--- বিজ্ঞাপন ---

প্রভাবশালী দেশগুলোর কার কতো সাবমেরিন

0

বর্তমানে সারা বিশ্বের প্রায় চল্লিশটি দেশের নৌবাহিনীতে মোট প্রায় ৫৪০টি সাবমেরিন সার্ভিসে রয়েছে। সংখ্যার বিচারে ৬০% পর্যন্ত সাবমেরিন রয়েছে মাত্র ৪টি দেশের নৌবাহিনীর কাছে। দেশগুলো হচ্ছে উত্তর কোরিয়া, চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়ার এবং ইরান। প্রযুক্তিগত সক্ষমতা এবং মান যাই হোন না কেন কাগজে কলমে সারা বিশ্বে সাবমেরিন ব্যবহারকারী দেশগুলোর মধ্যে সংখ্যার দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সাবমেরিন ব্যবহার করে কিম জং উনের দেশ উত্তর কোরিয়া। সারা বিশ্বের মোট ৪০টি দেশ সাবমেরিন ব্যবহার করলেও নিউক্লিয়ার পাওয়ারড সাবমেরিন ব্যবহার করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং ভারত। তাছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সের নৌবাহিনীতে সার্ভিসে থাকা শতভাগ সাবমেরিন হচ্ছে নিউক্লিয়ার পাওয়ারড স্ট্যাটিজিক (এসএলবিএম) এবং এ্যাটাক (এসএসএন) সাবমেরিন।

উত্তর কোরিয়ার নৌবাহিনীতে বর্তমানে মোট ৮২টি বিভিন্ন সিরিজের অতি পুরনো সাবমেরিন অপারেশনাল রয়েছে বলে প্রচার করা হলেও বাস্তবে শতভাগ কমব্যাট অপারেশন রয়েছে ৩০-৩৫টি। আবার অধিকাংশ সাবমেরিনের প্রযুক্তি পঞ্চাশ কিংবা ষাট ও সত্তর দশকের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হলেও আশ্চর্যজনকভাবে উত্তর কোরিয়ার নৌবাহিনী এখনো পর্যন্ত অতি পুরনো সাবমেরিনের বিশাল বহর সার্ভিসে রাখতে সক্ষম হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক ৭২টি সাবমেরিন সার্ভিসে রয়েছে রেড জায়ান্ট চিনের নৌবাহিনীতে। পিপলস লিবারেশ আর্মির নেভাল ফোর্সের হাতে নিউক্লিয়ারড পাওয়ারড চালিত ব্যালেস্টিক মিসাইল সাবমেরিন ৪টি, নিউক্লিয়ার পাওয়ারড এ্যাটাক সাবমেরিন ৬টি এবং বিভিন্ন সিরিজের কনভেনশনাল পাওয়ারড বা ডিজেল ইলেকট্রিক ৬২টি সাবমেরিন অপারেশনাল রয়েছে।

তবে প্রকাশ থাকে ৮০ দশকে ১২টি মিং ক্লাস সাবমেরিন সার্ভিসে আনলেও এর দূর্বল প্রযুক্তিগত সক্ষমতার জন্য রাশিয়া থেকে ১২টি কিলোক্লাস সাবমেরিন ক্রয় করে। তাছাড়া ২০০৩ সালে চীনের একটি মিং ক্লাস সাবমেরিন সাগরের বুকে ধ্বংস হয়ে ৭০ জন অফিসার নাবিক মৃত্যুবরণ করেন। এর পর থেকে চীনের নৌবাহিনী তাদের সাবমেরিন বহরে থাকা পুরনো মিং ক্লাস সাবমেরিনের কমব্যাট অপারেশন একেবারে সীমিত করে দেয় এবং শুধুমাত্র মোট সাবমেরিনের সংখ্যা সারা বিশ্বকে বেশি করে দেখাতে এগুলো রিজার্ভে রয়েছে বলে প্রচার করে থাকে।

