--- বিজ্ঞাপন ---

লড়ছে ফিলিস্তিন, এ পর্যন্ত নিহত ১২২

0

ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জাদিন কাসসাম ব্রিগেড শুক্রবার রাতে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ইসরাইলের রাজধানী তেল আবিবের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে বেশ কয়েকটি রকেট নিক্ষেপ করেছে। তবে এসব রকেট হামলায় ইসরাইলের ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত খবর প্রকাশ করা হচ্ছে না। ইহুদিবাদী গণমাধ্যমগুলো এ পর্যন্ত ৯ ইসরাইলির নিহত হওয়ার খবর দিলেও অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি বা এ সংক্রান্ত ছবি প্রকাশ করছে না।এদিকে ইহুদিবাদী ইসরাইলি সেনাবাহিনী শুক্রবার জানিয়েছে, গাজায় তাদের আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে গত প্রায় এক সপ্তাহে তারা ওই উপত্যকা থেকে নিক্ষিপ্ত প্রায় ২,০০০ রকেট গুলি করে ভূপাতিত করেছে।

ইসরাইলি সেনারা গাজার বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সেইসঙ্গে নৌ ও স্থলপথে গাজাবাসীকে লক্ষ্য করে কামান ও ভারী মর্টারের গোলাবর্ষণ করে যাচ্ছে দখলদার সেনারা। গাজা-ভিত্তিক ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের ভয়াবহ আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ৩১ শিশু ও ২০ নারীসহ ১২২ ফিলিস্তিনি শহীদ এবং অন্তত ৯০০ জন আহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনিদের রকেট হামলায় ইসরাইল জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অবৈধ এ রাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে মুহুর্মুহু রকেট হামলার সময় সাইরেনের বিকট শব্দে স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এবং প্রাণ বাঁচাতে ইসরাইলিরা বেশিরভাগ সময় ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে সময় কাটাচ্ছে। এক সময় ইসরাইলি ট্যাংকের সামনে যে ফিলিস্তিনিরা শুধু পাথর নিক্ষেপ করে প্রতিবাদ জানাত আজ তাদের এই সামরিক সক্ষমতাকে দু’পক্ষের শক্তির ভারসাম্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন বলে বিশ্লেষকরা মন্তব্য করছেনG

হামাসের মুখপাত্র ফৌজি বারহুম শুক্রবার বিকেলে এক বিবৃতিতে গাজা ও পশ্চিমতীরের জনগণের ইসরাইল বিরোধী সাহসী প্রতিরোধের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণের মধ্যে যে ঐক্য ও সংহতির বন্ধন গড়ে উঠেছে এ ঘটনায় তা প্রমাণিত হয়েছে। হামাসের এই প্রভাবশালী নেতা বলেন, এবারের সংঘাত শুরু হয়েছে পশ্চিম তীরের বায়তুল মুকাদ্দাসের অধিবাসী ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে গাজা থেকে ইসরাইল-বিরোধী হামলার মাধ্যমে। কাজেই ইহুদিবাদী ইসরাইলকে ধ্বংস করার আন্দোলনে সমগ্র ফিলিস্তিনবাসীর একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

সম্প্রতি পবিত্র রমজান মাসের শেষ দিনগুলোতে পশ্চিম তীরের বিভিন্ন শহরে বিশেষ করে বায়তুল মুকাদ্দাসের ফিলিস্তিনিদের ওপর ব্যাপক দমন অভিযান চালায় ইহুদিবাদী ইসরাইলি সেনারা। এ ঘটনার প্রতিবাদে গত সোমবার তেল আবিবকে চূড়ান্ত সময়সীমা বেধে দেয় হামাস।

এদিকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের একটি বিমানঘাঁটি, দুটি আয়রন ড্রোম স্টেশন এবং একটি রাসায়নিক কারখানায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে হামাস। ইসরাইল বাহিনী বিমানঘাঁটিটি গাজা উপত্যকার অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনিদের ওপর বিমান হামলা চালানোর জন্য ব্যবহার করে আসছিল।

হামলা সম্পর্কে ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সামরিক শাখা ইজাদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেড এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমরা ইসরাইলের হাতজেরিম বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে সিজ্জিল ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছি। এই বিমানঘাঁটি থেকে ইহুদিবাদীদের জঙ্গিবিমান উড়ে গিয়ে গাজার জনগণের ওপর হামলা চালাচ্ছিল।” হামাস আরো বলেছে, তারা নেজেভ মরুভূমির নাহাল ওজ কিবুৎজ রাসায়নিক কারখানায় আত্মঘাতী শিহাব ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে। এর আগে হামাস অন্য এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, তারা কয়েকটি আত্মঘাতী ড্রোন দিয়ে ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালিয়েছে। ইসরাইলের সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা এ ধরনের দুটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে।

শুক্রবার গাজাঁ থেকে ছোঁড়া রকেট ইসরাইলের আশকেলন শহরের একটি ভবনে আঘাত হানে তবে ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায় নি। এছাড়া আশদোদ, সেদরত ও শা’আর হানেজেভ অঞ্চলে রকেট হামলা সম্পর্কে সতর্ক করে সাইরেন বাজানো হয়। গতরাতে দুপক্ষের মধ্যে প্রচণ্ড লড়াই হয়েছে। হামাস জানিয়েছে, গত কয়েক ঘণ্টায় তারা ইসরাইলকে লক্ষ্য করে ২৫০টি রকেট ছুঁড়েছে। অন্যদিকে, ইহুদিবাদীদের বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। ইসরাইল জানিয়েছে, আজ সকালে ১৬০টি বিমান একযোগে ওড়ে এবং গাজার ওপর বোমাবর্ষণ করে। হামাসের টানেল ধ্বংস করার জন্য এই হামলা চালানো হয় বলে ইসরাইল দাবি করছে।

বসে নেই লেবাননের হিজবুল্লাহ। গাজাভিত্তিক প্রতিরোধকামী সংগঠন হামাস ও ইসলামি জিহাদ আন্দোলনের সঙ্গে  লেবাননের হিজবুল্লাহর বিশেষ ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।  ইসরাইলের সঙ্গে ২০০০ ও ২০০৬ সালে হিজবুল্লাহর বড় রকমের যুদ্ধের অভিজ্ঞতা রয়েছে যার কারণে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরাইলি সেনারা পালাতে বাধ্য হয়েছে।

এদিকে, লেবানন থেকে ইসরাইল অভিমুখে রকেট ছোঁড়ার আগে ইরাকের আন-নুজাবা আন্দোলনের মহাসচিব শেখ আকরাম আল-কা’বি গাজার প্রতিরোধকামী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তিনি এ সময় তার সংগঠনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেন। শেখ আকরাম ইসরাইলকে সতর্ক করে বলেছেন, তার যোদ্ধাদের হাতে এমনসব অস্ত্র রয়েছে যা ইসরাইলের গভীরে আঘাত হানতে পারে। সূত্রঃ পার্স টুডে

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.