--- বিজ্ঞাপন ---

সাগরে পানির উচ্চতা বাড়ছে ॥ হুমকির মূখে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার শহর

0

বঙ্গোপসাগরের পাড়ে গড়ে উঠেছে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত চট্টগ্রাম শহর। একই সাথে পর্যটন নগরী কক্সবাজারও। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারনে বঙ্গোপসাগরের প্রতি বছর একের পর এক ঘূর্ণিঝড় ও টর্ণেডোর সৃষ্টি হচ্ছে। নতুন করে সৃষ্টি হওয়া প্রতিটি ঝড়ের তিব্রতা পূর্বের চেয়ে বেশি হওয়ার কারনে নানা শঙ্কাও বাড়ছে। প্রতি বছর ৪ থেকে ৫টি ঘূর্ণিঝড় সাগরে সৃষ্টি হচ্ছে। হয় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার না হয় ভারতের উড়িষ্যা বা সুন্দরবনের উপর দিয়ে আঘাত হানছে। চট্টগ্রামে সর্বশেষ ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসে প্রায় দেড় লাখ মানুষ মারা গেছে। পরবর্তি ঝড়গুলোতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি না হলেও দিনের পর দিন বাড়ছে সাগরের উচ্চতা।
সূত্র মতে, ১৯৭০ সালে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড়ে মারা গেছে ৪ থেকে ৫ লাখ মানুষ। এর পর ১৯৯১ সালের ঝড়ে মারা গেছে প্রায় দেড় লাখেরও বেশি মানুষ। ১৯৯৯ সালে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড়ে উড়িষ্যাই মারা গেছে ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ। পরে দেখা যায় বছরে ছোট-বড় ৪ থেকে ৫টি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানছে। বলা হচ্ছে, ইতিহাসে বিশ্বের ভয়াবহ ৩৬টি ভয়ংকর সাইক্লোনের মধ্যে ২৬টি সৃষ্টি হয়েছে বঙ্গোপসাগরে। এ সব ঝড়ের বেশিরভাগই গেছে হয় বাংলাদেশের উপর দিয়ে, না হয় পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে। আর এসব ঝড়ে মারা গেছে প্রায় ২০ লাখ মানুষ। ঝড়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাগরের পানির উচ্চতা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরের তলদেশে ফাটল ও আবহাওয়া পরিবর্তনের কারনে বাড়ছে সমুদ্রের অস্থিরতা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। সমুদ্রের পানি প্রতি বছর বাড়ছে শূন্য দশমিক ১২ ইঞ্চি হারে। দিন যতই যাচ্ছে পানির উচ্চতা বাড়ছে। গত ২৫ বছরে উচ্চতা বেড়েছে প্রায় ৬ ফুট। বর্তমানে পানির ঢেউ উপচে পড়ছে সাগর পাড়ে। মাঝে মাঝে সমুদ্রের পানি স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে অনেক বেশি বেড়ে যায়। অনেক সময় ৮ ফুট পানি উঠে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সমুদ্র পাড়ের দোকান-পাট। পূর্নিমার কারনে জোয়ারের পানি এত প্রবলভাবে বেড়ে যায় যে, চট্টগ্রাম শহরের মধ্যে কোমর সমান পানি উঠে যায়। বিশেষ করে চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক এলাকা আগ্রাবাদ, হালিশহরের পশ্চিমাংশে জোয়ারের পানির উচ্চতা বেড়েই চলেছে। সমুদ্রের পানির উচ্চতা যে হারে বেড়ে চলেছে তাতে চট্টগ্রাম শহর হুমকীর মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে সমুদ্র পাড়ের হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে আলাপকালে ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদ ড. জাহাঙ্গির আলম বলেন, ‘সাগরের পানির উচ্চতা যে হারে বাড়ার কথা ছিল তার তুলনায় বেশি বাড়ছে। এটাও প্রাকৃতিক দুর্যোগের অংশ। যে হারে উচ্চতা বাড়ছে সে হারে শহরে জোয়ারের পানি ঢুকছে। এ পানি বের হচ্ছে। আগে বৃষ্টি হলে পানি বের হয়ে যেতো। এখন বৃষ্টির পানির সাথে জোয়ারের পানিও যোগ হয়েছে। তাতে বাড়ছে জনদূর্ভোগ। তিনি বলেন, সাগরের উচ্চতা আরও বাড়লে অর্থনীতিতে আঘাত আসবে। চট্টগ্রামের বেশিরভাগ শিল্প কারখানার ভারী যন্ত্রপাতি গ্রাউন্ডে। এমনকি চট্টগ্রামের বৈদ্যুতিক সাব স্টেশনগুলোও গ্রাউন্ডে। ফলে এগুলো নষ্ট হবে। জোড়াতালি দিয়ে এখন চলছে। কিন্ত পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে অর্থনীতিতে অচলাবস্থা সৃষ্টি হবে। ড. জাহাঙ্গির বলেন, মিয়ানমার-বাংলাদেশ সমুদ্র লাইনে গ্যাসের জন্য যে কাজ চলছে তাতে ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। সাগরের তলদেশে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। ফলে সাগরের পানির উচ্চতা থেকে রক্ষা পেতে হলে পরিকল্পিতভাবে স্লুইস গেট বসাতে হবে। যেটি দিয়ে বৃষ্টি ও সাগরের পানি নিয়ন্ত্রন করা যায়। আর প্রাকৃতিক দূর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে হলে সমস্ত ভবনের ২৪ শতাংশ গাছপালা ফরেস্টে রূপান্তর করতে হবে। তিনি বলেন, যে গাছগুলো কাটা হচ্ছে সেভাবে গাছ লাগানো হচ্ছে না। সিঙ্গাপুরের প্রতিটি ভবন ফরেস্ট বল্ডিং হিসেবে নির্মান করা হচ্ছে। এখানেও সেটি করতে হবে।’

গত ১৫ বছর আগেও চট্টগ্রাম সমুদ্র সৈকতের বালুচরে পর্যটকরা দাফিয়ে বেড়াতো। এখন আর বালুচর দেখা যায় না। নীরবে বাড়ছে সমুদ্রের পানির উচ্চতা। বালুচর হারিয়ে পানির উচ্চতা পাড়ের চেয়ে ৬ ফুটের মধ্যে এসে গেছে। গত কয়েকবছর ধরে চলছে এ অবস্থা। মাঝে মাঝে সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮ ফুট পর্যন্ত বেড়ে যায়।
সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হেনেছে। এই ইয়াসের প্রভাবে সাগরের পানির উচ্চতা সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। পুরো কুতুবদিয়া তলিয়ে গেছে ৪ থেকে ৫ ফুট পানির নিচে। পানি বাড়ার সাথে সাথে ব্যাপক আতঙ্কও ছড়িয়ে পড়ে। সবচেয়ে ভয়াবহ হলো ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে কক্সবাজারে সাগরের পানি ঢুকা নিয়ে। এমনটি আগে কখনও না হলেও এবার সাগরে পানি শহরে ভেতরে সয়লাব হয়ে যাওয়ায় আতঙ্ক বেড়েছে। চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে যাওয়া অনেক স্থানীয় পর্যটক মাঝে মাঝে সাগরের অস্বাভাবিক জোয়ারের তরঙ্গ দেখে সৈকতে নামতে সাহস করে নি। বিশেষ করে রাতে বেলায় পানি বাড়তে থাকলে উপকূলের অনেক মানুষ ঘর ছেড়ে চলে যায়। জোয়ারের পানির উচ্চতা উঠে ৮ ফিট পর্যন্ত। ইয়াস পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানলেও জোয়ারের পানি আঘাত হেনেছে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে।