বিশ্বের এক নম্বর সামরিক সুপার পাওয়ার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীতে মোট নিউক্লিয়ার পাওয়ারড ৬৬টি সাবমেরিন রয়েছে। তার মধ্যে ৫২টি নিউক স্ট্যাটিজিক ব্যালেস্টিক মিসাইল সাবমেরিন এবং ১৪টি নিউক এ্যাটাক সাবমেরিন। তাছাড়া রাশিয়ার নৌবাহিনীতে রয়েছে অত্যন্ত শক্তিশালী মোট ৫৮টি সাবমেরিন। যার মধ্যে ১১টি নিউক্লিয়ার পাওয়ারড ব্যালেস্টিক মিসাইল সাবমেরিন, নিউক্লিয়ারড পাওয়ারড এ্যাটাক সাবমেরিন এবং ২১টি ডিজেল ইলেক্ট্রিক চালিত কনভেনশনাল সাবমেরিন।

ইরানের নৌবাহিতে রয়েছে মোট ৩৪টি ডিজেল ইলেক্ট্রিক সাবমেরিন। তবে প্রকাশ থাকে যে, সংখ্যার দিক দিয়ে ইরানের হাতে ৩৪টি সাবমেরিন থাকলেও তার বেশির ভাগ প্রায় ২৪-২৫টি সাবমেরিন হচ্ছে মিটগেট ক্লাস বা উত্তর কোরিয়ার সরবরাহকৃত প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে তৈরি করা ১১০-১২৫ টন ওজনের একেবারে ছোট আকারের গাধির ক্লাস সাবমেরিন।

দক্ষিণ কোরিয়ার নৌবাহিনীতে রয়েছে ২২টি এবং জাপানের নৌবাহিনীতে ২০টি কনভেনশনাল পাওয়ারড এ্যাটাক সাবমেরিন। তাছাড়া ভারতের ১৬টি (১টি নিউক্লিয়ার পাওয়ারড), তুরস্কের ১২টি এবং কলাম্বিয়ার নৌবাহিতে ১১টি করে সাবমেরিন সার্ভিসে রয়েছে।

যুক্তরাজ্যের নৌবাহিনীতে মোট ১০টি সাবমেরিন রয়েছে। যার মধ্যে ৮টি নিউক্লিয়ার পাওয়ারড এ্যাটাক সাবমেরিন এবং ৪টি স্ট্যাটিজিক ব্যালেস্টিক মিসাইল সাবমেরিন। ফ্রান্সের নৌবাহিনীতে মোট সাবমেরিন রয়েছে ১১টি। যার মধ্যে ৭টি নিউক্লিয়ার পাওয়ারড এ্যাটাক সাবমেরিন এবং ৪টি নিউক্লিয়ার পাওয়ারড স্ট্যাটিজিক ব্যালেস্টিক মিসাইল সাবমেরিন। তাছাড়া জার্মানির ৬টি ইতালীর ৮টি, স্পেনের ৩টি নরওয়ের ৬টি, সুইডেনের ৫টি, পোল্যান্ডের ৩টি, পুর্তুগালের নৌবাহিনীতে ২টি কনভেনশনাল পাওয়ারড সাবমেরিন রয়েছে।

এদিকে কানাডার ৪টি, অস্ট্রেলিয়ার ৬টি, ইসরাইলের ৫টি, ইন্দোনেশিয়ার ৫টি, মালয়েশিয়ার ২টি, ভিয়েতনামের ৬টি, দক্ষিণ আফ্রিকার ৩টি, ভেনিজুয়েলার ২টি, চিলির ৪টি, আর্জেন্টিনার ২টি, ব্রাজিলের ৬টি, পাকিস্তানের ৫টি, পেরুর ৫টি, ইকুয়েডরের ২টি, তাইওয়ানের ৪টি, সিঙ্গাপুরের ৪টি, মিশরের ৮টি, আলজেরিয়ার ৬টি, আজারবাইজানের ৪টি, বাংলাদেশের ২টি এবং মিয়ানমারের নৌবাহিনীতে ১টি করে কনভেনশনাল পাওয়ারড (ডিজেল ইলেক্ট্রিক) সাবমেরিন সার্ভিসে রয়েছে।#

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.