--- বিজ্ঞাপন ---

ইউক্রেনের সাথে তুরস্কের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে রাশিয়ার হুশিয়ারী

0

বৃটিশ নিউজ এজেন্সি রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী জানা যায় যে, ইউক্রেনের সাথে তুরস্কের অতি মাত্রায় ঘনিষ্ঠ কূটনীতিক এবং সামরিক সহযোগিতামুলক সম্পর্ককে মোটেও সুনজরে দেখছে না রাশিয়ার পুতিন প্রশাসন। এদিকে রাশিয়ার প্রশাসনের তরফে তুরস্কের সঙ্গে ইউক্রেনের সামরিক সম্পর্ক বৃদ্ধির ঘটনায় চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছে রেখেছে দেশটি। বিশেষ করে চলতি ২০২১ সালের ২৫শে মে সোমবার রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ সাফ জানিয়ে দেয় যে, সাম্প্রতিক সময়ে তুরস্কের এরদোয়ান প্রশাসনের ইউক্রেনে সাথে কূটনৈতিক এবং সামরিক সম্পর্ক ইউক্রেনের রাশিয়া বিরোধী সামরিক মনোভাবে রসদ যোগাবে এবং তুরস্কের সাথে রাশিয়ার বন্ধুভাবাপন্ন সম্পর্ককে মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করবে।

এদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান গত এপ্রিল মাসে ইউক্রেনের সীমান্ত সুরক্ষায় ইউক্রেনকে প্রতিশ্রুতি দেন যে, সুবিশাল ইউক্রেন-রাশিয়া সীমান্তের কাছে বিশেষ করে ক্রিমিয়ায় রুশ সামরিক বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতির জবাবে এবং রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসন রুখে দিতে ইউক্রেনের সামরিক সামর্থ্য বৃদ্ধি করতে চায় তুরস্ক। এরদোয়ান ওই সময় বলেছিলেন, বিদেশি পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের নিয়ে একটি মঞ্চ গঠন করছে ইউক্রেন। এই মঞ্চে প্রতিরক্ষা শিল্পে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হবে। তবে এটি কোনও তৃতীয় দেশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নয়।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে তুরস্ককে পরামর্শ দিচ্ছি যে, তারা যেন অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পরিস্থিতি মূল্যায়ন এবং কিয়েভের সামরিক মনোভাবে রসদ যোগানো থামানোর জন্য চেষ্টা করে। তাছাড়া তিনি আরও বলেন, ক্রিমিয়াকে কেন্দ্র করে ইউক্রেনের আগ্রাসী পদক্ষেপকে উৎসাহ দেওয়া রাশিয়ার আঞ্চলিক অখণ্ডতার সীমা লঙ্ঘন এবং আমরা আশা করি যে, তুরস্ক রাশিয়ার বৈধ উদ্বেগের ভিত্তিতে নিজেদের সীমারেখা সমন্বয় করবে এবং ইউক্রেনের হাতে অতি ধ্বংসাত্বক অস্ত্র ও ড্রোন তুলে দেয়া থেকে বিরত থাকবে।

যদিও ইউক্রেন-রাশিয়া সীমান্ত দ্বন্দ এবং সামরিক উত্তেজনার মূল কারণ কিন্তু রাশিয়া নিজেই। আসলে রাশিয়া বিভিন্নভাবে ইউক্রেনকে আবার নিজ দখলে নিতে চায় এবং ক্রিমিয়া দখলের আসল নাটের গুরু ছিল রাশিয়ার সেনাবাহিনী। বর্তমানে রাশিয়ার পার্শ্ববর্তী অধিকাংশ দেশকেই আজ কিন্তু রাশিয়ার নব্য আগ্রাসী এবং সামরিক হুমকী মোকাবিলা করে টিকে থাকতে হচ্ছে। বিশেষ করে ১৯৯১ সালের স্বাধীনতার কিছু বছর পর থেকেই জর্জিয়া এবং ইউক্রেনের সাথে রাশিয়ার চরম দ্বন্দ এবং সামরিক উত্তেজনা বিরাজ করছে।

২০১৪ সালে রাশিয়ার প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ এবং উস্কানিতে ইউক্রেন থেকে ক্রিমিয়ার বিচ্ছিন্ন হওয়ার তীব্র সমালোচনা করেছিল ন্যাটো জোটভুক্ত সদস্য দেশ তুরস্ক। ওই সময়েও ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এরদোয়ান। ২০১৯ সালে কিয়েভের কাছে সামরিক ড্রোনও বিক্রি করে আঙ্কারা। একই সঙ্গে সিরিয়া, লিবিয়া ও নাগোরনো-কারাবাখ সংকটে রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করেছে তুরস্ক। তবে এখানে প্রকাশ থাকে যে, রাশিয়ার সাথে কৌশলগত কারণে তুরস্ক সম্পর্ক তৈরি করলেও দেশ দুটির মাঝে দীর্ঘ সময় ধরে এক রকম মনস্তাত্ত্বিক এবং ছায়া দ্বব্দ চলে এসেছে। তাছাড়া সিরিয়া, লিবিয়া কিংবা আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান যুদ্ধের প্রতিটি ক্ষেত্রে রাশিয়ার অন্যতম মূল প্রতিপক্ষ হিসেবে তুরস্কের নাম উঠে এসেছে সবার উপরে।#

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.