বর্তমানে অবস্থা এমন দাড়িয়েছে যে, ঘূর্ণিঝড় না, পূর্নিমা হলেই মানুষের মাঝে বাড়ে আতঙ্ক। এখন চট্টগ্রাম শহরের ব্যাপক এলাকা জোয়ারের পানিতে ডুবছে। একই সাথে প্রতিনিয়ত জোয়ারের পানির সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছে কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও সেন্টমার্টিনের মানুষ। জোয়ারের পানির উচ্চতা ৬ ফিট উঠার পর দ্বীপাঞ্চলের মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে বিভিন্ন সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয়গ্রহণ করে। সম্প্রতি আবহাওয়ার বিরূপ আচরনের ফলে জোয়ারের তরঙ্গে উপকূলীয় এলাকার অনেক ঘর ভেসে যায়। উপকূলের বনভূমির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। সাগরে মাঝে মাঝে যে জলোচ্ছ্বাস দেখা দেয় তাতে হ্যাচারি ব্যবসায়ীরাও বিপাকে রয়েছে। সাগরের এ অস্বাভাবিক আচরণকে দ্বীপাঞ্চলের মানুষরা বরাবরের মতোন সৃষ্টিকর্তার লীলাখেলা বলে অবহিত করছেন। অবস্থা এখন এমন যে, ভাটার সময় পানি কিছুটা কমলেও জোয়ারের তরঙ্গ পুনরায় আঘাত করছে। চট্টগ্রামের উপকুলীয় অঞ্চলের মানুষ সাগরের এ আচরণকে পূর্ণিমার সঙ্গে সংশি¬ষ্ট বললেও কারও মতে সাগরের নিচে ভুমিকম্পজনিত ফাটলের প্রতিক্রিয়ায় এ অস্বাভাবিক আচরণ।
সমুদ্রের পানির উচ্চতা ও জোয়ারের প্রবল ঢেউয়ের পানি এখন স্বাভাবিক সময়েও ঢুকে পড়ে শহরে। পতেঙ্গা, হালিশহর, সরাইপাড়া, জেলেপাড়া, কাট্টলীসহ শহরের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে সমুদ্রের জোয়ারের পানি ঢুকছে। আগ্রাবাদের অভিজাত সিডিএ এলাকার বেশিরভাগ রাস্তা হাটু পানি, অনেকাংশে মাঝে মাঝে কোমর পানিতে তলিয়ে যায়। বিগত ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পানি উঠতে থাকলে এলাকাবাসীর মধ্যে আতংক সে সময় ব্যাপক আতঙ্ক দেখা দেয়। বিশেষ করে সমুদ্র পাড়ের এলাকাগুলোতে পানির পরিমান পূর্বের রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। নগরীতে বর্ষাকালেও তেমন বৃষ্টি না হলে আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকার পানির অবস্থা দেখে হতভম্ব হয়ে পড়ে অফিসগামী লোকজন। এ অবস্থা কখনও হয়নি বলে উল্লেখ করেন অনেকে। নগরীর পতেঙ্গাসহ উপকুলীয় এলাকায়ও বেড়িবাঁধের ফাকঁেফাকরে আশপাশের এলাকায় ঢুকে পড়ে সাগরের উত্তাল জলরাশি। এতে পতেঙ্গা সৈকতের দোকানপাটগুলো কোথাও হাঁটু আবার কোথাও কোমর পানিতে ডুবে গেলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন।
সমুদ্রের পানির উচ্চতা বাড়ার সাথে সাথে উপকুলিয় এলাকা বাশঁখালি ও আনোয়ারার অনেকাংশ এখন স্বাভাবিক সময়ে পানিতে তলিয়ে যায়। এলাকাবাসী বলছে, পূর্ণিমার প্রভাব ও বিভিন্ন সময় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে উপকুলীয় এলাকায় ঢুকে পড়ে সাগরের পানি। বিশেষ করে চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও আনোয়ারা থানা এবং নগরীর পতেঙ্গাসহ উপকুলীয় এলাকায় ঘর-বাড়ি ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়ে সাগরের পানি। এতে এসব এলাকার মানুষ চরম দুর্ভোগের মুখে পড়ে। সাগরের লোনা পানি ঢুকে ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়। জেলার বাঁশখালীর