--- বিজ্ঞাপন ---

তুরস্কের নতুন এন্টিশীপ মিসাইল আতমাকা, সফল পরীক্ষা সম্পন্ন

মিসাইল কিনছে বাংলাদেশ

0

 

কাজী আবুল মনসুর / সিরাজুর রহমান

তুরস্ক চলতি ২০২১ সালের ৩-৪ ফেব্রুয়ারি নিজস্ব প্রযুক্তির তৈরি সারফেস টু সারফেস ‘আতমাকা’এন্টিশীপ মিসাইলের সফল পরীক্ষা সম্পন্ন করে। আসলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি হারপুন এন্টিশীপ মিসাইলের নিজস্ব বিকল্প হিসেবে তুরস্ক আতমাকা এন্টিশীপ মিসাইলের ম্যাসিভ প্রডাকশন লাইন শুরু করতে যাচ্ছে। আতমাকা এন্টিশীপ মিসাইল ডিজাইন করে তুর্কী রকেটসান কোম্পানি। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ব্যাপক গবেষণা এবং উন্নয়ন সাধন করে তুর্কী এসএসবি এবং রকেটসান ২০১৮ সালে যৌথভাবে গণ উৎপাদনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। এটি প্রথম পরীক্ষা করা হয় ৮ই মে ২০০৯ সালে। যে কোন প্রতিকূল পরিবেশ নিখুঁতভাবে শত্রু পক্ষের জাহাজকে ধ্বংস করার জন্য বিশেষভাবে আতমাকা গাইডেড এন্টিশীপ মিসাইল ডিজাইন করা হয়েছে। ৮০০ কেজি ওজনের এই মিসাইলের এক্টিভ অপারেশনাল রেঞ্জ ২০০ কিলোমিটার। ৪.৮-৫.২ মিটার দৈর্ঘ্যের এন্টিশীপ মিসাইলের ডায়ামিটার ০.৩৫ মিটার এবং ইউনস্প্যান ১.৪ মিটার। আতমাকা গাইডেড এন্টিশীপ মিসাইলে একটি ২৫০ কেজি ওজনের হাই-এক্সপ্লুসিভ পেনেট্রাটিং ওয়াহেড যুক্ত করা হয়েছে।  হচ্ছে তুরস্কের এটি তুরস্কের প্রথম নিজস্ব উদ্ভাবিত এন্টি-শিপ মিসাইল। শীঘ্র এটি যুক্ত হবে তুরস্কের রণতরীতে।

আতমাকা মিসাইল ২০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে সঠিকভাবে আঘাত করে ধ্বংস করেছে। আতমাকা একটি সারফেস টু সারফেস মিসাইল। আধুনিক এ গাইডেড মিসাইল যে কোনো আবহাওয়ায় ব্যবহারযোগ্য। এতে রয়েছে প্রতিপক্ষের বাধা ভেদ করার সিস্টেম। এমনকি নিক্ষেপ করার পর এর লক্ষ্য পরিবর্তন এবং বাতিল করা যায়। প্রতিপক্ষের ইলেকট্রনিক জ্যামিং সিস্টেমও এর হামলা প্রতিহত করতে পারে না। এর ইঞ্জিন হিসেবে Safran Microturbo TRI-40 Kale KTJ3200 ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। এর গতি সাবসনিক ০.৯ ম্যাক হলেও অনেকটা স্টিলথ ক্যাপাবিলিটি হওয়ায় এবং সমুদ্র পৃষ্ঠের একেবারে নিচু থেকে ফ্লাইট করার সক্ষমতা থাকায় এটিকে শত্রু পক্ষের রাডার সনাক্ত করাটা প্রায় অসম্ভব বলা চলে। আতমাকা এন্টিশীপ মিসাইলটিকে সমুদ্র ভিত্তিক ফ্রিগেট, কর্ভেট, প্রেট্রোল বোটস এবং সমুদ্র তীরবর্তী কোস্টাল ডিফেন্স ব্যাটারি প্লটফর্মে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে।

তুরস্ক থেকে মিসাইল কিনছে বাংলাদেশ

এদিকে তুরস্ক থেকে বাংলাদেশও অস্ত্র আমদানি করছে। আগামী মাসে তুরস্ক থেকে ৩শ কিলোমিটার রেঞ্জের মিসাইল আসার কথা রয়েছে । তুরস্কের সাথে ঘনিষ্ট যোগাযোগ রয়েছে বাংলাদেশের। এ সর্ম্পক আরও জোরদার করতে প্রথমবারের মতো মিসাইল ক্রয় করছে বাংলাদেশ । টিআরজি ৩০০ নামের মিসাইল সিস্টেমটি আগামী জুনের ২১ তারিখে বাংলাদেশে সরবরাহ করা হবে বলে তুরস্কের ডিফেন্স মিনিস্ট্রির এক ট্ইুটারে বলা হয়েছে। তুর্কি রকেসটান কর্পোরেশন মিসাইল সিস্টেমটি বানিয়েছে। মিসাইলটি লম্বায় ৩০ ফুট ২ ইঞ্চি, ক্যালিবার ১২ ইঞ্চি।

টিআরজি ৩০০ মিসাইল সিস্টেমকে আরো উন্নত করে ৩০০ কিলোমিটার পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম করে বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে বলে তুরস্কের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। ডিফেন্সিয়া ডট কম নামের একটি অনলাইন পোর্টালে দাবি করা হয়েছে, এই মিসাইল ক্রয় ছাড়াও ২০১৯ সালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী এফ-৭ নামের লেসার গাইড বোম্ব ক্রয় করেছে। এ ছাড়াও এটমাকা এন্টিশিপ মিশাইল ক্রয় করেছে করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। যে মিসাইল সিস্টেমটি ২০২০ সালে তুরস্কের নৌবাহিনীতে সংযুক্ত করা হয়েছে। এই এন্টিশিপ মিসাইলটি যেকোন ওয়েদারেই ব্যবহার করা যায়।

ডিফেন্সিয়া ডট জানায়, বাংলাদেশ তুরস্কের কাছ থেকে এয়ার ক্রাফট, এরিয়াল ভেহিক্যাল, এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, আর্মার্ড ভেহিক্যাল, এ্যাটাক হেলিকপ্টার, আর্টিলারি সিস্টেম, ইলেকট্রিক্যাল ওয়ারকেয়ার সিস্টেম, রেডিও কমিউনিকেশন সিস্টেম ক্রয়ের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ২০০৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিশ্বে তুরস্কের অস্ত্র রপ্তানি বেড়েছে ১৭০ শতাংশ। বাংলাদেশও তুরস্কের অস্ত্রের অন্যতম ক্রেতা। বর্তমানে তুরস্ক থেকে বাংলাদেশ প্রতি বছর প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে। ২০১৭ সালে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেডলোড বাংলাদেশ সফর করেছেন। এ সময়ে তিনি বাংলাদেশে অস্ত্র বিক্রি ও বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথবিনিয়োগে অস্ত্র কারখানা স্থাপনের আগ্রহও প্রকাশ করেছিলেন।#

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.