--- বিজ্ঞাপন ---

সাত কিলোমিটার লম্বা পদযাত্রা করলো কানাডার হাজার হাজার মানুষ

মুসলিম পরিবারকে গাড়ীচাপা দিয়ে হত্যা

0

কানাডায় এমন ঘটনা আশা করেনি কেউ। তারপরও ঘটল অস্বাভাবিক এই ঘটনা। এক মুসলিম পরিবারকে গাড়ী চাপা দিয়েই হত্যা করলোেএক তরুন। ইচ্ছে হলো তাই পুরো পরিবারের উপর গাড়ীটি তুলে দিয়ে তাদের হত্যা করা হলো। এর প্রতিবাদে ৭ কি.মি. লম্বা পদযাত্রার মাধ্যমে মুসলিম পরিবারের পাশে থাকার বার্তা জানালো কানাডিয়ানরা।
কানাডায় এক মুসলিম পরিবারের চার সদস্যকে গাড়িচাপা দিয়ে হত্যার ঘটনায় পরিবারটির প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে পদযাত্রায় অংশ নিয়েছে হাজার হাজার মানুষ। গত ৬ জুন দেশটির অন্টারিও প্রদেশের লন্ডন শহরে ওই ট্রাক হামলার ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, ইসলামবিদ্বেষ থেকেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে পরিবারটির সদস্যদের ওপর এ হামলা চালানো হয়েছে। এর প্রতিবাদে শুক্রবার ওই পরিবারটির পাশে থাকার বার্তা দিয়ে অন্টারিও প্রদেশের লন্ডন শহরের রাজপথে নেমে আসে কানাডিয়ানরা। সেখানেই গত রবিবার ওই ট্রাক হামলার ঘটনা ঘটিয়েছিল এক তরুণ।  শুক্রবার লন্ডন শহরে আয়োজিত এই পদযাত্রা প্রায় সাত কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায়। এতে অংশ নেওয়া হাজার হাজার মানুষ বিদ্বেষমূলক অপরাধের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন। অনেকের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, এখানে বিদ্বেষের কোনও ঠাঁই নেই, ঘৃণার বদলে ভালোবাসা ইত্যাদি।
এদিন দেশটির অন্যান্য শহরেও ওই পরিবারটির প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে সবচেয়ে বড় আয়োজনটি ছিল ঘটনাস্থল লন্ডন শহরে। সেখানকার কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের একজন ১৯ বছরের কলেজ শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল জারাদ। বিশাল এই পদযাত্রা সম্পর্কে তিনি বলেন, বিপুল সংখ্যক মানুষের এখানে উপস্থিত হয়েছে। তবে এটিই সবচেয়ে ভালো দিক নয়। বরং এখানে লন্ডনের প্রতিটি সম্প্রদায়ের মানুষ সমবেত হয়েছে। তাদের সবার উদ্দেশ্য এক।
এর আগে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো-সহ দেশটির রাজনীতিকরা লন্ডন শহরের ওই ট্রাক হামলার নিন্দা জানান। জাস্টিন ট্রুডো এই হামলাকে বিদ্বেষ থেকে পরিচালিত সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, কেউ যদি মনে করে থাকেন আমাদের দেশে বর্ণবাদ ও বিদ্বেষ নেই, তাহলে আমি বলতে চাই: এমন সহিংসতার ব্যাখ্যা কীভাবে দেবো আমরা? কীভাবে পরিবারটির চোখের দিকে তাকিয়ে বলতে পারি যে ইসলামবিদ্বেষ বাস্তব কিছু না?
কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি ছিল একটি সন্ত্রাসী হামলা, বিদ্বেষের বশবর্তী হয়ে আমাদের জনগোষ্ঠীর বুকে এই হামলা চালানো হয়েছে। দীর্ঘদিন পর অনেক পরিবার সন্ধ্যায় মুক্ত বাতাসে হাঁটা উপভোগ করতে বেরিয়েছে উল্লেখ করে ট্রুডো বলেন, কিন্তু অন্যান্য রাতের মতো এই পরিবার আর কখনও বাড়ি ফিরবে না। তাদের জীবন কেড়ে নেওয়া হয়েছে নৃশংস, কাপুরুষোচিত ও নির্লজ্জ সহিংসতার মাধ্যমে। এটি কোনও দুর্ঘটনা ছিল না। রবিবার যা ঘটেছে তাতে ক্ষুব্ধ কানাডার নাগরিকরা। অনেক কানাডীয় মুসলিম আতঙ্কিত।

এদিকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, কানাডায় ইসলামবিরোধী মনোভাব বা ধর্ম বিদ্বেষের কোনো স্থান নেই। ঐক্যবদ্ধভাবে সব অপতৎপরতা রুখে দিতে হবে। দেশটির অন্টারিও রাজ্যের শোকসভায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো আরও বলেন, শুধু মুসলিম নন, যেকোনও ধর্মের মানুষের জন্যই নিরাপদ হতে হবে কানাডার প্রতিটি শহর। এ জন্য সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টি হয় এমন চিন্তাভাবনা কমাতে হবে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেন, কানাডায় সত্যিকার অর্থেই ইসলামভীতি রয়েছে, আছে বর্ণবিদ্বেষও। কিন্তু আমাদের কমিউনিটি-সমাজ-দেশে এগুলোর কোনো স্থান নেই। ঐক্যবদ্ধভাবে এসব অপতৎপরতা রুখে দিতে হবে। যখনই আমাদের সন্তান বা প্রবীণদের ওপর আঘাত আসবে; সবাই মিলে আমরা সন্ত্রাসবাদ ও ধর্ম বিদ্বেষকে না বলব।
প্রসঙ্গত, রোববার (৬ জুন) শপিংমলের বাইরে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত একটি পরিবারের ওপর পিকআপ তুলে দেয় এক আততায়ী। এতে প্রাণ হারান ওই পরিবারের ৪ সদস্য। সৌভাগ্যবশত প্রাণে বেঁচে যান ৯ বছরের একটি শিশু। ঘটনাস্থল থেকে নাথানেল ভেল্টম্যান নামে ২০ বছর বয়সী হামলাকারী যুবককে আটক করে পুলিশ।#

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.