--- বিজ্ঞাপন ---

করোনা নিয়ন্ত্রনে ৫ হাজার কোটি ডলার দিতে বললো ৪ আন্তর্জাতিক সংস্থা

0

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু), বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এবং বিশ্ব ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা মঙ্গলবার প্রকাশিত এক যৌথ বিবৃতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে ৫০০০ কোটি মার্কিন ডলার দিয়ে কোভিড-১৯ মহামারী দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনার আহ্বান জানিয়েছে। বিবৃতিতে ন্যায্যতার ভিত্তিতে সকল দেশে টিকার বিতরণ নিশ্চিত করার আহ্বানও জানানো হয়।
পাশাপাশি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আদ্‌হানম, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক এনগোজি ওকোনজো ইউয়েয়ালা, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিভা এবং বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মালপাস গতকাল (মঙ্গলবার) বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পত্রিকায় একই নিবন্ধ প্রকাশ করেন। নিবন্ধে বলা হয়, ধনী ও গরীব দেশের মধ্যে টিকা বিতরণের ক্ষেত্রে বড় ব্যবধান রয়েছে। এ কারণে নভেল করোনা ভাইরাসের মিউটেশন অব্যাহত আছে। ভাইরাসের এসব নতুন নতুন রূপ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নতুন দফা মহামারীর বিস্ফোরণ ঘটায় ও ঘটাচ্ছে।
নিবন্ধে আরও বলা হয়, টিকা হলো এ বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসংকটের চূড়ান্ত সমাধান এবং বিশ্বের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। কোভিড-১৯ মহামারীর কবল থেকে মানবজাতি তখনই চূড়ান্তভাবে রেহাই পাবে, যখন এর বিরুদ্ধে বৈশ্বিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
নিবন্ধে সারা বিশ্বকে ৫০০০ কোটি মার্কিন ডলার অনুদানের মাধ্যমে বৈশ্বিক টিকা পরিকল্পনাকে সমর্থন দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
গতকাল (মঙ্গলবার) এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বলেন, “প্রশ্ন উঠতে পারে যে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল টিকা নিয়ে এতো মাথা ঘামাচ্ছে কেন? আমরা উদ্বিগ্ন, কারণ মহামারীর কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পুরুদ্ধারের গতি অনেক কমে গেছে এবং তা সব দেশের ওপরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আমাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অল্প সময়ের মধ্যে সারা বিশ্বের মানুষকে টিকার আওতায় আনা হলো বৈশ্বিক উত্পাদন বৃদ্ধির সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি। অন্য কথায়, টিকানীতি হলো অর্থনীতি।”
৫০০০ কোটি মার্কিন ডলারের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে, ২০২৫ সালে ৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক আউটপুট হবে। এর ৬০ শতাংশ উদীয়মান বাজার ও উন্নয়নশীল দেশের কাছে যাবে; বাকি ৪০ শতাংশ উন্নত দেশগুলোতে যাবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আদ্‌হানম একই সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “এ পরিকল্পনাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। কারণ, পরিকল্পনা অনুযায়ী অধিকাংশ অর্থ সহায়তা হিসেবে দেওয়া হবে, বিশেষ করে টিকার সরবরাহের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে। এতে চিকিত্সা, অক্সিজেন, বিভিন্ন সরঞ্জাম এবং টিকার উত্পাদন দ্রুত বাড়বে এবং তা ন্যায়সঙ্গত বিতরণের জন্য সহায়ক হবে।”
বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মালপাস বলেন, “বর্তমানে সবচেয়ে জরুরি কাজ হলো সকল দেশের জন্য টিকাকে সহজলভ্য করা। বিশ্ব ব্যাংক এর জন্য ১২০০ কোটি মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছে। জুন মাসের শেষ দিকে আমরা ৫০টিরও বেশি দেশে টিকা কার্যক্রম শুরু করবো।”
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক এনগোজি ওকোনজো ইউয়েয়ালা সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “এখন টিকানীতি মানেই বাণিজ্যনীতি। বাণিজ্যিকভাবে ব্যবস্থা না-নিলে টিকার উত্পাদন বাড়ানো কঠিন। টিকার অভাব মেটাতে হবে, নইলে টেকসই বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে না। বৈশ্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে মানুষের জীবন রক্ষা করতে চাই আমরা।”
সাংবাদিক সম্মেলনে চারটি আন্তর্জাতিক সংস্থা যৌথভাবে সহযোগিতা চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল স্পেশাল ড্রয়িং রাইটস (এসডিআর) বিতরণ করবে, যাতে এর সদস্যদের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত ও ব্যবহারযোগ্য অর্থ বেড়ে যায়; হু অর্থের উত্স দ্রুত খুঁজে বের করবে; চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্ব ব্যাংক অন্তত ৫০টি দেশে টিকা কার্যক্রম চালু করবে; আর বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা সরবরাহ চেইন সুনিশ্চিত করবে।#

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.