--- বিজ্ঞাপন ---

আমেরিকা থেকে ৩ বিলিয়ন ডলারের ড্রোন কিনতে যাচ্ছে ভারত

সামরিক শক্তির পেছনে ব্যয় বাড়ছে (৩য় পর্ব)

0

সাম্প্রতিক সময়ে চীন এবং পাকিস্তানের সাথে অতি মাত্রায় সীমান্ত উত্তেজনা এবং যুদ্ধ পরিস্থিতির মুখে ভারত তার জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অত্যাধুনিক ৩০টি এমকিউ-৯ প্রিডেটর ড্রোন (ইউএভি) ক্রয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করতে যাচ্ছে। মুলত মার্কিন সংস্থা জেনারেল অ্যাটমিক্সের উৎপাদিত এই জাতীয় অত্যাধুনিক ৩০টি ড্রোন খুব সম্ভবত আগামী মাসে ৩,০০০ মিলিয়ন ডলার বা ৩ বিলিয়ন ডলারে ক্রয়চুক্তি সম্পন্ন করতে পারে ভারতের মোদি সরকার। প্রাথমিক ভাবে ভারতের সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনীর জন্য ১০টি করে এমকিউ-৯ প্রেডিটর ড্রোন সংগ্রহ করা হবে। যদিও ভারত এখনো পর্যন্ত ইসরাইলের তৈরি হেরন-টিপি এবং হ্যারোপ কমব্যাট ড্রোন (ইউএভি) ব্যবহার করে যাচ্ছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এমকিউ-৯ রিপার/প্রেডিটর সিরিজের ড্রোন গুলোকে আকাশ পথে যে কোন প্রতিকূল পরিবেশে শত্রু সীমানায় নজরদারি চালানোর পাশাপাশি ভয়াবহ মিসাইল হামলা চালানোর উপযোগী করে ডিজাইন করা হয়েছে। আর এই চুক্তির ফলে ভারতের সামরিক সক্ষমতা যে অনেকখানি বৃদ্ধি পেল তাতে সন্দেহের কোন অবকাশ থাকে না। তাছাড়া মার্কিন এই ড্রোন ইতোমধ্যেই ইরাক, সিরিয়া এবং আফগানিস্থানে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।

আসলে ২০২০ সালের শুরুর দিকে ইরাকের রাজধানী বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের কাছে নিদিষ্ট দুরুত্ব বজায় রেখে মার্কিন এমকিউ-৯ কমব্যাট রিপার ড্রোন তার হেলফায়ার মিসাইলের মাধ্যমে ইরানের বিপ্লবী বাহিনী (আইআরসিজি) এর প্রধান কমাণ্ডার কাসেম সোলাইমানীর গাড়ি বহরকে হীট করে বসে। তখন আচমকা আকাশ থেকে একটি ‘মৃত্যুদূত’ এসে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছিল তাঁর গাড়ি বহর। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ইরানী কমাণ্ডার কাসেম সোলাইমানীর। আর এখন সেই একই ভয়ঙ্কর কমব্যাট ড্রোন ভারতের সামরিক বাহিনীতে অন্তভুক্ত করার প্রক্রিয়া এক রকম চূড়ান্ত হবার পথে। আগামী মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিব ভারতে আসার সময় এই বিশাল চুক্তি সরকারিভাবে ঘোষণা করা হতে পারে। যদিও ভারতকে প্রবলভাবে চাপে রাখার কৌশলের অংশ হিসেবে পাকিস্তানকে আধুনিক ড্রোন প্রযুক্ত সরবরাহ করে যাচ্ছে রেড জায়ান্ট চায়না।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এমকিউ-৯ সিরিজের কমব্যাট ড্রোনটি আকাশ পথে কার্যকরভাবে নজরদারী চালানোর পাশাপাশি কোন চালক ছাড়াই শত্রু পক্ষের টার্গেটে নির্ভুলভাবে তীব্র আঘাত হানতে সক্ষম। তাছাড়া এটি মোট ১,৭০০ কেজি পর্যন্ত মিসাইল এবং গাইডেড বোম্বস নিয়ে টানা ২৪ ঘন্টা আকাশে তার মিশন পরিচালনা করতে পারে। এর ফলে এমকিউ-৯ ড্রোন নিজ বাহিনীর প্রাণহানী এড়িয়ে শত্রু পক্ষের শিবির এক মুহুর্তে ধ্বংস করে দিতে পারে।

বর্তমান সময়ে আধুনিক ড্রোন প্রযুক্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইসরাইল, তুরস্ক, ইরান এবং চীন ব্যাপক অগ্রগতি লাভ করেছে। অবে চীন সিএইচ-৩/৪/৫ এবং উইংলুং-২/৩ ইত্যাদি সিরিজের শত শত কমব্যাট ড্রোন সার্ভিসে আনলেও তা কিন্তু সক্ষমতা এবং প্রযুক্তিগত বিচারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অপেক্ষা অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। তাছাড়া মার্কিন বাহিনী ২০০১ সাল থেকেই যুদ্ধক্ষেত্র সাফল্যের সাথে কমব্যাট এবং নজরদারি ড্রোন ব্যবহার করে আসলেও চীনের বাস্তব যুদ্ধে ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা এখনো পর্যন্ত অনেকটাই পিছনে পড়ে রয়েছে।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.