--- বিজ্ঞাপন ---

আফগান বিমান বাহিনীর হামলায় ৭০ জন তালেবান নিহত, ব্যাপক সংঘর্ষ অব্যাহত

0

আফগানিস্তানের দখল নিতে মরিয়া তালেবানরা। তাদের দাবি এখন পর্যন্ত ৮৫ ভাগ তাদের দখলে রয়েছে। অস্তিত্ব রক্ষার্থে বসে নেই সরকারী বাহিনীও। এরই মধ্যে আমেরিকানদের সাথে সাথে অস্ট্রেলিয়ান সেনারাও আফগানিস্তান ত্যাগ করেছে। ভারত তাদের কুটনীতিবিদদের ফিরিয়ে নিয়েছে। আফগানিস্তানের সামনের ভবিষ্যত নিয়ে উৎকন্ঠা বাড়ছে বিশ্বের দেশগুলোতে। অভিযোগ উঠেছে, আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিতে সাধারন মানুষকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে তালেবানরা।

আফগানিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তালেবানের তুমুল সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা এসব সংঘর্ষের খবর জানিয়ে বলেছে, কোনো কোনো স্থানে আফগান সৈন্যরা তালেবানের অগ্রাভিযান প্রতিহত করেছে এবং কোনো কোনো জেলা তালেবানের দখলে চলে গেছে। কান্দাহার প্রদেশের সেনা কমান্ডার মোহাম্মাদ সাদেক ঈসা জানিয়েছেন, কান্দাহার শহরে তালেবান অস্ত্রধারীদের সঙ্গে তাদের তীব্র সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় আফগান বিমান বাহিনীর হামলায় ৭০ জন তালেবান নিহত হয়েছে।

গজনি শহরের আশপাশে শনিবার দিনভর সংঘর্ষ হয়েছে এবং গজনি সিটি কর্পোরেশনের একজন কাউন্সিলর বলেছেন, তালেবান অস্ত্রধারীরা ঘরবাড়িতে ঢুকে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে তাদেরকে সরকারি সেনাদের বিরুদ্ধে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। তিনি আরো বলেন, গজনি প্রদেশের মালেস্তান, নাহুর ও জাগুরি জেলায় তালেবানের কয়েক দফা হামলা প্রতিহত করেছে সরকারি সেনারা।

বাগদিস প্রদেশের গভর্নর হিসামউদ্দিন শামস জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত থেকে প্রদেশের ‘কালা নু’ শহরে আবার হামলা চালিয়েছে তালেবান। রাতভর সংঘর্ষের পর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়ে তারা পিছু হটে গেছে। বাগদিসের প্রাদেশিক পরিষদের দুই সদস্য ফরিদ আখিজি ও খানজান জাফর সরকার পক্ষ ত্যাগ করে তালেবানে যোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এই দুই কর্মকর্তা এর আগে গোপনে তালেবানকে সহযোগিতা করেছেন এবং সরকারি বাহিনীকে পশ্চাদপসরণে উৎসাহ দিয়েছেন বলেও হিসামউদ্দিন শামস অভিযোগ করেন।

এর আগে আফগান ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ অভিযোগ করেছিলেন, বাগদিস থেকে নির্বাচিত আফগান সংসদ সদস্য আমিরশাহ নায়েবজাদা সরকারি সৈন্যদেরকে তালেবানের কাছে আত্মসমর্পন করতে উৎসাহ দিচ্ছেন। এই অভিযোগের জের ধরে আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নায়েবজাদার দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তালেবানের হাতে কয়েকটি জেলার পতন

আফগানিস্তানের ইরান সীমান্তবর্তী পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাত প্রদেশেও শনিবার সংঘর্ষ অব্যাহত ছিল। শুক্রবার তালেবান হেরাত প্রদেশের সঙ্গে ইরানের সীমান্তবর্তী স্থলবন্দর ‘ইসলাম কালা’ দখল করার পর শনিবার এই প্রদেশের আরো কয়েকটি জেলা বিনা সংঘর্ষে তালেবানের দখলে চলে গেছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় তালেবানের হাতে হেরাত প্রদেশের কারখ, কাহসান, গোলরান, কাশকে কোহনে, কাশকে রোবাত সাঙ্গিন, শিনদাঁদ, আদরাসকান ও পাশতুন জারগুন জেলার পতন হয়েছে। আফগানিস্তানের সাবেক মুজাহিদ কমান্ডার ইসমাইল খান তালেবানের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, শুধু হেরাত নয় আফগানিস্তানের গোটা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল তালেবানের দখলমুক্ত করার জন্য তিনি গণবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই করবেন। প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির নেতৃত্বাধীন আফগান সরকার ইসমাইল খানের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।

সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তালেবানের সংঘর্ষ বেড়ে চলায় কান্দাহার থেকে প্রায় ৫০ জন কূটনীতিবিদ ও নিরাপত্তারক্ষীদের ফিরিয়ে এনেছে ভারত। শনিবার বিমানবাহিনীর বিশেষ বিমানে করে তাদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

ভারতীয় কূটনীতিবিদদের আফগানিস্তান ত্যাগ
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছে, এই মুহূর্তে কাবুল, কান্দাহার ও মাজার-ই-শরিফে ভারতীয় দূতাবাস বন্ধ রাখা হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার কাজ শুরু হবে। যদিও আফগান সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, এই সংঘর্ষের ফলে ভারতীয় কূটনীতিবিদদের যাতে কোনো সমস্যা না হয় সে দিকে সব রকমের নজর রাখা হচ্ছে।

আফগানিস্তানে প্রায় ২০ বছরের লড়াই শেষে দেশে ফিরছে মার্কিন বাহিনী। এই পরিস্থিতিতে রীতিমতো আশঙ্কায় ভারত। কারণ আফগানিস্তানে ভারত ব্যাপক অবকাঠামোগত কাজ করেছে এবং কাবুলে ভারতের কয়েক হাজার নাগরিক অবস্থান করছে। # পার্স টুডে

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.