিশেষত ই-গভর্নেন্সের উপর আলোকপাত করেন। তিনি ডিজিটাল ডিভাইস তৈরিতে প্রযুক্তিগত সহায়তা ও আর্থিক বিনিয়োগের আহ্বান জানান- যা বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাত হিসাবে বিবেচিত ।
অতঃপর, TiCON System Ltd.-এর এম এন ইসলাম, ‘ বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে তথ্য প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা’ ‘শীর্ষক উপস্থাপনায় দু’দেশের মধ্যেকার সম্ভাব্য সহযোগিতার ক্ষেত্রসমূহের উপর আলোকপাত করেন।
এরপর ওয়েবিনারে অংশগ্রহণকারী কোরিয়ান প্রতিষ্ঠানসমূহ যেমন-SAMSUNG, Korea Productivity Center, Korea Innovation Promotion Association, Cyber University of Korea, Global Control System Company-এর প্রতিনিধিবৃন্দ তাদের বক্তব্যে তাদের সংস্থাসমূহের চলমান উদ্যোগসমূহ নিয়ে আলোচনা করবার পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে এ খাতে সহযোগিতার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দ্বিপক্ষীয় গবেষণার উপর জোর দেন। পরে, প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণকারীরা অন্যান্য খাতের পাশাপাশি semiconductor শিল্পে সহযোগিতা প্রতিষ্ঠাসহ বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন পেশাজীবিদের জন্য অনলাইনে তথ্য প্রযুক্তিগত শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার বিষয়ে আলোচনা করে।

রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বলেন, কোরিয়ার তথ্য প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট পণ্যগুলির বাংলাদেশে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। ভোক্তাদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে কোরিয়ার তথ্য-প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের উপস্থিতি বাংলাদেশে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোরিয়ার ক্ষুদ্র এবং মাঝারী উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশের বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের আহবান জানিয়ে তিনি বলেন যে কেবলমাত্র শ্রম-নিবিড় উৎপাদনের জন্য নয় বরং বাংলাদেশী তরুন, উদ্যমী ও মেধাবী উদ্যোক্তাদের দ্বারা পরিচালিত উচ্চতর প্রযুক্তি, পণ্য ও পরিষেবাদি রফতানির গন্তব্যস্থল হিসাবে এখন থেকে বাংলাদেশকে বিবেচনা করতে হবে। তিনি আরো জানান যে, এই ওয়েবিনারটির মাধ্যমে একটি প্রক্রিয়ার সূত্রপাত হলো যার মাধ্যমে বাংলাদেশ কোরিয়ার তথ্য-প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট মূলধারার সংস্থাগুলি এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলির সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারবে।
সিউলস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের বাণিজ্যিক কাউন্সেলর কর্তৃক প্রদত্ত ধন্যবাদ প্রদানের মাধ্যমে ওয়েবিনারটির সমাপ্তি ঘটে।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.