উপকুলবর্তী অন্ত ১৫টি গ্রামে সাগরের লোনা পানি ঢুকে পড়ে। বিশেষ করে খানখানাবাদ, কদমরসুল, প্রেমাসিয়া, কাথারিয়া, ডোংরা, সাধনপুরের অনেক গ্রামে বাধ ডিঙিয়ে সাগরের পানি ঢুকে সবচেয়ে বেশি। এসব এলাকার দেড়শ থেকে ২০০ ঘরবাড়ি হাঁটু পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যায়। ডুবে যায় অনেক রাস্তাঘাটও। বাঁশখালীর ৩৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ২০ কিলোমিটারই ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। তাই সাগরে কোন চাপ সৃষ্টি কিংবা পূর্ণিমা-অমাবশ্যার সময় বেড়িবাঁধ বিহীন এলাকায় সাগরের জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে। আনোয়ারার অনেক এলাকাও অস্বাভাবিকভাবে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে। রায়পুর ইউনিয়ন, গহিরা, পূর্ব গহিরা, সরেঙা, পশ্চিম রায়পুরসহ আরো কয়েকটি এলাকায় অসংখ্য ঘরবাড়িতে জোয়ারের পানি ঢুকে যায়। ভেতরের রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গিয়ে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায়শ ভেঙে পড়ে। একই সাথে আনোয়ারার শত শত একর ফসলি জমিতে সাগরের লোনা পানি ঢুকে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বঙ্গোপসাগরের তলদেশে ফাটল ও আবহাওয়া পরিবর্তনের কারনে বাড়ছে সমুদ্রের অস্থিরতা। সমুদ্রের পানি প্রতি বছর বাড়ছে শূন্য দশমিক ১২ ইঞ্চি হারে। দিন যতই যাবে ততই উচ্চতা বাড়বে। ফলে দেশের উপকুলিয় এলাকাগুলো পানির নিচে তলিয়ে যাবে। আগামী ২০৫০ সালে সমুদ্রের পানির স্বাভাবিক উচ্চতা বাড়বে প্রায় ৪ ফুট। গত ২০১০ সালে বঙ্গোপসাগরের আন্দামান দ্বীপাঞ্চলে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প এবং ২০১১ সালের ৩ জুন নিকোবর দ্বীপাঞ্চলে ৫ দশমিক ৯ মাত্রার ভুমিকম্পের কারনে সমুদ্রের ফাটল কি অবস্থায় রয়েছে তা নিয়েও বাড়ছে নানা সংশয়।
সমুদ্রের পাড়ে রয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর, চট্টগ্রাম ইপিজেড, চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরসহ চট্টগ্রামের ভারী শিল্পগুলো। কক্সবাজারে গড়ে উঠেছে বিপুল বিনিয়োগের পর্যটন শিল্প। এখন ক্রমশ বাড়তে থাকা পানির উচ্চতা ও সমুদ্রের বিরূপ আচরনের কারনে শংকিত মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে সমুদ্রের পানির উচ্চতার দিকে নজর না দেয়ার কারনে নীরবে হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগে গড়া এসব প্রতিষ্ঠান নিয়ে সংশয় বাড়ছে। সগর পাড়ে বেড়ি বাধ থাকলেও বাধের টেকসই অবস্থা নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে। বিগত ৯১ সালের প্রবল ঘুর্নিঝড় ও জলোচ্ছাসের কারনে এসব এলাকার ৮০ শতাংশই ধংব্স হয়ে যায়। পরে তা আবার গড়ে উঠে। এ অবস্থায় সমুদ্রের পানির উচ্চতা দিকে নজর দিয়ে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা উচিত বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। অন্যথায় যে কোন সময় বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।#

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.